সুরা মুলক এর ফজিলত হাদিস

সুরা মুলক এর ফজিলত হাদিস

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। সূরা আল-মুলক পবিত্র মক্কা নগরীতে অবতীর্ণ হয়। সূরা মুলক কোরআন শরীফের ৬৭ তম সূরা। এই সূরার মোট আয়াত সংখ্যা ৩০। সুরা মুলক এর ফজিলত হাদিস ,সম্পর্কে প্রায় কমবেশি সকলের জানা রয়েছে।

সুরা মুলক তেলাওয়াতকারীকে ক্ষমা করে দেয়। এবং মৃত্যুর পরেও তেলাওয়াতকারীর জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করে। প্রতিটা মানুষের জীবনে কোনো না কোনো গুনাহ রয়েছে। গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য মহানবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম অনেক ধরনের ইবাদতের কথা উল্লেখ করেছেন।

তার মধ্যে সূরা মূলক এর কথা ও বলেছেন। কারণ, সুরা মুলক মুক্তি দানকারী ও ঝগড়াকারী। যাকেয়ামতের দিনে আল্লাহর সঙ্গে ঝগড়া করবে যেন  মুলক পাঠকারীকে জাহান্নামের আজাব থেকে মুক্তি দান করে।

মুলক শব্দের অর্থ কি?

মূলক শব্দটি আরবি। মূলক শব্দের অর্থ হল সার্বভৌমত্ব। জমিন ও আসমানের সার্বভৌমত্বের একমাত্র মালিক মহান আল্লাহতালা। এই সূরায় শুরু উল্লেখ করা হয়েছে পৃথিবী থেকে আসমান পর্যন্ত যা কিছু রয়েছে সকল কিছুর একমাত্র মালিক মহান আল্লাহতালা।

এই ছড়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়। কারণ সম্পূর্ণ মুলক এর মালিক মহান আল্লাহতালা। সে কারণে তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি অবশ্যই ক্ষমা করে দিবেন। এই মাধ্যমে আল্লাহতালার কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়। এই সূরা কিয়ামতের দিনে আল্লাহর কাছে বান্দার জন্য সুপারিশ করবে।

সুরা মুলক আয়াত সংখ্যা কত?

কোরআন শরীফের মোট  ১১৪ টি সূরা রয়েছে। প্রতিটি সূরার গুরুত্ব সমান। তবে বিভিন্ন সূরার বিভিন্ন ধরনের আমল রয়েছে। সূরা মুলক ক্ষমা প্রার্থনার জন্য তেলাওয়াত করা হয়। সূরা মূলকের মোট আয়াত সংখ্যা ৩০। এবং রুকু সংখ্যা দুইটি।

সূরা মূলক কত পারায় আছে?

সুরা মুলক এর নাম সকলের জানা। সুরা মুলকের আয়াত সংখ্যা ৩০। এবং রুকু সংখ্যা দুইটি। এই সূরাটি নাযিল হয়েছে পবিত্র মক্কায়। কোরআন শরীফের ২৯ নম্বর পাড়ায় সূরা মূলক রয়েছে।

সূরাতুল মুলকের গুরুত্ব:

সুরাতুল মূলকের গুরুত্ব অপরিসীম। সুরা মুলক যে ব্যাক্তি তেলাওয়াত করবে তাকে ক্ষমা না করা পর্যন্ত সুপারিশ করতে থাকবে সুরাটি। মহানবী (সা.) তার উম্মদের মুক্তির পথ দেখেছেন। কুরআন শরীফের বিভিন্ন সূরা ও আয়াত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

আরও পড়ুনঃ মোহরানা ও কাবিন এর মধ্যে পার্থক্য

যাতে করে উম্মতেরা গুনাহ থেকে মুক্তি পায়। হাদিসের অনেকগুলো বর্ণনা এসেছে- হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, আপনি নিজে সুরা মুলক পড়ুন এবং পরিবারের লোকদের ও প্রতিবেশীকে সুরা মুলক শিক্ষা দান করুন।

কারণ সুরা মুলক মুক্তি দানকারী ও ঝগড়াকারী। কিয়ামতের দিন সুরা মুলক আল্লাহর সাথে ঝগড়া করবে এবং তেলাওয়াতকারীকে আজাব থেকে রক্ষা করবে। কবরে আজাব থেকে বাঁচাবেন। 

সুরা মুলক এর ফজিলত হাদিস:

সুরা মূলকের অনেক ফজিলত রয়েছে। মহানবী (সা.) বলেছেন আমার একান্ত কামনা যে, আমার প্রতিটি উম্মতের অন্তরে সুরা মুলক গেঁথে থাকুক। সুরা মুলক রাতে ঘুমানোর আগে পড়া উত্তম। তবে যে কোন সময় এই সূরাটি পড়া যায় সূরাটি নামাজের সময় পড়লে গুরুত্ব অনেক বেশি।

তবে প্রতিটি আয়াতের অর্থ বুঝে পড়া উত্তম। সুরা মুলক পড়লে সকল ধরনের গুনাহ থেকে মাফ পাওয়া যায়। এছাড়াও বিপদে পড়লে বা ঋণগ্রস্ত থাকলে এই সূরা তেলাওয়াত করলে আল্লাহ তাকে বিপদ থেকে রক্ষা করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম সকল উম্মতকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করতেন।

তিনি ভাবছেন যদি প্রতিটি মুমিনের অন্তরে ঠোরা মলম মুখস্ত থাকে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম আরো বলেন সুরা মুলক তেলাওয়াত করলে কবরের আজাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

সুরা মুলক কখন পড়তে হয়:

সুরা মুলক এর অনেক গুরুত্ব। সুরা মূলক যেকোনো সময় তেলাওয়াত করা যায়। তবে নির্দিষ্ট কিছু সময় তেলাওয়াত করলে এর ফজিলত বেশি পাওয়া যায়। রাতে ঘুমানোর আগে সূরা মূলক তেলাওয়াত করা সুন্নাত। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম ঘুমানোর আগে ‘তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলকু’ ও ‘আলিফ লাম মিম তানজিলুল কিতাব’ করতেন।

মহানবী (সাঃ) রাতে তেলাওয়াত করতেন বলে দিনে পাঠ করা যাবে না সেটা না। দিনের যেকোনো সময় যে কোন নামাজে তেলাওয়াত করা উত্তম। সূরাটি মুখস্ত না থাকলে দেখে দেখে পড়তে পারেন এতে সওয়াব এর পরিমাণ বেশি। মূলক সূরাটি প্রতিদিন পাঠ করলে সকল প্রকার গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

সূরা মুলক কবে অবতীর্ণ হয়:

সুরা মুলক কবে অবতীর্ণ হয় সেই সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায় না। তবে সূরাটির বিষয়বস্তু ও বর্ণনা ভঙ্গি থেকে বোঝা যায় সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। ধারণা করা হয় মহানবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর মক্কা জীবনের প্রথম দিকে সুরাটি নাযিল বা অবতীর্ণ হয় সুরা মুলকের মূল বিষয়বস্তু আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করা।

সূরা মুলকের অপর নাম কি?

সূরা মূলক এর অপর নাম সম্পর্কে অনেকেই জানতে চায়। তবে সূরা মূলক এর অপর কোন নাম নেই।

তবে মূলক শব্দটি আরবি এর বাংলা অর্থ সার্বভৌমত্ব। আসমান ও জমিন এর সার্বভৌমত্বের একমাত্র মালিক আল্লাহতালা। তাই এই সূরায় স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে।

সূরা মুলক এর শেষ তিন আয়াত:

সুরা মুলক এর মোট আয়াত সংখ্যা ৩০। নিম্নে সুরা মূলকের শেষের তিন আয়াত উল্লেখ করা হলো।

قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَهْلَكَنِيَ اللَّهُ وَمَنْ مَعِيَ أَوْ رَحِمَنَا فَمَنْ يُجِيرُ الْكَافِرِينَ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ

উচ্চারণ: (২৮) কুল আরাআইতুম ইন আহলাকানিয়াল্লা-হু ওয়া মাম্মা‘ইয়া আও রাহিমানা- ফামাইঁ ইউজীরুল কা-ফিরীনা মিন ‘আযা-বিন আলীম।

বাংলা অর্থ: (বলো, ‘তোমরা ভেবে দেখেছ কি? যদি আল্লাহ আমাকে এবং আমার সঙ্গে যারা আছে, তাদেরকে ধ্বংস করে দেন অথবা আমাদের প্রতি দয়া করেন, তাহলে কাফিরদেরকে যন্ত্রণাদায়ক আজাব থেকে কে রক্ষা করবে?)

قُلْ هُوَ الرَّحْمَنُ آمَنَّا بِهِ وَعَلَيْهِ تَوَكَّلْنَا فَسَتَعْلَمُونَ مَنْ هُوَ فِي ضَلَالٍ مُبِينٍ

উচ্চারণ: (২৯) কুল হুওয়াররাহমা-নুআ-মান্না-বিহী ওয়া’ আলাইহি তাওয়াক্কালনা-, ফাছাতা’লামূনা মান হুওয়া ফী দালা-লিম মুবীন।

বাংলা অর্থ: (বলো, ‘তিনিই পরম করুণাময়। আমরা তাঁর প্রতি ঈমান এনেছি এবং তাঁর ওপর তাওয়াক্কুল করেছি। কাজেই তোমরা অচিরেই জানতে পারবে কে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে?)

قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَصْبَحَ مَاؤُكُمْ غَوْرًا فَمَنْ يَأْتِيكُمْ بِمَاءٍ مَعِينٍ

উচ্চারণ: ৩০) কুল আরাআইতুম ইন আসবাহা মাউকুম গাওরান ফামাইঁ ইয়া’তীকুম বিমাইম মা’ঈন।

বাংলা অর্থ:  (বলো, ‘তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি তোমাদের পানি ভূগর্ভে চলে যায়, তাহলে কে তোমাদেরকে বহমান পানি এনে দিবে?)

সুরা মুলক কি দীর্ঘ?

কোরআন শরীফে মোট ১১৪ টি সূরা রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সূরা বাকারা। যারা আয়াত সংখ্যা ২৮৬। এবং কোরআন শরীফের সবচেয়ে ছোট সূরা কাওসার। এই সূরার আয়াত সংখ্যা ৩। সেই অনুপাতে মুলক সূরা মাধ্যম। কারণ, সুরা মুলকের আয়াত সংখ্যা ৩০। এই কারণে এই সূরাকে দীর্ঘ সূরা বলা যাবে না।

সূরা আল মুলকের ইতিহাস:

সুরা মুলক এর আয়াত সংখ্যা ৩০। এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এই সূরার অনেক ফজিলত রয়েছে। মহানবী (সা.) প্রতিরাতে ঘুমানোর আগে তেলাওয়াত করতেন। কারণ, সুরা মুলক কবরের আজাব থেকে মুক্তি দান করে। এবং কিয়ামতের দিনে বান্দার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করে।

সুরা মুলক এর বাংলা উচ্চারণ:

সুরা মুলক মাক্কি সূরা। এই সূরার আয়াত সংখ্যা ৩০। নিম্নে সূরাটির আরবি , বাংলা উচ্চারণ ও বাংলা অনুবাদ তুলে ধরা হলো:

بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

(শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু)

تَبَٰرَكَ ٱلَّذِى بِيَدِهِ ٱلْمُلْكُ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ

১. উচ্চারণঃ তাবা-রাকাল্লাযী বিয়াদিহিল মুলকু ওয়া হুওয়া ‘আলা- কুল্লি শাইয়িন কাদীর।

اۨلَّذِىْ خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيٰوةَ لِيَبْلُوَكُمْ اَيُّكُمْ اَحْسَنُ عَمَلًا ؕ وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْغَفُوْرُۙ

২.উচ্চারণঃ আল্লাযী খালাকাল মাওতা ওয়াল হায়া-তা লিইয়াবলুওয়াকুম আইয়ুকুম আহছানু‘আমালাওঁ ওয়া হুওয়াল ‘আঝীঝুল গাফূর।

الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا مَّا تَرَى فِي خَلْقِ الرَّحْمَنِ مِن تَفَاوُتٍ فَارْجِعِ الْبَصَرَ هَلْ تَرَى مِن فُطُورٍ

৩. উচ্চারণঃ আল্লাযী খালাকা ছাব‘আ ছামা-ওয়া-তিন তিবা-কান মা- তারা- ফী খালকির রাহমা-নি মিন তাফা-উত ফারজি‘ইল বাসারা হাল তারা- মিন ফুতূর।

ثُمَّ ارْجِعِ الْبَصَرَ كَرَّتَيْنِ يَنقَلِبْ إِلَيْكَ الْبَصَرُ خَاسِأً وَهُوَ حَسِيرٌ

৪. উচ্চারণঃ ছু ম্মার জি’ইলবাসারা কাররাতাইনি ইয়ানকালিব ইলাইকাল বাসারু খা-ছিআওঁ ওয়া হুওয়া হাছীর।

وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاء الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِّلشَّيَاطِينِ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ

৫. উচ্চারণঃ ওয়া লাকাদ ঝাইয়ান্নাছ ছামাআদ্দুনইয়া- বিমাসা-বীহা ওয়াজা’আলনা- হা- রুজূমাল লিশশায়া-তীনি ওয়া আ’তাদনা- লাহুম ‘আযা- বাছছা’ঈর।

وَلِلَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ

৬. উচ্চারণঃ ওয়া লিল্লাযীনা কাফারূবিরাব্বিহিম ‘আযা- বুজাহান্নামা ওয়াবি’ছাল মাসীর।

إِذَا أُلْقُوا فِيهَا سَمِعُوا لَهَا شَهِيقًا وَهِيَ تَفُورُ

৭. উচ্চারণঃ ইযাউলকূফীহা- ছামি’উ লাহা- শাহীকাওঁ ওয়াহিয়া তাফূর।

অর্থঃ যখন তারা তথায় নিক্ষিপ্ত হবে, তখন তার উৎক্ষিপ্ত গর্জন শুনতে পাবে।

تَكَادُ تَمَيَّزُ مِنَ الْغَيْظِ كُلَّمَا أُلْقِيَ فِيهَا فَوْجٌ سَأَلَهُمْ خَزَنَتُهَا أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَذِيرٌ

৮. উচ্চারণঃ তাকা- দুতামাইয়াঝুমিনাল গাইজি কুল্লামাউলকিয়া ফীহা- ফাওজুন ছাআলাহুম খাঝানাতুহাআলাম ইয়া’তিকুম নাযীর।

قَالُوا بَلَى قَدْ جَاءنَا نَذِيرٌ فَكَذَّبْنَا وَقُلْنَا مَا نَزَّلَ اللَّهُ مِن شَيْءٍ إِنْ أَنتُمْ إِلَّا فِي ضَلَالٍ كَبِيرٍ

৯. উচ্চারণঃ কা- লূবালা- কাদ জাআনা- নাযীরুন ফাকাযযাবনা- ওয়া কুলনা- মানাঝঝালাল্লা- হু মিন শাইয়িন ইন আনতুম ইল্লা- ফী দালা- লিন কাবীর।

وَقَالُوا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي أَصْحَابِ السَّعِيرِ

১০. উচ্চারণঃ ওয়া কা-লূলাও কুন্না- নাছমা’উ আও না’কিলুমা- কুন্না-ফীআসহা-বিছছা’ঈর।

অর্থঃ তারা আরও বলবেঃ যদি আমরা শুনতাম অথবা বুদ্ধি খাটাতাম, তবে আমরা জাহান্নামবাসীদের মধ্যে থাকতাম না।

فَاعْتَرَفُوا بِذَنبِهِمْ فَسُحْقًا لِّأَصْحَابِ السَّعِيرِ

১১. উচ্চারণঃ ফা’তারাফূবিযামবিহিম ফাছুহক্বললিআসহা-বিছ ছা’ঈর।

অর্থঃ অতঃপর তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে। জাহান্নামীরা দূর হোক।

إِنَّ الَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُم بِالْغَيْبِ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ كَبِيرٌ

১২. উচ্চারণঃ ইন্নাল্লাযীনা ইয়াখশাওনা রাব্বাহুম বিলগাইবি লাহুম মাগফিরাতুওঁ ওয়া আজরুন কাবীর।

অর্থঃ নিশ্চয় যারা তাদের পালনকর্তাকে না দেখে ভয় করে, তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।

وَأَسِرُّوا قَوْلَكُمْ أَوِ اجْهَرُوا بِهِ إِنَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ

১৩. উচ্চারণঃ ওয়া আছিররূকাওলাকুম আবিজহারূবিহী ইন্নাহূ’আলীমুম বিযা- তিসসুদূ র।

أَلَا يَعْلَمُ مَنْ خَلَقَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ

১৪. উচ্চারণঃ আলা- ইয়া’লামুমান খালাকা ওয়া হুওয়াল্লাতীফুল খাবীর।

هُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ ذَلُولًا فَامْشُوا فِي مَنَاكِبِهَا وَكُلُوا مِن رِّزْقِهِ وَإِلَيْهِ النُّشُورُ

১৫.উচ্চারণঃ হুওয়াল্লাযী জা’আলা লাকুমুল আরদা যালূলান ফামশূফী মানা-কিবিহা- ওয়া কুলূমির রিঝকিহী ওয়া ইলাইহিন নুশূর।

أَأَمِنتُم مَّن فِي السَّمَاء أَن يَخْسِفَ بِكُمُ الأَرْضَ فَإِذَا هِيَ تَمُورُ

১৬.  উচ্চারণঃ আ আমিনতুম মান ফিছছামাই আইঁ ইয়াখছিফা বিকুমুল আরদা ফাইযা- হিয়া তামূর।

أَمْ أَمِنتُم مَّن فِي السَّمَاء أَن يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا فَسَتَعْلَمُونَ كَيْفَ نَذِيرِ

১৭. উচ্চারণঃ আম আমিনতুম মান ফিছছামাই আইঁ ইউরছিলা ‘আলাইকুম হা-সিবান ফাছাতা’লামূনা কাইফা নাযীর।

وَلَقَدْ كَذَّبَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَكَيْفَ كَانَ نَكِيرِ

১৮. উচ্চারণঃ ওয়া লাকাদ কাযযাবাল্লাযীনা মিন কাবলিহিম ফাকাইফা কা- না নাকীর।

অর্থঃ তাদের পূর্ববর্তীরা মিথ্যারোপ করেছিল, অতঃপর কত কঠোর হয়েছিল আমার অস্বীকৃতি।

أَوَلَمْ يَرَوْا إِلَى الطَّيْرِ فَوْقَهُمْ صَافَّاتٍ وَيَقْبِضْنَ مَا يُمْسِكُهُنَّ إِلَّا الرَّحْمَنُ إِنَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ بَصِيرٌ

১৯. উচ্চারণঃ আওয়ালাম ইয়ারাও ইলাত্তাইরি ফাওকাহুম সাফফা-তিওঁ ওয়াইয়াকবিদন । মাইউমছিকুহুন্না ইল্লাররাহমা-নু ইন্নাহূবিকুল্লি শাইয়িম বাসীর।

أَمَّنْ هَذَا الَّذِي هُوَ جُندٌ لَّكُمْ يَنصُرُكُم مِّن دُونِ الرَّحْمَنِ إِنِ الْكَافِرُونَ إِلَّا فِي غُرُورٍ

২০. উচ্চারণঃ আম্মান হা-যাল্লাযী হুওয়া জুনদুল্লাকুম ইয়ানসুরুকুম মিন দূ নিররাহমা-নি ইনিল কাফিরূনা ইল্লা- ফী গুরূর।

أَمَّنْ هَذَا الَّذِي يَرْزُقُكُمْ إِنْ أَمْسَكَ رِزْقَهُ بَل لَّجُّوا فِي عُتُوٍّ وَنُفُورٍ

২১. উচ্চারণঃ আম্মান হা- যাল্লাযী ইয়ারঝকুকুম ইন আমছাকা রিঝকাহূ বাল্লাজ্জূফী ‘উতুওবিওয়া নুফূর।

أَفَمَن يَمْشِي مُكِبًّا عَلَى وَجْهِهِ أَهْدَى أَمَّن يَمْشِي سَوِيًّا عَلَى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ

২২. উচ্চারণঃ আফামাইঁ ইয়ামশী মুকিব্বান ‘আলা- ওয়াজহিহী আহদা আম্মাইঁ ইয়ামশী ছাবি ইয়ান ‘আলা-সিরা-তিমমুছতাকীম।

قُلْ هُوَ الَّذِي أَنشَأَكُمْ وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْأَبْصَارَ وَالْأَفْئِدَةَ قَلِيلًا مَّا تَشْكُرُونَ

২৩. উচ্চারণঃ কুল হুওয়াল্লাযীআনশাআকুম ওয়া জা‘আলা লাকুমুছছাম‘আ ওয়াল আবসা-রা ওয়াল আফইদাতা কালীলাম মা-তাশকুরূন।

قُلْ هُوَ الَّذِي ذَرَأَكُمْ فِي الْأَرْضِ وَإِلَيْهِ تُحْشَرُونَ

২৪. উচ্চারণঃ কুল হুওয়াল্লাযী যারাআকুম ফিল আরদিওয়া ইলাইহি তুহশারূন।

وَيَقُولُونَ مَتَى هَذَا الْوَعْدُ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ

২৫.উচ্চারণঃ ওয়া ইয়াকূলূনা মাতা-হা-যাল ওয়া’দুইন কুনতুম সা-দিকীন।

قُلْ إِنَّمَا الْعِلْمُ عِندَ اللَّهِ وَإِنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُّبِينٌ

২৬. উচ্চারণঃ কুল ইন্নামাল ‘ইলমু’ইনদাল্লা- হি ওয়া ইন্নামাআনা নাযীরুম মুবীন।

فَلَمَّا رَأَوْهُ زُلْفَةً سِيئَتْ وُجُوهُ الَّذِينَ كَفَرُوا وَقِيلَ هَذَا الَّذِي كُنتُم بِهِ تَدَّعُونَ

২৭. উচ্চারণঃ ফালাম্মা-রাআওহু ঝুলফাতান ছীআত ঊজূহুল্লাযীনা কাফারূওয়া কীলা হা-যাল্লাযী কুনতুম বিহী তাদ্দা’ঊন।

قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَهْلَكَنِيَ اللَّهُ وَمَن مَّعِيَ أَوْ رَحِمَنَا فَمَن يُجِيرُ الْكَافِرِينَ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ

২৮. উচ্চারণঃ কুল আরাআইতুম ইন আহলাকানিয়াল্লা-হু ওয়া মাম্মা‘ইয়া আও রাহিমানা- ফামাইঁ ইউজীরুল কা-ফিরীনা মিন ‘আযা-বিন আলীম।

قُلْ هُوَ الرَّحْمَنُ آمَنَّا بِهِ وَعَلَيْهِ تَوَكَّلْنَا فَسَتَعْلَمُونَ مَنْ هُوَ فِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ

২৯. উচ্চারণঃ কুল হুওয়াররাহমা-নুআ-মান্না-বিহী ওয়া’আলাইহি তাওয়াক্কালনা-, ফাছাতা’লামূনা মান হুওয়া ফী দালা-লিম মুবীন।

قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَصْبَحَ مَاؤُكُمْ غَوْرًا فَمَن يَأْتِيكُم بِمَاء مَّعِينٍ

৩০ . উচ্চারণঃ কুল আরাআইতুম ইন আসবাহা মাউকুম গাওরান ফামাইঁ ইয়া’তীকুম বিমাইম মা’ঈন।

সূরা মুলকের বাংলা অর্থ:

সূরা মূলকের আয়াত সংখ্যা ৩০। নিম্নে ৩০ টি আয়াতের বাংলা অর্থ তুলে ধরা হলো:

১.বরকতময় তিনি যার হাতে সর্বময় কর্তৃত। আর তিনি সব কিছুর ওপর সর্বশক্তিমান।

২.যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে উত্তম। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, অতিশয় ক্ষমাশীল।

৩.যিনি সাত আসমান স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। পরম করুণাময়ের সৃষ্টিতে তুমি কোনো অসামঞ্জস্য দেখতে পাবে না। তুমি আবার দৃষ্টি ফিরাও, কোনো ত্রুটি দেখতে পাও কি?

৪. অতঃপর তুমি দৃষ্টি ফিরাও একের পর এক, সেই দৃষ্টি অবনমিত ও ক্লান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।

৫. আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপপঞ্জু দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং সেগুলোকে শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপের বস্তু বানিয়েছি। আর তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের আজাব।

৬. আর যারা তাদের রবকে অস্বীকার করে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আজাব। আর কতইনা নিকৃষ্ট সেই প্রত্যাবর্তনস্থল!

৭. যখন তাদেরকে তাতে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা তার বিকট শব্দ শুনতে পাবে। আর তা উথলিয়ে উঠবে।

৮. ক্রোধে তা ছিন্ন ভিন্ন হবার উপক্রম হবে। যখনই তাতে কোনো দলকে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তার প্রহরীরা তাদেরকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘তোমাদের নিকট কি কোনো সতর্ককারী আসেনি’?

৯. তারা বলবে, ‘হ্যা, আমাদের নিকট সতর্ককারী এসেছিল। তখন আমরা (তাদেরকে) মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত করেছিলাম এবং বলেছিলাম, ‘আল্লাহ কিছুই নাজিল করেননি। তোমরা তো ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছ’।

১০. আর তারা বলবে, ‘যদি আমরা শুনতাম অথবা বুঝতাম, তাহলে আমরা জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসীদের মধ্যে থাকতাম না’।

১১. অতঃপর তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে। অতএব, ধ্বংস জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসীদের জন্য।

১২. নিশ্চয় যারা তাদের রবকে না দেখেই ভয় করে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও বড় প্রতিদান।

১৩. আর তোমরা তোমাদের কথা গোপন কর অথবা তা প্রকাশ কর, নিশ্চয় তিনি অন্তরসমূহে যা আছে সে বিষয়ে সম্যক অবগত।

১৪. যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি জানেন না? অথচ তিনি অতি সূক্ষদর্শী, পূর্ণ অবহিত।

১৫. তিনিই তো তোমাদের জন্য জামিনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে-প্রান্তরে বিচরণ কর এবং তাঁর রিজিক থেকে তোমরা আহার কর। আর তাঁর নিকটই পুনরুত্থান।

১৬. যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের সহ জমিন ধসিয়ে দেয়া থেকে কি তোমরা নিরাপদ হয়ে গেছ, অতঃপর আকস্মিকভাবে তা থর থর করে কাঁপতে থাকবে।

১৭. যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের ওপর পাথর নিক্ষেপকারী ঝড়ো হাওয়া পাঠানো থেকে তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গেছ, তখন তোমরা জানতে পারবে কেমন ছিল আমার সতর্কবাণী?

১৮. আর অবশ্যই তাদের পূর্ববর্তীরাও অস্বীকার করেছিল। ফলে কেমন ছিল আমার প্রত্যাখ্যান (এর শাস্তি)?

১৯. তারা কি লক্ষ্য করেনি তাদের উপরস্থ পাখিদের প্রতি, যারা ডানা বিস্তার করে ও গুটিয়ে নেয়? পরম করুণাময় ছাড়া অন্য কেউ এদেরকে স্থির রাখে না। নিশ্চয় তিনি সব কিছুর সম্যক দ্রষ্টা।

২০. পরম করুণাময় ছাড়া তোমাদের কি আর কোনো সৈন্য আছে, যারা তোমাদেরকে সাহায্য করবে? কাফিররা শুধু তো ধোঁকায় নিপতিত।

২১. অথবা এমন কে আছে, যে তোমাদেরকে রিজিক দান করবে যদি আল্লাহ তাঁর রিজিক বন্ধ করে দেন? বরং তারা অহমিকা ও অনীহায় নিমজ্জিত হয়ে আছে।

২২. যে ব্যক্তি উপুড় হয়ে মুখের ওপর ভর দিয়ে চলে সে কি অধিক হেদায়াতপ্রাপ্ত নাকি সেই ব্যক্তি যে সোজা হয়ে সরল পথে চলে?

২৩. বলো, ‘তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের জন্য শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি এবং অন্তকরণসমূহ দিয়েছেন। তোমরা খুব অল্পই শোকর কর’।

২৪. বলো, ‘তিনিই তোমাদেরকে জমিনে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর কাছেই তোমাদেরকে সমবেত করা হবে’।

২৫. আর তারা বলে, ‘সে ওয়াদা কখন বাস্তবায়িত হবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।

২৬. বলো, ‘এ বিষয়ের জ্ঞান আল্লাহরই নিকট। আর আমি তো স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র’।

২৭. অতঃপর তারা যখন তা আসন্ন দেখতে পাবে, তখন কাফিরদের চেহারা মলিন হয়ে যাবে এবং বলা হবে, ‘এটাই হলো তা, যা তোমরা দাবী করছিলে’।

২৮. বলো, ‘তোমরা ভেবে দেখেছ কি’? যদি আল্লাহ আমাকে এবং আমার সঙ্গে যারা আছে, তাদেরকে ধ্বংস করে দেন অথবা আমাদের প্রতি দয়া করেন, তাহলে কাফিরদেরকে যন্ত্রণাদায়ক আজাব থেকে কে রক্ষা করবে’?

২৯. বলো, ‘তিনিই পরম করুণাময়। আমরা তাঁর প্রতি ঈমান এনেছি এবং তাঁর ওপর তাওয়াক্কুল করেছি। কাজেই তোমরা অচিরেই জানতে পারবে কে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে’?

৩০. বলো, ‘তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি তোমাদের পানি ভূগর্ভে চলে যায়, তাহলে কে তোমাদেরকে বহমান পানি এনে দিবে’?

শেষ কথা: সুরা মুলক এর ফজিলত হাদিস

সুরা মুলক কোরআন শরীফের ৬৭ নম্বর সূরা। এই সূরার আয়াত সংখ্যা ৩০। এই সূরার অনেক ফজিলত রয়েছে। ফজিলত সম্পর্কে উপরে আলোচনা করা হয়েছে। সম্পূর্ণ পড়ে থাকলে সুরা মুলক সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবেন। সূরা মূলক এর সবচেয়ে বড় ফজিলত গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়া।

আরও পড়ুনঃ কাজা নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত

আমরা অনেক সময় না বুঝে অনেক ভুল করে থাকে। সেসব ভুল থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হয়। সুরা মূলক ক্ষমা প্রার্থনার উত্তম উপায়।

লেখার মধ্যে যদি কোন ভুল হয় ক্ষমা করে দিবেন। আল্লাহ তা’আলা আমাকে আপনাকে সকল প্রকার গুনাহ থেকে মাফ করুক। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

শেয়ার করুন

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *