গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা: গনোরিয়া হচ্ছে একটি যৌন রোগ। এই রোগটি নারী পুরুষ হয়ে থাকে। তবে নারীদের তুলনায় পুরুষের এই রোগটি বেশি হয়। পুরুষের গনোরিয়া হলে প্রসাবের সময় জ্বালাপোড়া করে। এবং মূত্রনালী দিয়ে পোজ বের হয়। এই সমস্যাটি নারীদের ক্ষেত্রেও হয়ে থাকে। তবে তাদের লক্ষণ দেখা যায় না।
গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা। সম্পর্কে যারা জানতে চান আজকের আর্টিকেল শুধু তাদের জন্য। তাহলে চলুন জেনে নেই গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে। এবং গনোরিয়া রোগ সম্পর্কিত কিছু তথ্য।
গনোরিয়া মানে কি?
গনোরিয়া ( Gonorrhea) একটি যৌনবাহিত রোগ। গনোরিয়া রোগটি Neisseria gonorrhoeae (নিশেরিয়া গনোরি) নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে হয়ে থাকে। এই রোগটি যৌন মিলনের কারণে ছড়ায়।
আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে মেলামেশার ২ থেকে ১৪ দিন পর রোগটির লক্ষণ গুলো প্রকাশ হয়। এই ব্যাকটেরিয়া বেশি দিন মানবদেহে টিকে থাকতে পারে না।
গনোরিয়া রোগ টা কি?
গনোরিয়া রোগ কি আমরা আগেই জেনেছি। এটি হলো একটি যৌন বাহিত রোগ। এই রোগটি নারী-পুরুষ উভয়ের মধ্যে দেখা যায়। বিশেষ করে এই রোগটি পুরুষের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
এ রোগটি ছড়ায় যৌন মিলনের মাধ্যমে। গনোরিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া করে। এবং মূত্রনালি দিয়ে পূজ বের হয়।
গনোরিয়া রোগের জীবাণুর নাম কি?
গনোরিয়া একটি যৌনবাহিত রোগ। এই রোগটি ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে ছড়ায়। গনোরিয়া রোগের জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়ার নাম হল Neisseria gonorrhoeae (নিশেরিয়া গনোরি)।
গনোরিয়া রোগের কারণ কি?
গনোরিয়া একটি যৌন রোগ। এই রোগটি হয় যৌন মিলোন করলে। যদি কোনো গনোরিয়া আক্রন্ত নারীর সাথে কোন পুরুষ মেলামেশা করে অথবা গনোরিয়া আক্রান্ত পুরুষের সাথে নারী মেলামেশা করে তাহলে এই রোগটি হয়।
সাধারণত যৌন মিলনের কারণে এই সমস্যাটি হয়। কারণ এই রোগটি যৌন রোগ। লিঙ্গতে এই রোগটি হয়ে থাকে।
গনোরিয়া রোগের চারটি লক্ষণ:
গনোরিয়া রোগের কিছু লক্ষণ রয়েছে। নিম্নে, গনোরিয়া রোগের চারটি লক্ষণ তুলে ধরা হলো:
- মলত্যাগের সময় ব্যথা ও জ্বালা অনুভব হওয়া।
- বারবার প্রস্রাব হওয়া।
- যৌনাঙ্গ দিয়ে পুঁজ বের হওয়া।
- যৌন সঙ্গমের সময় ব্যথা হওয়া।
- তলপেটে তীব্র ব্যথা হাওয়া।
গনোরিয়া রোগের লক্ষণ কতদিন পর প্রকাশ পায়:
গোনোরিয়া একটি যৌন রোগ। এই রোগটি আক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে প্রকাশ পায় না। আক্রান্ত হওয়ার ২ থেকে ১৪ দিন পর প্রকাশ পায়। তবে অনেকের ৪ থেকে ৬ দিনের মধ্যে লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে শুরু করে।
কত শতাংশ পুরুষের গনোরিয়া হয়:
বর্তমান সময়ে যৌন রোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ রোগ গনোরিয়া। প্রতিবছর প্রায় ৭৮ থেকে ৮৮ মিলিয়ন মানুষ গনোরিয়ায় আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা নারীদের তুলনায় অনেক বেশি।
আরও পড়ুনঃ হার্টের রোগীর খাবার তালিকা
বর্তমানে ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী পুরুষদের মধ্যে এই রোগটি দেখা যায়। বর্তমান সময়ে গনোরিয়া আক্রান্ত পুরুষের শংকর ০.৯০% প্রায়। অনেক সময় এর কম বেশি হয়ে থাকে।
গনোরিয়া সংক্রমণের সম্ভাবনা কতটুকু:
গনোরিয়া একটি সংক্রমণ রোগ। এই রোগটি ছড়ায় যোনিপথ, যৌনাঙ্গ, মুখগহ্বর ও পায়ুপথ দিয়ে। গনোরিয়া আক্রান্ত মহিলার সাথে যৌন মিলন করলে পুরুষেরা সংক্রমণের সম্ভাবনা ২০%। তবে গনোরিয়া আক্রান্ত পুরুষের সঙ্গে যৌন মিলন করলে নারীর আক্রান্ত হওয়া সম্ভাবনা প্রায় ৬০ – ৮০%।
পুরুষদের এসটিআই এর কারণ:
এসটিআই (STI) এর পূর্ণর সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ইনফেকশন। এটি পুরুষ ও নারী উভয়ের মধ্যে সংক্রামিত হতে পারে। পুরুষদের এসটিআই এর কারণ হল যৌন মিলন। বেশিরভাগ যৌন সংক্রান্ত ছড়ায় যৌন মিলনের মাধ্যমে।
এছাড়াও রক্ত, বীর্য যোনিপথের তরল এবং অন্যান্য তরল ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস বহন করতে পারে একজন থেকে আরেকজনের শরীরে।
নারীদের এসটিআই কতদিন পর দেখা যায়:
নারী-পুরুষ উভয়ের মধ্যে গনোরিয়া রোগটি দেখা যায়। এই রোগটি ছড়ায় যৌন মিলনের মাধ্যমে। নারীদের এসটিআই দেখা যায় ২ দিন পর থেকে। তবে এর লক্ষণ গুলো প্রকাশ হয় দুই থেকে ১৪ দিন এর মধ্যে। অনেক সময় শারীরিক সমস্যার কারণে লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে সময় কম বেশি হতে পারে।
গনোরিয়া রোগ থেকে মুক্তির উপায়:
সঠিকভাবে চলাফেরা করলে গনোরিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। গনোরিয়া রোগ থেকে মুক্তি উপায় নিম্ন তুলে ধরা হলো:
- ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
- অবৈধ যৌন মিলন থেকে বিরত থাকতে হবে।
- মহিলাদের পিরিয়ডের সময় অবশ্যই পরিষ্কার কাপড় অথবা প্যাড ব্যবহার করতে হবে।
- সুরক্ষিতভাবে যৌন মিলন করতে হবে।
- স্বামী স্ত্রী অসুস্থ হলে উভয়কে একই সঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে।
গনোরিয়া কতদিন সুপ্ত অবস্থায় থাকে?
গনোরিয়া রোগে আক্রান্ত হলে প্রথমে লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় না। কারণ সেই সময় রোগটি শরীরে সুপ্ত অবস্থায় থাকে। তবে গনোরিয়া সুস্থ অবস্থায় থাকে ২ থেকে ১৪ দিনের মতো। অনেক রোগীর দুই দিন পর থেকেই লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। আবার অনেকের প্রকাশ পেতে সময় লাগে ১৪ দিনের মতো।
গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা:
গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে চাই। তবে সঠিক কথা হচ্ছে গনোরিয়া রোগের কোন ঘরোয়া চিকিৎসা নেয়। তবে গনোরিয়া রোগ হলে প্রথমে কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে হয়।
সেগুলোকেই গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া বলতে পারেন। গনোরিয়া হলে সর্বপ্রথম শারীরিক মেলামেশা বন্ধ করতে হবে। তারপর যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
গনোরিয়া কি ভালো হয়:
অনেকেই গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে চাই। তবে গনোরিয়া রোগের সঠিক চিকিৎসা করলে ভালো হয়। গনোরিয়া রোগের এলোপ্যাথিক এবং হোমিওপ্যাথিক দুই ভাবেই চিকিৎসা করা যায়। তবে সঠিক চিকিৎসা করলে খুব সহজেই ভালো হয়ে যায়।
গনোরিয়া এন্টিবায়োটিক ঔষধ:
গনোরিয়া রোগ হলে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হয়। এই রোগটি হলে অবশ্যই সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে। তা না হলে অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে। গনোরিয়া এন্টিবায়োটিক ওষুধ সেফট্রিয়াক্সন ১০০০ এম জি ইনজেকশন (Ceftriaxone 1000 MG Injection)। তবে গনোরিয়া রোগের জন্য ডাক্তারেরা আরো অনেক ওষুধ দিয়ে থাকে।
গনোরিয়ার জন্য কোন এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়:
গনোরিয়া রোগ হলে অবশ্যই ডাক্তারে পরামর্শ নিতে হবে। কারণ গণরে একটি যৌন রোগ। এ রোগটি হওয়ার ফলে যৌনাঙ্গের বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। এ কারণে এ রোগের চিকিৎসা অবশ্যই দ্রুত করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ, ডেঙ্গু রোগ কেন হয়?
তা না হলে অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে। ডাক্তাররা কোন রোগের জন্য সেফট্রিয়াক্সন ১০০০ এম জি ইনজেকশন (Ceftriaxone 1000 MG Injection) দিয়ে থাকে।
গনোরিয়ায় অ্যাজিথ্রোমাইসিন কিভাবে ব্যবহার করা হয়:
অ্যাজিথ্রোমাইসিন একটি এন্টিবায়োটিক ওষুধ। এ ওষুধ বিশেষ করে সংক্রমণ আক্রান্ত রোগীদের জন্য ব্যবহার করা হয়। গনোরিয়াও একটি সংক্রমণ রোগ। এই কারণে গনোরিয়ায় অ্যাজিথ্রোমাইসিন দিনে একবার ব্যবহার করতে হয়।
গনোরিয়া রোগের ছবি:
গনোরিয়া যৌন রোগ। এই রোগটি ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চাই। তবে সঠিকভাবে চিকিৎসা করলে খুব সহজেই কোন রিয়া ভালো হয়ে যায়। নিম্নে গনোরিয়া রোগের ছবি তুলে ধরা হলো:
গনোরিয়ার হোমিও ঔষধ:
বর্তমান সময়ে গনোরিয়া রোগটি অনেকের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে। গনোরিয়ার হোমিও চিকিৎসা করলে খুব সহজে ভালো করা যায়। অনেকে গনোরিয়ার হোমিও ঔষধ এর নাম জানতে চাই। তবে হোমিও ওষুধের নাম খুব সহজে জানা যায় না।
কারণ হোমিও একটি ওষুধ বিভিন্ন কাজে ডাক্তাররা ব্যবহার করে থাকে। এই কারণে গনোরিয়া রোগের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী হোমিও চিকিৎসা নিতে হবে।
গনোরিয়া এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন:
গনোরিয়া রোগের সঠিক চিকিৎসা করলে খুব সহজে ভালো হয়ে যায়। বর্তমান সময়ে পরিচিত যৌন রোগ হল গনোরিয়া। গনোরিয়া এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন সেফট্রিয়াক্সন ১০০০ এম জি ইনজেকশন।
শেষ কথা: গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
বর্তমান সময়ে নারী-পুরুষ উভয়ের মধ্যে গনোরিয়া রোগ দেখা যায়। তবে সঠিকভাবে চলাফেরা করলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। যদি এই রোগের লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
তবে গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা করে তেমন কোন ফল পাওয়া যায় না। এ কারণে ডাক্তারের কাছে অবশ্যই যেতে হবে। লেখার মধ্যে কোন ভুল হলে ক্ষমা করে দেবেন। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।