শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষায় নিজের শক্তি ও দুর্বলতা নির্ণয়ের প্রয়োজন কেন

শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষায় নিজের শক্তি ও দুর্বলতা নির্ণয়ের প্রয়োজন কেন

মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হলে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। শারীরিকভাবে সুস্থ না থাকলে মন ভালো থাকে না। কারণ, শারীরিক সুস্থতায় সকল সুখের মূল। শরীরের কোন অংশের যদি সমস্যা হয় তাহলে আমাদের পুরো শরীর অকেজ হয়ে পড়ে।

এ কারণে, শারীরিক ভাবে শক্তিশালী থাকতে হবে। দুর্বল হলে শারীরিক অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। শরীরের সক্ষমতা পরীক্ষা নিজের শক্তি ও দুর্বলতা নির্ণয়ের প্রয়োজন কেন নিম্ন আলোচনা করা হলো।

সমাজে বসবাস করতে হলে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। সমাজে দুর্বল মানুষ টিকে থাকতে পারে না। এ কারণে, নিজেকে সব সময় সুস্থ রাখতে হবে। সুস্থ থাকতে হলে নিজে যত্ন নিতে হবে। তাহলে, শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করা সম্ভব।

শারীরিক শক্তি ও দুর্বলতা নির্ণয় প্রয়োজন কেন?

শারীরিক শক্তি ও দুর্বলতা নির্ণয় এর প্রয়োজন রয়েছে। কারণ, সুস্থ থাকতে হলে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। সুস্থ থাকতে হলে নিজের শরীর ঠিক আছে কিনা সেটা জানা প্রয়োজন। তাছাড়া, নিজেকে সুস্থ রাখা অসম্ভব। শারীরিকভাবে দুর্বল থাকলে বিভিন্ন ধরনের রোগ জীবাণু বাসা। 

এ কারণে, সব সময় শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হলে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। শারীরিক শক্তি বলতে বোঝানো হয় কাজ করার ক্ষমতাকে। যখন কাজ করার ক্ষমতা না থাকে তখন নিজেকে দুর্বল মনে হয়।

এই সমস্যা সমাধানের জন্য শারীরিক শক্তি ও দুর্বলতা নির্ণয় প্রয়োজন। তাহলে, কখন কোন ধরনের খাবার প্রয়োজন সেটা জানা যায়। শারীরিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত পুষ্টিকর প্রয়োজন। নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

শারীরিক সক্ষমতা কি?

শারীরিকভাবে সুস্থ থাকাকে শারীরিক সক্ষমতা বলে। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলে আমাদের মন ভাল থাকে। এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে কোন ধরনের অসুখ আমাদের আক্রমণ করতে পারে না। শারীরিক সক্ষমতা ঠিক রাখতে কিছু করণীয় রয়েছে। নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। 

আরও পড়ুনঃ কেন আমাদের শক্তি এবং দুর্বলতা জানা উচিত?

নিয়মিত শরীর চর্চা করার ফলে আমাদের মাংসপেশী সুস্থ থাকে। এবং মাংসপেশি চর্বি মুক্ত রাখে। যার ফলে শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে তাহলে শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা সম্ভব। পুষ্টিকর খাবার খেলে আমাদের শরীর সুস্থ রাখে। আর শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা কি শারীরিক সক্ষমতা বলা হয়।

শারীরিক অসুস্থতা ও মানসিক চাপ:

শারীরিক অসুস্থতা ও মানসিক চাপ একে অপরের পরিপূরক। শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকলে মানসিক চাপ বেড়ে যায়। কারণ, অসুস্থ থাকলে কোন কাজ ভালো লাগেনা। নিজের মধ্যে অন্যরকম অশান্তি কাজ করে। যার ফলে মানুষের চাপ বেড়ে যায়। শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকলে মানসিক ভাবে সুস্থ থাকা যায়।

অনেক ধরনের কাজ থাকলে মানসিক চাপ হয়। মানসিক চাপের কারণে আমাদের ব্রেনের উপর চাপ পড়ে। এ কারণে, আমাদের অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। মানসিক চাপে থাকলে ঠিকমতো খাওয়া এবং শরীর চর্চা করা হয় না। যার ফলে দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়তে হয়। 

এ কারণে, শারীরিক অসুস্থতা ও মানসিক চাপ একে অপরের পরিপূরক। শরীর ঠিক না থাকলে মন ভালো থাকে না আর মন ভালো না থাকলে শরীর ঠিক থাকে না।

মানসিক দূর চিন্তা হলে করণীয়:

মানুষের দুশ্চিন্তা আমাদের জীবনের একটা অংশ। সমাজের বসবাস করতে গেলে অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এ ধরনের সমস্যা থেকে দুশ্চিন্ত হয়। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মানসিক দুশ্চিন্তার ফলে হৃদ যন্ত্রের সমস্যা হয়। অনেক সময় হার্ট অ্যাটাকের মত সমস্যা হয়ে থাকে।

এ কারণে, সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে মানসিক দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির পথ বের করতে হবে। তা না হলে শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মানসিক দুশ্চিন্তা দূর করতে হলে সব সময় হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করতে হবে। কোন কাজ অনেক সময় ধরে করা যাবে না।

নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে এবং বন্ধু-বান্ধবের সাথে নিয়মিত আড্ডা দিতে হবে। এভাবে চলাফেরা করলে মানসিক দুশ্চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে রাখা সম্ভব। মানসিক দুশ্চিন্তা আমাদের অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন করে। ঠিক সময় ঠিক মতামত প্রকাশ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে হয়। এ কারণে সব সময় নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে।

শারীরিক দুর্বলতা কি?

শারীরিক দুর্বলতা বলতে বোঝানো হয় ভিতর থেকে দুর্বল। কাজ করার ক্ষমতা কম থাকা। শারীরিক ভাবে দুর্বল তখনই বলা হয় যখন কোন ব্যক্তির উচ্চতা অনুযায়ী ওজন কম থাকে। এবং কোন ধরনের কাজ করতে পারে না। এ সমস্যাটি সাধারণত হয়ে থাকে ভিটামিনের অভাবে।

শারীরিক ভাবে দুর্বল ব্যক্তিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। এ কারণে তাদের অসুখ বেশি হয়। শারীরিকভাবে দুর্বল ব্যক্তিরা অনেক সমস্যা হবে। ঠিকমতো কোন ধরনের খাবার খেতে পারে না। অনেক সময় খাবার খেলে পেটের সমস্যা হয়।

আরও পড়ুনঃ ব্যায়ামের উপকারিতা কি কি

এর সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। পুষ্টিকর খাবার সারলেক দুর্বলতা সারিয়ে তুলে। এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এবং শারীরিক ভাবে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

দুর্বলতা অনুভব হওয়ার কারণ?

আমাদের শরীরে কোন ধরনের সমস্যা থাকলে নিজেকে দুর্বল মনে হয়। যখন শরীরের পুষ্টির অভাব হয় তখন আমাদের দেহের কার্যক্ষমতা কমে যায়। ধরনের রোগ জীবাণু আমাদের শরীরে বাসা বাঁধে। দিন দিন শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। এগুলোই দুর্বলতা অনুভব হওয়ার কারণ। 

ওকে সমস্যা থেকে সমাধানের জন্য পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। এবং পাশাপাশি ব্যায়াম করতে হবে। তাহলে এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। এই সমস্যাটির বর্তমান সময়ে দিন দিন বেড়ে চলেছে। এই সমস্যাটি সাধারণত দেখা যায় ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী মানুষদের মধ্যে।

শারীরিকভাবে দুর্বল হলে করণীয়:

শারীরিকভাবে দুর্বল বলতে বোঝানো হয় কর্ম ক্ষমতাহীন মানুষদের। যারা সঠিকভাবে কোন কাজ করতে পারে না। বর্তমান সময়ে এই সমস্যাটি বেড়েই চলেছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে পুষ্টিকর খাবারের অভাব। পুষ্টিকর খাবার স্বাস্থ্য ঠিক রাখে এবং দুর্বলতা দূর করে। শারীরিক ভাবে দুর্বল হলে যা যা করনীয় নিম্ন তুলে ধরা হলো:

  1. সঠিক সময় খাবার খেতে হবে।
  2. খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে।
  3. প্রতিদিন কমপক্ষে একটি করে ফল খেতে হবে।
  4. পরিমাণ মতো পানি খেতে হবে।
  5. নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
  6. এবং মানসিক দুশ্চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে। 

মানসিক দুশ্চিন্তা মানুষকে দুর্বল করে ফেলে। এ কারণে, সব সময় হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করতে হবে। হাসিখুশি থাকলে হৃদপিণ্ড ভালো থাকে। যার ফলে হার্ট অ্যাটাকে সম্ভাবনা কমে যায়।

শেষ কথা: শরীরের সক্ষমতা পরীক্ষা নিজের শক্তি ও দুর্বলতা নির্ণয়ের প্রয়োজন কেন

শারীরিক সক্ষমতা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। শারীরিকভাবে শক্তিশালী থাকলে কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু দুর্বল শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। যার ফলে সব সময় অসুখ লেগেই থাকে। এই সমস্যা থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য নিয়মিত শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষা করতে হবে।

শারীরিক সক্ষমতা বলতে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকাকেই বোঝায়। শারীরিকভাবে সুস্থ না থাকলে মানসিকভাবে সুস্থ থাকা যায় না। স্বাস্থ্য ও মানসিকতা একে অপরের পরিপূরক। লেখার মধ্যে কোন সমস্যা থাকলে ক্ষমা করে দিবেন। সম্পূর্ণ লেখাটি পাওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

শেয়ার করুন

Similar Posts

  • বয়ঃসন্ধিকালের চাহিদা ও বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যা

    বয়ঃসন্ধিকালের চাহিদা ও বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যা বয়ঃসন্ধিকালের চাহিদা (Needs of Adolescence): বয়ঃসন্ধিকাল মানব জীবনের এক ক্রান্তিলগ্ন। এ সময় ছেলেমেয়েদের মধ্যে এত দ্রুত দৈহিক ও মানসিক পরিবর্তন আসে যে তারা দিশেহারা হয়ে পড়ে। আরও দেখুনঃ শিশুর দৈহিক বিকাশ কি? শিশুর দৈহিক বিকাশের বৈশিষ্ট্যসমূহ এইজন্য অনেকে এই সংকট কালকে জীবনের ঝড়ঝঞ্জার কাল বা উৎকণ্ঠা-দ্বন্দ্বের কাল বলে বর্ণনা করেছেন।…

    শেয়ার করুন
  • বয়ঃসন্ধিকাল কি, কেন এবং বয়ঃসন্ধিকালের বৈশিষ্ট্য

    বয়:সন্ধিকাল কি, কেন এবং বয়:সন্ধিকালের বৈশিষ্ট্য শৈশবের সোনালী সকাল পেরিয়ে প্রচন্ড চান্বল্য আর কৌতুহল ভরা ঝড়ঝন্জাপূর্ণ এক নতুন জীবনকালই হলো বয়:সন্ধিকাল। বয়:সন্ধিকালকে আর্নেস্ট জোনস (Jones) শৈশবের পুনরাবৃত্তি বলে বর্ণনা করেছেন। শৈশবে দৈহিক, মানসিক প্রক্ষোভগত ও যৌনমূলক বৈশিষ্ট্যবলির মধ্যে এক চরম অসংগতি ও বিশৃংখলা দেখা যায়। বাল্যকাল ও কৈশোরের আগমনে সে অসংগতি ও বিশৃংখলা ধীরে ধীরে…

    শেয়ার করুন
  • শারীরিক সক্ষমতা ব্যক্তিগত বিষয় কেন?

    শারীরিক সক্ষমতা ব্যক্তিগত বিষয় কেন?: শরীর মানুষের জন্য অন্যতম একটি কাঠামো যা আমাদের সৃষ্টিকর্তার দান। আর আমাদের যাবতীয় কার্যকলাপ সংঘটিত হয়ে থাকে বা করে থাকি আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংগ প্রত্যঙ্গের মাধ্যেমে। অনেকেই রয়েছেন যারা প্রশ্ন করে থাকেন যে শারীরিক সক্ষমতা ব্যক্তিগত বিষয় কেন? এই সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের প্রথমে জেনে নেওয়া দরকার যে শারীরিক সক্ষমতা কি?…

    শেয়ার করুন
  • সিজারের পর পেট কমানোর উপায়

    মা হওয়ার পর প্রতিটি নারীর শারীরিক পরিবর্তন ঘটে। কারণ এই সময় শরীরে প্রচুর পরিমাণ মেদ জমে। যার কারণে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়। শরীরের ওজন বৃদ্ধির কারণে ফিগার নষ্ট হয়ে যায়। পছন্দের কাপড় শরীরে ফিট হয় না। এসব নিয়ে অনেক নারী হতাশায় ভোগে। সিজারের পর পেট কমানোর উপায় রয়েছে। সিজার করার পর নারীদের পেটে মেদ জমে। সিজার করার পর ঠিকমতো…

    শেয়ার করুন
  • ডুমুর ফল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

    ডুমুর এমন একটি ফল যা বলতে গেলে অযত্নের মধ্যেই বড় হয়ে থাকে। আমাদের আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় ডুমুরের গাছ দেখা যায়। ডুমুর ফল খুবই উপকারী এবং সুস্থ রাখতে সহায়ক। যদিও এ ফলটিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় না,তবে এই ফলটি কতটা উপকারী এ বিষয়ে হয়তো আমাদের ধারণা নেই। চলুন তাহলে আজ এ বিষয় নিয়ে জানা যাক ডুমুর…

    শেয়ার করুন
  • বাচ্চাদের হেঁচকি বন্ধ করার উপায়

    আমরা নরমালী বাচ্চাদের নিয়ে একটু বেশি পরিমানেই চিন্তায় থাকি, তাঁর উপরে যখন আবার কোন রকম সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকি আমাদের চিন্তার শেষ থাকেনা। তেমনি যখন আমাদের নবজাতক বা বাচ্চাদের হেঁচকি উঠে তখন খুব চিন্তায় পড়ে যায় এবং বাচ্চাদের হেঁচকি বন্ধ করার উপায় খুজে বেড়ায়। হেঁচকি উঠা যে শুধুমাত্র যে বাচ্চাদের এমনটা কিন্তু না, বয়স্ক থেকে…

    শেয়ার করুন