বাচ্চাদের সর্দি কাশি দূর করার ঔষধ

বাচ্চাদের সর্দি কাশি দূর করার ঔষধ

সর্দি কাশি এক ধরনের ভাইরাসঘটিত সংক্রামক রোগ। যা মানব দেহের শ্বাসপথ ও নাকে আক্রমণ হয়। সর্দি কাশি হয় সাধারণত আবহাওয়া পরিবর্তনের সময়। এই সমস্যা বেশি হয় বাচ্চাদের। কারণ বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে।

বাচ্চাদের সর্দি কাশি দূর করার ঔষধ অনেক রয়েছে। তবে সঠিক ওষুধ না খাওয়ালে বাচ্চাদের সর্দি কাশি দূর হয় না। এছাড়াও সর্দি কাশি হলেই বাচ্চাদের ওষুধ খাওয়ানো ঠিক না। এতে করে বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। বাচ্চাদের সর্দি কাশি দূর করার ঔষধ সম্পর্কে নিম্ন আলোচনা করা হলো। 

সর্দি কি?

সর্দি হলো ভাইরাস জনিত সংক্রমণ।  আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ছড়ায়। এই সময় সকলের সর্দি  হয়ে থাকে। সর্দি হলে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। অনেক সময় সর্দি থেকে জ্বর হয়। গলা ব্যথা কাশি হয় ও কাশি হয়।

কাশির কারণ কি?

সর্দি লাগার ফলে শ্বাসনালীতে সংক্রমণ হয়। শ্বাসনালীতে সংক্রমণ হলে কাশি হয়। সর্দি ছাড়াও অনেক কারণে কাশি হয়ে থাকে। কোভিড-১৯,তীব্র ব্রঙ্কাইটিস, পের্টুসিস বা যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া রোগ হলে কাশি হয়ে থাকে। কারণ এসব রোগ হলে শ্বাসনালীতে খুসখুস করে যার ফলে কাশি হয়।

শুকনো কাশি কি?

কাশি সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি শুকনো কাশি আরেকটি শ্লেষ্মাযুক্ত। শুকনো কাশি সাধারণত হয়ে থাকে বায়ু দূষণের কারণে। এছাড়াও যক্ষা, হাঁপানি ফুসফুসে সংক্রামন হলে শুকনো কাশি হয়। শুকনো কাশি থেকে দূরে থাকার জন্য মার্কস ব্যবহার করা উচিত। বিশেষ করে শীতকালীন সময় শুকনো কাশি হয়।

সর্দি গলা ব্যথা শুরু হয় কেন?

সর্দি লাগলে গলা ব্যাথা হয় এটা একটি সাধারণ বিষয়। কারণ সর্দি হলে গলায় প্রদাহ সৃষ্টি হয়। টনসিল, নরম তাল, খাদ্যনালির উপরের অংশ প্রদাহর সৃষ্টি হয়। যার কারণে গলা ব্যথা শুরু হয়। তবে গরম পানি বা চা খেলে গলা ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বিশেষ করে সত্যি লাগলে টনসিল হয়।

বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে কি করতে হবে?

বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে কি করতে হবে

বাচ্চাদের সর্দি কাশি বেশি হয়ে থাকে। তাই বাচ্চাদের অনেক সাবধানে লালন পালন করতে হয়। বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে কি করতে হবে? নিম্ন তুলে ধরা হলো

  1. তাপমাত্রা উষ্ণ রাখার চেষ্টা করতে হবে।
  2. পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিতে হবে।
  3. হালকা গরম পানি দিয়ে শরীর মুছতে হবে।
  4. বুকের দুধ বা তরল পানি পান করাতে হবে।
  5. এক বছরে বেশি বাচ্চার বয়স হলে সুপ খাওয়াতে পারেন।
  6. সর্দি কাশির সিরাপ খাওয়াতে হবে।
  7. ঠান্ডা পানি থেকে দূরে রাখতে হবে।

বাচ্চাদের সর্দি হলে কি খাওয়া উচিত?

