ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট

করোনার চেয়েও বেশি ভয়ানক ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট

করোনার চেয়েও বেশি ভয়ানক ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট

ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট
চিত্র: ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট

ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট কি?

ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট হল করোনা ভাইরাসের একটি বিশেষ রূপ।বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট মানুষের শরীরে প্রবেশ করে আরও দ্রুত ফুসফুস আক্রমণ করতে পারে। যে কোষগুলি ফুসফুসের চারপাশে ঘিরে রয়েছে, সেগুলিকে দ্রুত ভেঙে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।

কোভিড-১৯-এর সবচেয়ে সংক্রমণশীল ধরন ‘ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট’ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের করোনা পরিস্থিতি আরও ভয়ানক পারে-এমন আশঙ্কা জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।

ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট হিসেবে চিহ্নিত করে। ঢাকায় শনাক্ত করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর ৬৮ শতাংশ ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা আইসিডিডিআরবি।

আরও দেখুনঃ করোনা ভাইরাস কি? এর লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়

 ডেলটা প্লাস  ভ্যারিয়েন্টের লক্ষণগুলো কি কি?

  • গবেষকরা বলছেন, যুক্তরাজ্যে বর্তমানে কোভিড সংক্রমণের সাধারণ উপসর্গ দেখা যাচ্ছে মাথাব্যথা, গলা ব্যথা আর নাক দিয়ে সর্দি পড়া।
  • তরুণদের ক্ষেত্রে ডেল্টা বা ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়াটা “মারাত্মকভাবে সর্দি লাগার মতোই” মনে হতে পারে।
  • কাশি হলে আপনি আক্রান্ত হতে পারেন, কারণ সাধারনত কাশির মাধ্যমেও ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়তেছে।

•জ্বর হলেও আপনি ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট এ আক্রান্ত হতে পারেন।

•স্বাদ ও গন্ধ না পাওয়া ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট এ আক্রান্ত হওয়ার আরও একটি লক্ষন।

•নতুন করে ক্রমাগত কাশি ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট এর আরও একটি লক্ষন।

•শরীরের উচ্চ তাপমাত্রা ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট এর প্রধান লক্ষন।

•স্বাদ বা গন্ধ না পাওয়া বা পরিবর্তন ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট এর জন্য প্রধান লক্ষন।

  • করোনাভাইরাসের সংক্রমণের লক্ষণ হিসেবে শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া, ক্ষুধামন্দা, মাথাব্যথা এবং পেশী ব্যথাও ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট এর লক্ষন হতে পারে।

ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট যেভাবে ছড়ায়:

বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট এ মাসের শুরুতে জানায় যে দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি চিহ্নিত করা গেছে। নিম্নে ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট যেভাবে ছড়ায় তা আলোচনা করা হল:

  • বিশ্বের ৮৫টি দেশে করোনা ভাইরাসের অতি সংক্রামক ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।
  • বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা WHO আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট বিশ্ব জুড়ে তাণ্ডব চালাতে পারে এবং এটি খুব দ্রুত ছড়াতে পারে।
  • WHO বলেছে যে, বর্তমান চারটি ভ্যারিয়েন্টকে ‘উদ্বেগজনক’ হিসেবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এগুলো হলো—আলফা, বেটা, গামা এবং ডেলটা।
  • আলফা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বেশি সংক্রামক এবং ভয়ানক হল ভারতীয় ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট। যেভাবে এটি ছড়িয়ে পড়ছে তাতে ভবিষ্যতে ‘প্রভাবশালী’ ভ্যারিয়েন্টে পরিণত হবে বলে জানা গেছে।
  • ভারতে যে ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে, এটি আসলে ডেলটা পরিবারেরই সদস্য বলে মনে করছেন গবেষকরা।
  • বিজ্ঞানীরা ব ভারতে যে ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে, এটি আসলে ডেলটা পরিবারেরই সদস্য বলে মনে করছেন গবেষকরা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আলাদা ভ্যারিয়েন্ট হতে গেলে স্পাইক প্রোটিনে যতটা পরিবর্তন হওয়ার দরকার ডেলটা প্লাসে তা দেখা যাচ্ছে না।
  • গবেষকদের মতে, আলাদা ভ্যারিয়েন্ট হতে গেলে স্পাইক প্রোটিনে যতটা পরিবর্তন হওয়ার দরকার ডেলটা প্লাসে তা পাওয়া যাচ্ছে না।
  • ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এবং তাৎক্ষনিকভাবে কার্যকারীতা শুরু করে দেয়।

ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধের উপায়:

ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট প্রতিকার করা না গেলেও প্রতিরোধ করা সম্ভব। আর সেটি প্রতিরোধের সবচেয়ে বড় উপায় হল সচেতনতা সৃষ্টি। সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে এটি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। নিস্নে ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধের কিছু টিপস আলোচনা করা হল:

  • ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধের প্রথম এবং প্রধান উপায় হল সচেতনতা সৃষ্টি।
  • ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধের দ্বিতীয় অন্যতম উপায় হল নিয়মিত ভ্যাকসিন নেওয়া।
  • টিকা নেওয়া থাকলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সহজ হয়। পরে ভাইরাস চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায় এবং ভাইরাস রোধ সহজ হয়।
  • ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট রোগীকে খুব দ্রুত কাবু করে ফেলে।  এজন্য খুব দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
  • টি-সেল হলো একধরনের শ্বেত রক্তকণিকা, যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় অংশ নেয়।
  • অস্থিমজ্জার স্টেম সেল থেকে টি-সেল তৈরি হয়। বাইরের কোনো রোগজীবাণু শরীরে প্রবেশ করলে এরা রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দেয়।
  • টিকা গ্রহণের ফলে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় যে টি-সেল সৃষ্টি হয়, বুস্টার ডোজে তার সংখ্যা ও সক্রিয়তা বাড়ে। ফলে টিকা গ্রহন জরুরী হয়ে পড়ে।
  • শরীরে যাতে অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি তৈরি হয় সেজন্য নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহন করতে হবে।
  • হাসপাতালে শয্যা, আইসিইউ তে অক্সিজেন সংকট দেখা যাবে। করোনার আমলে অন্তত এসি বন্ধ রাখাই ভালো। তবে, ফ্যান চলবে।
  • বড় বড় শহরে কাঁচাবাজারগুলো অন্তত খোলা আকাশের নিচে থাকা ভালো।
  • একইভাবে বৃষ্টি না থাকলে খোলা আকাশের নিচে স্কুল–কলেজের ক্লাসের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তাহলে শিশু-কিশোরদের সংক্রমণের আশঙ্কা অনেকটা কমবে।

উপরের আলোচনার আলোকে বলা যায়, করোনা পরিস্থিতিতে ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট একটি ভয়ানক রূপ। ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট থেকে রক্ষা পেতে আমাদের সার্বক্ষনিক সচেতন থাকতে হবে।

শেয়ার করুন

Similar Posts

8 Comments

  1. Mijanur Rahman Polash says:

    nice information

  2. Mijanur Rahman Polash says:

    nice information

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *