একজন আদর্শ শিক্ষকের কি কি বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার
শিক্ষকের মনস্তত্ত্ব (Psychology of being a teacher):
শিক্ষক হল মানুষ গড়ার কারিগর। শিক্ষাদান একটি জটিল ও কঠিন কাজ। একাজটি যিনি করে থাকেন তিনি শিক্ষক। শিক্ষককে জীবন্ত উপাদান নিয়ে কাজ করতে হয় বলে শিক্ষকতা একটি উচু দরের শিল্প। শিক্ষক শুধু খবরের উৎস বা ভাণ্ডার নন, কিংবা প্রয়ােজনীয় তথ্য সংগ্রহকারী নন।
শিক্ষক শিশুর বন্ধু, পরিচালক ও যােগ্য উপদেষ্টা। শিক্ষার সর্বস্তরে শিক্ষকই হলেন শিক্ষাকর্মের মূল উৎস।একজন আদর্শ শিক্ষকের পক্ষেই সম্ভব শিক্ষার কাজ ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করা । রবীন্দ্রনাথের মতে, উত্তম শিক্ষক হবেন উত্তম ছাত্র।
শিক্ষকের ছাত্রত্ব গ্রহণে তার মনের তারুণ্য নষ্ট হতে পারে না, বরং তিনি সব সময়ই ছাত্রদের সুবিধা অসুবিধা ভালভাবে বুঝতে সক্ষম হবেন এবং এ কারণেই তিনি শিশুদের মনের একান্ত কাছাকাছি থাকবেন।
আরও দেখুনঃ শিক্ষার্থী হিসেবে শিক্ষক এবং শিক্ষক শিক্ষার্থী সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত
একজন ভাল শিক্ষকের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of effective teacher):
১.সুমধুর ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন:
২. সুস্বাস্থ্য:
৩. প্রেরণা:
৪. নবীন মানস:
৫. শিশুরঞ্জন মানসিকতাসম্পন্ন:
স্বার্থক শিক্ষক হবেন শিশুরঞ্জন মনের অধিকারী শিশুকে ভাল না বাসলে তিনি শিশুর সজীব মনের ইচ্ছা, অনিচ্ছা, স্বপ্ন-সাধ, আশা আকাক্ষা, আনন্দ বেদনা, অনুরাগ অভিমান সম্পর্কে জানতে পারবেন না । রবীন্দ্রনাথ বলেছেন “কী শিখাব, তা ভাববার কথা বটে; কিন্তু যাকে শিখাব তার সমস্ত মনটা কী করে পাওয়া যেতে পারে, সেটাও কম কথা নহে।”
শিক্ষকের সুমধুর মনােভঙ্গি, সহজ প্রসন্নতা, সাহায্যদানের সদিচ্ছা অতি সহজেই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে ঘিরে প্রীতিময় পরিমণ্ডল রচনা করে এবং এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্জন অনায়াস, আনন্দময় এবং অর্থবহ হয়ে ওঠে।
৬. মৌলিকতা:
৭. নমনীয়তা:
চিত্তের প্রসার ও নমনীয়তা শিক্ষককে বিচিত্র ধরনের মানুষের মধ্যেও বিবিধ পরিবেশে সামঞ্জস্য বিধানের দক্ষতা দান করে। এর উৎস হচ্ছে অহং শূন্যতা। মানিয়ে চলবার ক্ষমতার সঙ্গে অন্তরে যে সহানুভূতি, সহৃদয়তা এবং নমনীয়তার স্পর্শ থাকে, তার মূলে থাকে অহংশূন্যতার অকপট গুণটি।
সহ্যশক্তি, ক্ষমাগুণ এবং সহজাত প্রসন্নতা ব্যতীত গ্রহণশীলতার দুর্লভ ক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব নয়। এই ক্ষমতা শিক্ষককে একাধারে বিচিত্র এবং বিরূদ্ধ প্রকৃতির শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মীদের নিয়ে একই সাথে একই লক্ষ্যে চলবার সামর্থ্য যােগায়।
৮. চাহনী ও বাকশৈলী:
সুশিক্ষকের শিক্ষণকর্মের দুটি চমৎকার কলাকৌশল হলাে চাহনী ও বাকশৈলী। একটি অস্ফুট অপরটি ফুট। চোখের চাহনী অস্ফুট হলেও ক্ষেত্র বিশেষে এটি বাকভঙ্গিকেও গৌণ করে দিতে পারে।
বিস্ময়কর শব্দ চেতনা, প্রচুর শব্দ ভাণ্ডার বাক চাতুর্য এবং শব্দ ও বাক্য প্রয়ােগে প্রয়ােজনানুগ সংকোচন প্রসারণ, উচ্চ- নিচ স্বর ও সংযম শিক্ষকের প্রকাশ ভঙ্গিকে সংবেদনশীল, মনােজ্ঞ ও অর্থবহ করে তােলে।
৯. রসিকতা বােধ:
১০. দৃঢ় মানসিকতা:
১১. উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা:
১২. মার্জিত পােষাক:
আদর্শবান শিক্ষকের ব্যক্তিত্বের ভূষণ হলাে সুমার্জিত আচার আচরণ এবং পরিপাটি পােশাক। আড়ম্বরের বাহুল্য আসল মানুষের ব্যক্তিত্বকে কৃত্রিম আবরণে ঢেকে রাখে। শিক্ষকের কাজ সহজকে নিয়ে সহজ হওয়ায়। তার জীবনাদর্শ সহজ জীবন ও মহৎ ভাবনা হওয়াই কাম্য।
উক্ত গুণগুলি শিক্ষক তার সহজাত এবং অর্জিত জ্ঞান অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে আয়ত্ত করবেন। নিজ পেশায় অনুরাগ ও অধিকারে ব্রতী শিক্ষক অনেক গুণই অনুশীলনের মাধ্যমে অর্জন করতে পারেন। এছাড়াও নিম্নবর্ণিত বৈশিষ্ট্যগুলি অর্জনে তার ধী, মেধা, প্রবণতা এবং নৈপুণ্যের প্রয়ােগ করবেন। যেমনঃ
১. নেতৃত্বদান:
২. উদ্যমশীলতা:
৩. সামাজিকতাবােধ:
৪.মুদ্রাদোষমুক্ত:
৫.অধ্যয়নশীল:
৬. শিখন পদ্ধতি সংক্রান্ত জ্ঞান:
৭. আত্মমূল্যায়ন:
অবিরত আত্মসমীক্ষা ও আত্মমূল্যায়ন করা নিজ পেশায় নিষ্ঠ শিক্ষকের রক্ষাকবচ। মানুষ দোষমুক্ত নয়, সমালােচনা বহির্ভূত নয়। আত্ম সমালােচনা নিজের চিন্তা ও কর্মের পথকে পরিশীলিত করে আত্মমর্যাদা রক্ষা করতে সাহায্য করে।
শিক্ষক হিসেবে সফল তথা শিক্ষার্থীদের সার্বিক বিকাশ নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষককে উপরােক্ত বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলির চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে।
শেষকথাঃ একজন আদর্শ শিক্ষকের কি কি বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার
একজন আদর্শ শিক্ষকের ভেতরে যেসমস্ত বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার আশা করি উপরের আলোচনা যদি মনযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে সম্পূর্ণ বিষয়টি ক্লিয়ার হয়ে গেছে। আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে চেষ্টা করেছি যে একজন আদর্শ শিক্ষকের কি কি বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার সেই সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা দেবার।
এছাড়াও যদি আপনাদের কোন মতামত থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনি চাইলে আমাদের এই পোস্ট গুলো আপনার বন্ধু মহলে শেয়ার করে সকলকেই জানার সুযোগ করে দিতে পারেন এবং নতুন নতুন তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন।