শিশুর দৈহিক বিকাশ কি? শিশুর দৈহিক বিকাশের বৈশিষ্ট্যসমূহ

শিশুর দৈহিক বিকাশ কি? শিশুর দৈহিক বিকাশের বৈশিষ্ট্যসমূহ

শিশুর শারীরিক ও অঙ্গ সঞ্চালনের বিকাশ:

আজকের শিশু মনােবিজ্ঞানীরা শিশুর দৈহিক বৃদ্ধিকে বেশ গুরুত্ব দেন। মানব শিশুর দেহের ও মনের মধ্যে একটি নির্ভরযোগ্য সম্পর্কের কথা মনােবিজ্ঞানীরা জোর দিয়ে বলেন এবং এটাও সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে যে, মানসিক আবেগ ও সামাজিক প্রবণতায় শারীরিক বৈশিষ্ট্য বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। এমনকি শিশুর লেখাপড়ার প্রস্তুতিতেও দেহের কিছু কিছু অঙ্গের পরিপক্কতা জড়িত থাকে।

বস্তুতপক্ষে শিশুর দৈহিক বিকাশ তার ঐ বয়সের ক্ষমতা, দক্ষতা ও শক্তির পরিচয় দেয়। শিশুর দৈহিক বিকাশ সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করলে আমরা শিশুতে শিশুতে পার্থক্য এবং একই শিশুর বিভিন্ন রকম পরিবর্তন সম্পর্কে অবগত হতে পারি। এছাড়া শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি সম্পর্কে জানা থাকলে শিশুর মধ্যে কোন অস্বাভাবিক বা মন্থরতার কারণ অনুসন্ধান করে সময়মতাে প্রতিকারের ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে পারি।

আরও দেখুনঃ শারীরিক বৃদ্ধির প্রভাবকসমূহ/বাধা সৃষ্টিকারী উপাদানসমূহ

শারীরিক বিকাশ (Physical Development):

দৈহিক বা শারীরিক বিকাশ বলতে শিশুর অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বিকাশ এবং তাদের কর্মক্ষমতার দৃঢ়তাকেই বােঝানাে হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে শিশু পরিপূর্ণতার দিকে ধাবিত হয়। যেমন- এক সময় শিশুর সব চাহিদা পরিতৃপ্তির জন্য অন্যের উপর নির্ভর করতে হতাে, বয়সবৃদ্ধির সাথে সাথে এই নির্ভরতা কমে আসে।

সে নিজে খেতে শেখে, কাপড় পড়তে শেখে, গােসল করতে শেখে অর্থাৎ তার অবিরত দৈহিক বিকাশের ফলেই সে উপরােক্ত আচরণগুলাে সম্পাদন করতে শেখে। শিশুর দৈহিক বিকাশ দুধরনের একটি হলাে অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বিকাশ এবং অপরটি হলাে তাদের ক্রিয়ার বিকাশ । এই দুই ধরনের বিকাশ ব্যক্তি জীবনের অন্যান্য বিকাশকে সহায়তা করে।

আরও দেখুনঃ বয়:সন্ধিকালের চাহিদা ও বয়:সন্ধিকালের সমস্যা

দৈহিক বিকাশের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Physical Development):

দৈহিক বিকাশের উপর যেসব গবেষণা হয়েছে তা বিশ্লেষণ করলে দৈহিক বিকাশের ধারার কতকগুলি বিশেষ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। সে বৈশিষ্ট্যগুলাে হলাে-

আরও দেখুনঃ শিশুর দৈহিক বিকাশের লক্ষণসমূহ

১. মানুষের দৈহিক বিকাশ বিশেষ ছন্দে হয়। ঠিক ঢেউ এর তালের মতাে সমান হারে বৃদ্ধি সবসময় লক্ষ্য করা যায় না। কোন সময় বিকাশের হার বেশি থাকে, আবার কোন সময় বিকাশের হার কম থাকে। এভাবে ক্রমান্বয়ে বিকাশ চলতে থাকে।

২. দেহের প্রত্যেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বিকাশের নিজস্ব নিয়ম আছে। প্রত্যেকটি অঙ্গই যে যার নিয়মে বৃদ্ধি পেতে থাকে। তবে সাধারণভাবে একটি নিয়ম লক্ষ্য করা যায়, যাকে মনােবিজ্ঞানীরা Law_of developmental direction নামে অভিহিত করেছেন। এই নিয়ম অনুযায়ী দেহের উপরের অঙ্গগুলির বিকাশ আগে হয়, পরে নিম্নের অঙ্গগুলির বিকাশ হয়।

৩. মানব দেহের দৈহিক বিকাশ পারিপার্শ্বিকতার উপর নির্ভর করে। সাধারণত ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে এই বিকাশের হারের পরিবর্তন হয় ।

৪. দৈহিক বিকাশের প্রক্রিয়া বয়সের উপর নির্ভরশীল। সাধারণত দেখা যায় জন্ম থেকে আড়াই বছর পর্যন্ত দৈহিক বিকাশের হার খুব দ্রুত থাকে। কিন্তু পরে সেই হার কমে যায় এবং কৈশােরে গিয়ে বৃদ্ধির হার আবার বেড়ে যায।

শেয়ার করুন

Similar Posts

15 Comments

  1. Md. Imran Hossain says:

    I Like it !

      1. Fulkoli Blog says:

        Thanks for your comment.

      1. Fulkoli Blog says:

        Thanks for your comment.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *