জেনে নিন, নারীরা কোথায় ভুল করে
জেনে নিন, নারীরা কোথায় ভুল করে
মেয়েদের নিন্দনীয় অভ্যাস হলাে, তারা যখনি কোন বিষয় নিয়ে ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হয়, তখনি তারা অতীতের মুছে যাওয়া ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটায়। সাধারণতঃ পুরুষদের মাঝে এই ব্যাধিতাে তুলনামূলক কম।
পক্ষান্তরে মেয়েরা যে ব্যাপারে একবার আপােষ, সমঝােতা ও সমাধানে এসেছে, ফের ঝগড়া আরম্ভ হতেই পূর্বের কথার স্রোত বইয়ে দেয়।
ফলে আজকের ঘটনা যদি সাধারণ পর্যায়ের হয়ে থাকে, কিন্তু আগের কথার পুনরাবৃত্তি ঘটানাের কারণে পরিস্থিতি রুদ্রমূর্তি ধারণ করে।
নারীর ভুল:
হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (র:) বলেন: মেয়েরা সর্বদাই এসব কথার তথ্যানুসন্ধানে প্রহর গুণতে থাকে। সে মতে কারাে ঘরে কোন মেয়ে প্রবেশ করা মাত্রই জিজ্ঞাসা শুরু করে দেয় যে, অমুকে আমার সম্বন্ধে কি বলেছে? আগন্তুক মেয়েটি টক-মিষ্টি-ঝাল মিশ্রিত তথ্য প্রদান করে বসল। ব্যস! এর উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠল হিংসা-বিদ্বেষের এক মজবুত ইমারত।
আর মহিলাদের একটি সংঘবদ্ধ কুচক্রী মহল উক্ত ইমারতের চাকচিক্য ও ঔজ্জ্যলতাপূর্ণ রং এর সমাহার ঘটিয়েছে এবং পূরণ করেছে। তাদের হিংসা-বিদ্বেষ, ঝগড়া-বিবাদ ইত্যাদি।
মুসলমানের দু’টি অন্তরঙ্গ ও বন্ধুসুলভ বংশের মাঝে ফাটল সৃষ্টি করে আল্লাহ তা’আলার ক্রোধ ও গজব ডেকে আনে।
হে মুসলিম বােনেরা! মনে রেখ, দুই মুসলমানের অন্তরে ক্রোধ, ঝগড়া, ফ্যাসাদ সৃষ্টি করা আল্লাহ তা’আলার নিকট অত্যন্ত ঘৃণিত ও শক্ত গুনাহের কাজ।
একদা নবী করীম (সা.) শবে কদরের নির্দিষ্ট তারিখ জানিয়ে দিতে আসলে তিনি দেখতে পেলেন দুই ব্যক্তি পরস্পরে ঝগড়ায় লিপ্ত।
এ অবস্থা দেখে তিনি আর সঠিক তারিখ জানালেন না। অতঃপর তিনি ইরশাদ করলেন, আমি তােমাদেরকে শবে কদরের তারিখ বলে দিতে এসেছিলাম।
কিন্তু এমতাবস্থায় দুব্যক্তিকে ঝগড়ারত দেখতে পেলাম । যে কারণে এর সঠিক তারিখকে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। হতে পারে এর মধ্যেই ভাল নিহিত।
হাদীসের আলোকে:
বুখারী শরীফের বরাত দিয়ে মেশকাত শরীফের ৪৭ পৃঃ আছে । নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেন, আমি কি তােমাদেরকে নামায, রােজা, সদকা ইত্যাদির মধ্য হতে সর্বোত্তম বস্তুটি বলে দিব? সাহাবাগণ আরজ করল, অবশ্যই। তিনি বললেন, অপরের সাথে ভাল ব্যবহারই সর্বোত্তম ।
পরস্পরে ঝগড়া-বিবাদ দ্বীনকে এমনভাবে ধ্বংস করে দেয়, যেমন ক্ষুর মাথার কেশকে। হে প্রিয় বােনেরা! আল্লাহর ওয়াস্তে গীবত, পরনিন্দা ও কুৎসা রটনা থেকে বেঁচে থাকো। একে অপরের মন্দা পর্চা, দুর্গন্ধযুক্ত কথা শ্রবণ করা থেকে নিজেকে বাঁচাও।
যেমন, কেউ বলল- শুনেছ! অমুকের ছেলে সন্ত্রাসী হয়ে গেছে। আরে অমুকের ছেলের মধ্যে এই ত্রুটি আছে, আর অমুকের মেয়েও বেশী সুবিধার নয়।
ঝগড়ার কুফল:
মােট কথা, এ জাতীয় অহেতুক মন্তব্য ও কথা থেকে বেঁচে থাকবে।
কেননা পরনিন্দা, গীবত ও কুৎসা মানুষের যাবতীয় পুণ্য ও সওয়াবকে নিঃশেষ করে দেয়।
এর কুফল হিসেবে দুনিয়াতেই নানাবিধ বালা মুসীবতে গ্রেফতার হবে। আর আখেরাতে রয়েছে তার জন্য অপেক্ষমান ভয়ানক ও কঠিন শাস্তি।
গীবতের মত জঘন্য কর্মের উৎস ও উৎপত্তি মূলত অপরের অভিযােগের উপর বিশ্বাসী ও নির্ভরশীল হওয়া।
যার পথ ধরে সৃষ্টি হয় পারস্পরিক মনােমালিন্যতা, অনৈক্য ও শত্রুতা।
অধিকন্তু, গীবত করা, শােনা, ও কারাে প্রতি বিরূপ ধারণা পােষণ করাও মারাত্মক অপরাধ।
কুরআন মজিদে এ অপকর্ম সম্পর্কিত আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। পুরুষদের পারস্পরিক ঝগড়ার মূল কারণ নারী।
যখন কারাে স্ত্রী নিজ পুরুষদের ভাবী, শাশুড়ি, ননদ প্রমুখ সম্পর্কে স্বামীর কানে অভিযােগের স্রোত বইয়ে। দেয় যে, অমুকে আমাকে এ কথা বলেছে, তােমার সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছে।
অমুকের ছেলে আমাদের সন্তানকে বেদম প্রহার করেছে, হুমকি, ধমকি, বকা ঝকাও করেছে। অমুকে আমাদের সন্তানকে গালি দিয়েছে। প্রভৃতি।
তথাপি এই নির্বোধ বােকা স্বামীও বিনা বাক্যে মনােযােগ সহকারে শুনতে থাকে।
অতঃপর এই জ্ঞানহীন, নির্বোধ স্ত্রী তাদের বিরুদ্ধে স্বীয় স্বামীকে উত্তেজিত ও প্রতিবাদের ঝড় তুলতে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে যে, আমিই সবকিছু করব তােমার কিছু করার নেই।
এখন যে মানুষটি সারা দিন প্রচন্ড গরম-ঠান্ডা উপেক্ষা করে পরিশ্রান্ত, ক্লান্ত হয়ে বাহিরের পরিবেশ থেকে অবকাশ যাপনের লক্ষ্যে ঘরে ফিরল।
এসেই শুনতে পেল, স্ত্রীর মুখ থেকে জ্বালাময়ী ও গাত্রদাহী কথা।
যার ফলে স্বামীর মনে জ্বলে উঠল প্রতিবাদের অগ্নিশিখা। শুরু হয়ে গেল মুখে তর্ক। এক পর্যায়ে হস্থ সম্প্রসারণও হয়ে গেল ।
যার ফলে শুরু হয়ে গেল হাতাহাতি এবং শেষ অবধি হত্যা কাণ্ডের ন্যায় জঘন্য কাজটি সম্পাদিত হয়ে যায়।
আর যদি এসব কিছুই না ঘটে, তবুও ভাই ভাইয়ের মাঝে সৃষ্টি হয় শত্রুতা। যার মূলে রয়েছে তথাকথিত এই নারীরই হাত।