শিশুদের সর্দি কাশি হলে অনেক সমস্যা হয়। কারণ তারা অনেক ছোট থাকে যার কারণে সঠিক ভাবে চিকিৎসা করা যায় না। কারণ তারা তাদের সমস্যা বলতে পারে না। বাচ্চাদের সর্দি হলে কি খাওয়ানো উচিত নিম্ন তুলে ধরা হলো:

  1. মায়ের দুধ অথবা গরুর দুধ খাওয়াতে হবে।
  2. ভিটামিন সি যুক্ত ফল খাওয়াতে হবে।
  3. সুপ খাওয়াতে হবে। 
  4. তরল জাতি খাবার খাওয়াতে হবে।

বাচ্চাদের সর্দি কাশির দোয়া:

ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। কারণ সকল সমস্যার সমাধান এখানে রয়েছে। বাচ্চাদের সর্দি-কাশির দোয়া রয়েছে নিম্ন তুলে ধরা হলো:

بِسْمِ اللَّهِ الْكَبِيرِ أَعُوذُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ مِنْ شَرِّ عِرْقٍ نَعَّارٍ وَمِنْ شَرِّ حَرِّ النَّارِ

উচ্চারণ: বিসমিল্লাহিল কাবির, আউজুবিল্লাহিল আজিমি মিন শাররি ইরকিন না’আর, ওয়া মিন শাররি হাররিন নার।

এই দোয়াটি করলে রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

বাচ্চাদের সর্দি কাশি দূর করার উপায়:

বর্তমান সময়ে আবহাওয়ার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। যার কারণে বাচ্চাদের সর্দি কাশি বেশি হচ্ছে। পরিবর্তনের কারণে ভাইরাস জনিত সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব ভাইরাসের আক্রমণে বাচ্চাদের সর্দি কাশি হচ্ছে। বাচ্চাদের সর্দি কাশি দূর করার উপায় হচ্ছে সঠিকভাবে বাচ্চাদের যত্ন নেওয়া।

আরও পড়ুনঃ সিজারের পর ইনফেকশন হলে করণীয়

বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে সাথে সাথে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। তারপর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে। এছাড়াও বাচ্চাদের ঠান্ডা পানি থেকে দূরে রাখতে হবে। তাহলে খুব সহজেই সর্দি কাশি দূর করা যাবে। এই সময় বাচ্চাদের পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে।

নবজাতকের সর্দির ঔষধ:

নবজাতকের সর্দির ঔষধ

নবজাতকদের সর্দি কাশি লেগেই থাকে। যা জন্য তাদের ওষুধ খাওয়াতে হয়। নবজাতকের সর্দির ঔষধ এর নাম নিম্নে তুলে ধরা হলো:

  1. প্যারাসিটামল সিরাপ
  2. অ্যান্টিহিস্টামিন সিরাপ
  3. হিস্টাসিন
  4. এনটিস্টা
  5. এলসেট 

বাচ্চাদের সর্দি কাশি দূর করার ঔষধ:

বর্তমানে বাচ্চাদের সর্দি কাশি বেড়েই চলেছে। কারণ আবহাওয়া অনেক পরিবর্তন হয়েছে। যার কারনে  ভাইরাস বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে, বাচ্চাদের সর্দি কাশি দূর করার ঔষধ খাওয়াতে হচ্ছে। বর্তমান সময়ে বাজারে অনেক ধরনের সর্দি কাশির ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে।

তবে সব ওষুধ ভালো কাজ করে না। অনেক ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যার ফলে বাচ্চাদের অনেক সমস্যা হতে পারে। নিম্নে বাচ্চাদের সর্দি কাশি দূর করার ঔষধ সম্পর্কে তুলে ধরা হলো।

বাচ্চাদের সর্দি কাশির এন্টিবায়োটিক ঔষধের নাম:

বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে এন্টিবায়োটিক খাওয়াতে হয়। নিম্নে, এন্টিবায়োটিকবাচ্চাদের সর্দি কাশির এন্টিবায়োটিক ঔষধের নাম তুলে ধরা হলো:

  1. Fexo 120
  2. Keto A 100
  3. Askorel SR
  4. Ambrox
  5. Axodin
  6. Klarix

বাচ্চাদের সর্দি কাশি দূর করার উপায়:

বাচ্চাদের সর্দি কাশি হওয়া একটি সাধারণ। বিষয় কারণ বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম হয়ে থাকে। যার কারণে, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গেলেই খুব সহজেই সর্দি কাশি হয়। এ কারণে বাচ্চাদের অনেক সাবধানে রাখতে হয়।

আরও পড়ুনঃ পায়ের তালু জ্বলে ও পায়ের তালু ব্যাথা করে কেন?

বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়াও কোন নতুন জায়গায় গেলে বাসা থেকে পানি নিয়ে যেতে হবে। এবং গোসল করাতে হবে পানি গরম করে তারপর ঠান্ডা করে। এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিনযুক্ত খাবার খাওয়াতে হবে তাহলে বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

বাচ্চাদের জ্বর সর্দি কাশির ঔষধের নাম:

বাচ্চাদের জ্বর সর্দি হলে সাথে সাথে চিকিৎসা নিতে হয়। কারণ চিকিৎসা নিতে দেরি হলে বাচ্চার অনেক ক্ষতি হতে পারে। নিম্নে, বাচ্চাদের জ্বর সর্দি কাশির ঔষধের নাম তুলে ধরা হলো:

জ্বরের ওষুধের নাম:

  1. Napa
  2. Zimex
  3. Azin
  4. AZ
  5. Adiz

সর্দি কাশির ওষুধের নাম:

  1. Fexo 120
  2. Keto A 100
  3. Askorel SR
  4. Ambrox
  5. Axodin
  6. Klarix

বাচ্চাদের কাশির এন্টিবায়োটিক:

সর্দি ও ধুলাবালি কারণে বাচ্চাদের কাশি হয়ে থাকে। বাচ্চাদের কাশি হলে অনেক সমস্যা হয় কারণ। কাশি হলে পুরো শরীর ব্যথা হয়ে যায়। এবং বাচ্চা অনেক কষ্ট হয়। বাচ্চাদের কাশির এন্টিবায়োটিক এর নাম নিম্ন তুলে ধরা হলো:

  1. Alkof Cofgel Tablet
  2. Brolyt
  3. Acorex
  4. Ambrox
  5. Axodin
  6. Klarix
  7. Fexo 120
  8. Keto A 100

শেষ কথা: বাচ্চাদের সর্দি কাশি দূর করার ঔষধ

বাচ্চাদের সর্দি কাশি একটি সাধারণ বিষয়। কারণ আবহাওয়া পরিবর্তন এর কারণে সকল বয়সের মানুষের সর্দি কাশি জ্বর হচ্ছে। এজন্য সকলের উচিত সঠিকভাবে চলাফেরা করা। কারণ জ্বর সর্দি হলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। এছাড়াও সর্দির ওষুধ আমাদের শরীর দুর্বল করে ফেলে।

এছাড়াও ওষুধের অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে। যরি কারণে মানুষের অনেক ধরনের রোগ হয়ে থাকে।  লেখার মধ্যে কোন ভুল হলে ক্ষমা করে দেবেন। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

শেয়ার করুন

Similar Posts

  • শরীরের ফিটনেস ধরে রাখার কৌশল।

     শরীরের ফিটনেস ধরে রাখার কৌশল। শীত আসলেই আমরা সবাই উৎসবের আমেজে মেতে উঠি। বিয়ে বউ ভাত, পিকনিক, জন্মদিনের মতো হাজারো আয়োজন। আর এসব আয়োজনে অনেক প্রকার খাবার থাকে আর এসব লোভনীয় খাবার সব সময় না খেয়ে আর কত নিজেকে কষ্ট দেওয়া যায়। শরীরের ফিটনেস ধরে রাখতে আমরা যারা নিজেদের শরীর নিয়ে আত্ম সচেতন বা আমরা…

    শেয়ার করুন
  • কানে ইনফেকশন কেন হয়: কারণ, লক্ষণ, ও প্রতিকার

    কানে ইনফেকশন একটি সাধারণ এবং বেশ বিরক্তিকর সমস্যা, যা ছোট থেকে বড়, সবাইকেই কখনো না কখনো ভোগাতে পারে। ইনফেকশন হলে কানের ব্যথা, চাপ অনুভব করা, এমনকি শ্রবণ শক্তি কমে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়। কানে ইনফেকশন মূলত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, কিংবা ফাংগাসের আক্রমণ থেকে হতে পারে। এছাড়া, কানের অপর্যাপ্ত যত্ন কিংবা সংক্রমণজনিত কারণে এই সমস্যা দেখা…

    শেয়ার করুন
  • পায়ের তালু জ্বলে ও পায়ের তালু ব্যাথা করে কেন?

     পায়ের তালু জ্বলে ও পায়ের তালু ব্যাথা করে কেন? পায়ের তলায় জ্বলন্ত সংবেদন একটি সাধারণ যন্ত্রণা যা যথেষ্ট অস্বস্তি এবং ব্যথার কারণ হতে পারে। এই অবস্থা প্রায়ই ঘুম বঞ্চনা এবং শারীরিক অস্বস্তি হতে পারে। যাইহোক, এটি লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে পায়ে এই জ্বালা পোড়া ফুট সিন্ড্রোম নামে পরিচিত একটি অন্তর্নিহিত চিকিৎসা অবস্থার ইঙ্গিতও হতে পারে।…

    শেয়ার করুন
  • মাথা ব্যথা থেকে মুক্তির উপায়

    মাথা ব্যথা থেকে মুক্তির উপায় => কখনো মাথা ব্যথা অনুভব করেনি এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। এটা রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। মাথা ব্যথার অনেক কারণ রয়েছে এর মধ্যে রয়েছে দুশ্চিন্তা, মাইগ্রেন, অতিরিক্ত ধূমপা্ন, ভারী মদ পান এবং ব্যথা নাশক ওষুধের অত্যাধিক ব্যবহার। এছাড়া ও কাজের চাপে বিশ্রামের অভাবে মাথা ব্যাথার একটি সাধারণ কারণ হতে…

    শেয়ার করুন
  • মাজা বা কোমরে ব্যথা এর কারন ও প্রতিকার

     মাজা বা কোমরে ব্যথা যে কারণে হয় মাজা বা কোমরে ব্যথা সাধারণত আপনার মেরুদণ্ডের পেশী বা লিগামেন্টগুলির একটি প্রসারিত বা ছিঁড়ে যাওয়ার কারণে বা দুটি কশেরুকার মধ্যে একটি ডিস্কের সমস্যার কারণে হয়। কখনও কখনও, একটি ডিস্ক হার্নিয়েশনে মাজা বা কোমরে ব্যথা হতে পারে। একটি স্নায়ু বা স্নায়ুর উপর চাপেও মাজা বা কোমরে ব্যাথা হতে পারে।…

    শেয়ার করুন
  • ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ ও মুক্তির উপায়

     ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ ও মুক্তির উপায়। ফ্যাটি লিভার এমন একটি অবস্থা যা দুটি প্রধান প্রকারে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে: অ্যালকোহলযুক্ত ফ্যাটি লিভার এবং নন-অ্যালকোহলযুক্ত ফ্যাটি লিভার। ফ্যাটি লিভার, যাকে ডাক্তারি ভাষায় হেপাটিক স্টেটোসিস বলা হয়, এমন একটি অবস্থা যা লিভারে চর্বি জমা হলে ঘটে। যদিও লিভারে কিছু পরিমাণে চর্বি থাকা স্বাভাবিক, তবে অতিরিক্ত জমে বিভিন্ন…

    শেয়ার করুন