আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য সকল ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন। বিভিন্ন ফলে বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন বিদ্যমান। সুতরাং দেশী-বিদেশী সকল প্রকার ফল খাওয়া মানুষের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
সকল ধরনের ফলমূল মানুষের শরীরের জন্য সুফল বয়ে আনে। ফলমূলের ভিটামিন মানুষের শরীরকে সুঠাম করতে সহায়তা করে। ফলমূল সাধারনত টাটকা খাওয়া ভাল। টাটকা ফলমূল মানুষের শরীরের জন্য আরও বেশি উপকারী।
নিম্নে চিত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার ফলমূলের উপকারীতা সম্পর্কে আলোচনা করা হল:
কাঁঠাল: কাঁঠাল হল আমাদের জাতীয় ফল। কাঁঠাল জাতীয় ফল হওয়ার পিছনে অনেক কারন রয়েছে। কাঁঠাল জাতীয় ফল হওয়ার প্রথম এবং প্রধান কারন হল, কাঁঠালের মধ্যে ফলের সকল প্রকার পুষ্টিগুন বিদ্যমান। কাঁঠাল হল রসালো ফল।
কাঠালে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন সোডিয়াম ও জিঙ্কসহ বিভিন্ন ভিটামিন বিদ্যমান। কাঠালে আছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। চিত্রে কাঁঠালের আংশিক উপকারীতা দেওয়া হল।
চিত্র: কাঁঠাল।
তরমুজ: তরমুজ হল একটি পানিবহুল ফল। তরমুজ মানব দেহের অনেক উপকার সাধন করে থাকে। তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমানে বিটা ক্যারোটিন ও ম্যাংগানিজ যা মানুষের শরীরের ত্বককে মসৃন করে। তরমুজ ব্রনের সমস্যা দূর করতেও সহায়তা করে। এছাড়াও তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি, যা মানুষের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
তরমুজ হল গ্রীষ্মকালীন ফল। চৈত্রের প্রখর তাপে তৃষ্ঞা মেটাতে তরমুজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমানে অ্যামাইনো এসিড ও অ্যান্টিঅক্সিজেন যা মানুষের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। চিত্রে তরমুজের আংশিক উপকারীতা দেওয়া হল।
চিত্র: তরমুজের উপকারীতা।
পেয়ারা: পেয়ারা মানুষের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি ফল। পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি, যা শরীরের ব্যাক্টেরিয়া ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীরকে নিরাপদ রাখে। পেয়রাতে আরও রয়েছে ভিটামিন-এ, যা চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিসহ চোখকে রাতকানা রোগ থেকে বাঁচায়।
এতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও লাইকোপেন যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই দরকারী। পেয়ারা ফ্রীজের ঠান্ড স্থানে রেখে সংরক্ষন করা যায়। চিত্রে পেয়ারার আংশিক উপকারীতা দেওয়া হল।
চিত্র: পেয়ারার উপকারীতা
পেঁপে: পেঁপে হল একটি সু-পরিচিত ফল। যা আমরা সবজি এবং ফল দুই হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,যা মানুষের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। পেঁপে সাধারনত কাঁচা-পাঁকা দু অবস্থাতেই খাওয়া হয়। পেঁপে বেশিদিন সংরক্ষন করা সম্ভব হয় না। চিত্রে পেঁপের আংশিক উপকারীতা দেওয়া হল।
চিত্র: পেঁপের উপকারীতা
নারিকেল: নারিকেল হল একটি সু-পরিচিত ফল। নারিকেল শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। নারিকেল খুব অল্প সময়ের মধ্যে শরীরে শক্তি যোগাতে সহায়তা করে। নারিকেল খেলে সাধারনত ক্ষুধা কম লাগে ফলে শরীরের ওজন কমে। দাঁত ও হাড়ের গঠনে নারিকেল বিরাট ভূমিকা পালন করে থাকে। ঠান্ডা ও শুষ্ক স্থানে নারিকেল দীর্ঘদিন যাবত সংরক্ষন করা যায়। চিত্রে নারিকেলের আংশিক উপকারীতা দেওয়া হল।
চিত্র: নারিকেল।
কলা: কলা হল আমাদের সবার সু-পরিচিত একটি ফল। কলা খেলে শরীরের শক্তি বাড়ে। অন্যান্য ফলের চেয়ে কলায় শর্করার পরিমান অনেক বেশি। কলায় শর্করা ছাড়াও আরও অনেক ভিটামিন রয়েছে। কলায় রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম,ভিটামিন বি ও সি। যা শরীরের জন্য খুবই দরকারী।কলায় পর্যাপ্ত পরিমানে ফাইবার থাকায় এটি হজমে সাহায্য করে। চিত্রে কলার আংশিক উপকারীতা দেওয়া হল।
চিত্র: কলার উপকারীতা।
লেবু: লেবু হল আমাদের একটি সু-পরিচিত ফল। লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন-সি। লেবু খেলে মানুষের মুখের রুচি বাড়ে। লেবু এবং মধু একসঙ্গে হালকা গরম করে পানি দিয়ে খেলে মেটাবলিজম সক্রিয় হয়। ফলে মানুষের শরীরের ওজন কমে। লেবু ফলটি আকারে ছোট হলেও এর উপকারীতা প্রচুর। এটি পুষ্টিগুনে ভরপুর একটি ফল।
লেবুর অনেক উপকারীতা রয়েছে যা বলে শেষ করা অসম্ভব। খবারের সাথে লেবু খেলে মানুষের বিপাক সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হয়। লেবুতে রয়েছে ভিটামিন -সি, যা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। সাধারন ঠান্ডা-কাশি জ্বর লেবু খেলে উপষম হয়।
চিত্র: লেবুর উপকারীতা।
জাম: জাম আমাদের সবার পরিচিত একটি ফল। জাম সবার জনপ্রিয় একটি ফল। জামে রয়েছে প্রচুর পরিমানে পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, লৌহ এবং ভিটামিন -সি। হাড় ক্ষয় হয়ে যাওয়া এবং বয়ষ্ক মানুষের জন্য জাম খুবই উপকারী। জামে রয়েছে ভিটামিন -সি এবং আরও অনেক পুষ্টিগুন। জামের উপকারীতা বলে শেষ করা অসম্ভব। জামের বহুবিধ উপকারীতা রয়েছে। চিত্রে জামের আংশিক উপকারীতা দেওয়া হল।
চিত্রে: জামের উপকারীতা।
কামরাঙ্গা: কামরাঙ্গা হল ভিটামিন-সি এর খনি। কামরাঙ্গার পাতা ও কচি ফলে আছে ট্যানিন, যা রক্ত জমাট বাধাতে সহায়তা করে। কামরাঙ্গার ভর্তা খেলে ঠান্ডাজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। দীর্ঘদিনের জমাট সর্দি বের করে দিয়ে কাশি উপশম করে।
চিত্র: কামরাঙ্গার উপকারীতা
ডালিম:ডালিম হল অনেক উপকারী একটি ফল। ডালিম পুষ্টিতে ভরপুর একটি ফল। যা শরীরের অনেক উপকার করে থাকে। ডালিম খেলে শক্তি বাড়ে। ডালিম স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশাল ভুমিকা পালন করে থাকে। চিত্রে ডালিমের আংশিক উপকারীতা দেওয়া হল।
চিত্র: ডালিমের উপকারীতা।
আপেল: আপেলের আমাদের সবার পরিচিত একটি ফল। আপেলের উপকারীতা সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। আপেল রোগী থেকে শুরু করে সুস্থ মানুষ সবার একটি প্রিয় ফল। আপেল পছন্দ করে না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। আপেল দীর্ঘদিন যাবত সংরক্ষন করা যায়। চিত্রে আপেলের আংশিক উপকারীতা দেওয়া হল।
চিত্র: আপেলের উপকারীতা।
আঙ্গুর: আঙ্গুর ফলের চমৎকার উপকারীতা আছে। আঙ্গুর ফলে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। আঙ্গুরে ভিটামিন-সি ও পর্যাপ্ত পরিমানে রয়েছে। আঙ্গুর ঠান্ড এবং শুষ্ক স্থানে দীর্ঘদিন পর্যন্ত সংরক্ষন করা যায়। চিত্রে আঙ্গুর ফলের আংশিক উপকারীতা দেওয়া হল।
চিত্র: আঙ্গুর ফলের উপকারীতা।
আনারস: আনারস হল একটি সু-পরিচিত ফল। আমাদের হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে আনারসের জুড়ি নেই। সাধারনত জ্বরে আনারস অনেক উপকারী। আনারসে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস বিদ্যমান। আনারস কৃত্রিম উপায়ে অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষন করা যায়। চিত্রে আনারসের আংশিক উপকারীতা দেওয়া হল।
চিত্র: আনারসের উপকারীতা।
আমড়া: আমড়া অনেক মুখরোচক একটি ফল। আমড়া খেলে মুখের রুচি বাড়ে। আমড়াতে বিদ্যমান পেকটিন জাতীয় ফাইবার বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে। আমড়া খেলে মুখের অরুচিভাব দূর হয় এবং ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়। ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম দাঁত ও মাড়ির বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে এবং শরীরের পেশী গঠনে সহায়তা করে।
চিত্র: আমড়ার উপকারীতা।
আমলকি: আমলকী চুলের টনিক হিসেবে কাজ করে এবং চুলের পরিচর্যার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি কেবল চুলের গোড়া মজবুত করে তা নয়, এটি চুলের বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। এক গ্লাস দুধ বা পানির মধ্যে আমলকী গুঁড়ো ও সামান্য চিনি মিশিয়ে দিনে দু’বার খেতে পারেন। এ্যাসিডেটের সমস্যা কম রাখতে সাহায্য করবে। ব্রঙ্কাইটিস ও এ্যাজমার জন্য আমলকীর জুস উপকারী। চিত্রে আমলকির আংশিক উপকারীতা দেওয়া হল।
চিত্র: আমলকির উপকারীতা।
আম:আমের উপকারিতা গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে আমের পুষ্টি উপাদান। আমে আছে প্রচুর পরিমাণে এনজাইম এটা আমাদের শরীরের প্রোটিন অণুগুলো ভেঙ্গে ফেলতে সাহায্য করে যা হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। ওজন কমাতে চাইলে কাঁচা আম খেতে পারেন।
হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।শরীর ফিট রাখে, দেহের শক্তি বাড়ায় এবং শরীরের ক্ষয়রোধ করে।উচ্চ পরিমাণ প্রোটিন এর উপস্থিতি যা জীবাণু থেকে দেহকে সুরক্ষা দেয়।পুরুষের যৌনশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।আম পুরুষের শুক্রাণুর গুণগত মানকে ভালো রাখে।
লিভারের সমস্যায় কাঁচা আম বেশ উপকারী।সন্তান সম্ভবা নারীর আয়রনের ঘাটতি পূরণে আম বেশি উপকারী।কাঁচা আম কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য খেতে পারেন।
চিত্র: আমের উপকারীতা।
উপরের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যে, ফলমূল আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। নিয়মিত ফলমূল খেলে শরীর অনেক ভাল থাকে। সু-স্বাস্থ্য গঠনে ফলমূল গ্রহনের বিকল্প নাই। ফলমূল আমাদের শরীরকে সুঠাম করতে সাহায্য করে থাকে।
আরো জানুন,
বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজির উপকারীতা ও সংরক্ষনের উপায়।
দেহে খাদ্য উপাদানের অভাবের ফলে কি কি রোগ হয় আহারে কোনও একটি খাদ্য উপাদান বহুদিন ধরে বাদ পড়লে সেই উপাদানের অভাবে শরীরে রােগের লক্ষণ দেখা দেয়। নানারকম লক্ষণ হতে অভাবজনিত রােগ ধরা পড়ে। অভাব মারাত্মক রকমের হলে রােগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়। নিম্নে দেহে খাদ্য উপাদানের অভাবের ফলে কি কি রোগ হয় তা আলোচনা করা হল:…
শারীরিকভাবে সুস্থ ও সুস্থ থাকার অবস্থাকে কি বলে? শারীরিক সুস্থ বলতে আমরা বুঝি সুস্থ থাকা। সুস্থ থাকার প্রথম সত্ত হচ্ছে শারীরিকভাবে সুস্থতা। শারীরিকভাবে সুস্থ না থাকলে মন ভালো থাকেনা। আর মন ভাল না থাকলে কোন কাজই ভালো লাগেনা। এ কারণে সুস্থ ভাবে বসবাস করতে হলে অবশ্যই শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকতে হবে। শারীরিকভাবে সুস্থ ও সুস্থ থাকার অবস্থাকে কি বলে…
বাচ্চাদের জন্য কোন সাবান ভালো সেটা আমরা অনেকেই জানিনা। এটা জানা আমাদের সকলের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। কারণ,বাচ্চা বা শিশুদের ত্বক অনেক নরম ও মসৃণ হয়ে থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ত্বকের থেকে শিশুদের ত্বকে অনেক পার্থক্য রয়েছে। এই কারণে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সাবান শিশুরা ব্যবহার করতে পারবে না। কারণ বয়স্ক মানুষের শ্রাবনে প্রচুর পরিমাণ ক্ষার থাকে। এই কারণে…
ডেঙ্গু জ্বর একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এই রোগটি ছড়ায় এডিস মশায় কামড়ালে। সাধারণত জুলাই থেকে অক্টোবর এই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরের হয়। বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বর অনেক ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ডেঙ্গু জ্বরে প্রতি বছর অনেক মানুষের মৃত্যু হয়ে থাকে। ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ, ডেঙ্গু রোগ কেন হয়? এই সম্পর্কে ধারণা থাকা সকলের প্রয়োজন। কারণ, দিন দিন ডেঙ্গু রোগের প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই কারণে…
গ্রীষ্মকালীন ফল তরমুজ। চৈত্রের খর তাপে তৃষ্ণা মেটাতে তরমুজের জুড়ি মেলা ভার। সবুজ মোটা খোসাযুক্ত গোল বৃত্তে আবৃত লাল রসালো ফল এ তরমুজ। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন যেমন আছে এ ফলে তেমনি আছে মিনারেল, অ্যামাইনো অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিজেনের মতো নানা উপাদান। এ ছাড়া তরমুজ শরীরে পানির অপূর্ণতা পূরণেও বেশ সহায়ক। তাই গরমে ঘামের পরিমাণ বেড়ে গেলে আর…
আপনারা যারা অনেকেই রয়েছেন বিভিন্ন জায়গাতে নিজেদের মেধাশক্তিকে বিকশিত করার জন্য বিভিন্ন মাধ্যম খুজে বেড়ান বা মেধাশক্তি বাড়ানোর উপায় গুলো কী কী? এই নিয়ে প্রশ্ন করেন তাদের জন্য আজকে আমরা এই পোস্ট নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম। আজকে আমরা আলোচনা করবো যে আপনি চাইলে কিভাবে মেধাশক্তি বাড়ানোর উপায়গুলো কী কী? সেগুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন।সূচিপত্রঃ তাই চলুন দেরি না…