মধুর উপকারীতা ও পুষ্টিগুণ

মধুর উপকারীতা ও পুষ্টিগুণ

মধুর উপকারীতা ও পুষ্টিগুণ

আরবি পরিভাষায় মধুপোকা বা মৌমাছিকে ‘নাহল’(نحل) বলা হয়। পবিত্র কোরআনে এই নামে একটি স্বতন্ত্র সূরা বিদ্যমান আছে। সূরা নাহল এর আয়াত-৬৯ এ আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন- “তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙের পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার।

“মধু হচ্ছে ওষুধ এবং খাদ্য উভয়ই। মধুকে বলা হয়- বিররে এলাহি ও তিব্বে নব্বী। অর্থাৎ খোদায়ী চিকিৎসা ও নবী করীম (সা:) এর বিধানের অন্তর্ভুক্ত।

সূরা মুহাম্মদ- এর ১৫ আয়াতে আল্লাহ তায়ালার এরশাদ হচ্ছে- “জান্নাতে স্বচ্ছ মধুর নহর প্রবাহিত হবে।”

খাদ্য ও ঋতুর বিভিন্নতার কারণে মধুর রঙ বিভিন্ন হয়ে থাকে। এ কারণেই কোন বিশেষ অঞ্চলে কোন বিশেষ ফল-ফুলের প্রাচুর্য থাকলে সেই এলাকার মধুতে তার প্রভাব ও স্বাদ অবশ্যই পরিলক্ষিত হয়।

মধুর উপকারীতা:

১. শক্তি প্রদায়ী:

মধু খুব দ্রুত শরীরের মধ্যে তাপ ও শক্তি উৎপন্ন করতে সহায়তা করে। মধুর চেয়ে দ্রুত তাপ-শক্তি উৎপন্ন করতে পারে এমন কোন তরল খাবার নেই বললেই চলে। মধু ভালো শক্তি প্রদায়ী খাদ্য। তাপ ও শক্তির ভালো উৎস। মধু দেহে তাপ ও শক্তি জুগিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখে।

২. হজমে সহায়তা:

 মধুতে প্রচুর পরিমানে শর্করা থাকায় তা হজমে সাহায্য করে থাকে। এতে যে শর্করা থাকে, তা সহজেই হজমে অংশগ্রহন করে। কারণ, এতে যে ডেক্সট্রিন থাকে, তা সরাসরি রক্তে প্রবেশ করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে ক্রিয়া শুরু করে। পেট রোগা মানুষের জন্য মধু বিশেষ উপকারী।

৩. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে:

মধুতে রয়েছে ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স। এটি ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ১ চা–চামচ খাঁটি মধু ভোরবেলা পান করলে কোষ্ঠবদ্ধতা এবং অম্লত্ব দূর হয়। কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করতে মধু বিশেষ উপকারী।

৪. রক্তশূন্যতায়:

মধু রক্তের হিমোগ্লোবিন গঠনে সহায়তা করে বলে এটি রক্তশূন্যতায় বেশ ফলদায়ক। কারণ, এতে থাকে খুব বেশি পরিমাণে কপার, লৌহ ও ম্যাঙ্গানিজ। রক্তশূন্যতায় মধু খুবই উপকারী একটি উপাদান।

৫. ফুসফুসের যাবতীয় রোগ:

ফুসফুসের যাবতীয় রোগে মধু ব্যবহৃত হয়। বলা হয়, ফুসফুসের যাবতীয় রোগে মধু উপকারী। যদি একজন অ্যাজমা (শ্বাসকষ্ট) রোগীর নাকের কাছে মধু ধরে শ্বাস টেনে নেওয়া হয়, তাহলে সে স্বাভাবিক এবং গভীরভাবে শ্বাস টেনে নিতে পারবে।

৬. শ্বাসকষ্ট নিরাময়ে:

অনেকে মনে করে, এক বছরের পুরোনো মধু শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য বেশ ভালো। শ্বাস কষ্টের যাবতীয় রোগের চিকিৎসায় মধু বেশ উপকারী। যত পুরানো শ্বাষকষ্ট হোক মধু খেলে নিরাময় হয়।

৭. যৌন দুর্বলতায়:

পুরুষদের মধ্যে যাঁদের যৌন দুর্বলতা রয়েছে, তাঁরা যদি প্রতিদিন মধু ও ছোলা মিশিয়ে খান, তাহলে বেশ উপকার পাবেন। যৌন দূর্বলতায় মধু সবচেয়ে বেশি উপকারী। আজকাল যৌন দূর্বলতায় মধু সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। কারন মধু এমন একটি উপাদান যা গ্রহণ করলে একজন পুরুষ তাৎক্ষনিক শক্তি ফেরত পায়।

আরও দেখুনঃ আসুন জেনে নেই, কিসমিসের রহস্যজনক উপকারীতা

পুষ্টিগুণ ও উপাদেয়তার দিকটি বিবেচনা করে যদি আমরা খাবারের একটি তালিকা করি, সে তালিকার প্রথম সারিতেই থাকবে ‘মধু’র নাম। এটি শরীরের জন্য উপকারী এবং নিয়মিত মধু সেবন করলে অসংখ্য রোগবালাই থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। এটি বৈজ্ঞানিকভাবেই প্রমাণিত।

শেয়ার করুন

Similar Posts

0 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *