মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা
| |

মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা

মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমাদের সকলের জানা দরকার। কেননা আমাদের সারাদিনের খাবার তালিকায় মসুর ডাল থাকেই। এই কারণে আমাদের জানা দরকার ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা। মসুর ডাল একটি পুষ্টিকর খাবার।

মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন থাকে যা মাংসের চাহিদা পূরণ করে। মসুর ডালের অনেক ধরনের খাদ্যের উপাদান থাকে। মসুর ডাল শরীরের কলেজ কলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

মসুর ডাল মানবদেহের  চিনির পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে। মসুর ডাল উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।  নিম্নে মসুর ডালের উপকারিতা  ও অপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হলো।

মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা

আজকে আমরা এই পোস্টের মাধ্যেমে বিস্তারিত জেনে নিবো যে মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা সমূহ কি কি সেই সম্পর্কে। তাই চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক সেই মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা সমূহ  সম্পর্কে।

মসুর ডালের উপকারিতা

 মসুর ডাল একটি পুষ্টিকর খাবার। মাছে ভাতে বাঙালি হলেও খাবার তালিকায় ডাল থাকেই। মসুর ডাল খেলে অনেক ধরনের উপকারিতা রয়েছে। নিম্নে মসুর ডালের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হলো।

মসুর ডালের পুষ্টি উপাদান । মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা

মসুর ডালে প্রায় সকল ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। মসুর ডালের যেসব খাদ্য উপাদান থাকে সেগুলো হলো প্রোটিন, ফাইবার, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, শর্করা, ভিটামিন বি, জিংক, চর্বি, মলিবডেনাম, মোটা কার্বোহাইড্রেট  ও অল্প পরিমাণ  সেলেনিয়াম। মসুর ডালের সাধারণত এসব উপাদান থাকে।

মসুর ডাল শক্তি বৃদ্ধি করে

মসুর ডাল শক্তি বৃদ্ধিতে অনেক ভূমিকা রাখে। কেননা মসুর ডালের প্রচুর পরিমাণ ফাইবার, প্রোটিন এবং শর্করা থাকে। প্রোটিন, ফাইবার ও শর্করা নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে। শরীরের নতুন নতুন  কোষ বেশি হলেই শক্তি বৃদ্ধি পায়।

আরও পড়ুনঃ খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা

এই কারণে মসুর ডাল শক্তি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হলে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় মুসুর ডাল রাখতে হবে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে । মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা

কোন বিশেষজ্ঞের কাছে  গিয়ে আপনি যদি ওজন কমানোর জন্য খাদ্য তালিকা চান তাহলে সেখানে অবশ্যই মসুর ডাল থাকবে। কেননা মসুর ডালে যে পরিমাণ পুষ্টি উপাদান থাকে সেটা স্থায়ী না। এবং মসুর ডালে চর্বির পরিমাণ কম। এ কারণে শরীরে চর্বি জমে না। শরীরে সকল পুষ্টি উপাদান থাকে এই কারণে শরীরের ওজন ঠিক থাকে।

শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে

মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণ শর্করা থাকে। বাঙালির ৬০ পার্সেন্ট শর্করার ঘাটতি  পূরণ করে মসুর ডাল। কেননা মসুর ডালের দাম তুলনামূলক কম। এই কারণে সকল পেশার মানুষ ডাল খেতে পারে। কম খরচে শর্করার উৎস হাতের কাজ পাওয়া যায়।

শর্করা মানবদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। প্রতিদিন  খাবার তালিকায় মসুর ডাল থাকা খুব জরুরী। সকল ধরনের খাদ্য উপাদান মসুর ডালে পাওয়া যায়। আমাদের সকল ক্লান্তি দূর হয়ে যায় মসুর ডাল খাওয়ার মাধ্যমে।

কোলেস্টরেল এর মাথা ঠিক  রাখে । মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা

মসুর ডাল অত্যান্ত স্বাস্থ্যকর, চর্বি কম কার্যত শর্করা বিহীন এবং ফাইবার বেশি থাকে। মসুর ডাল খাওয়ার মাধ্যমে কলেস্টেরলের উপাদান ঠিক থাকে। যাদের শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি রয়েছে মসুর ডাল খাওয়ার মাধ্যমে এটা নিয়ন্ত্রণ থাকে।

সকল ধরনের খাদ্য  উপাদান থাকার কারণে কোলেস্টেরলের ঠিক থাকে। যাদের এই সমস্যা রয়েছে তাদের প্রচুর পড়ে আর ওষুধটা খেতে হবে।

ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে

ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে মসুর ডালের  ভূমিকা অপরিসীম। মসুর ডালে খাদ্যের সকল ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এ কারণে শরীর সুস্থ থাকে এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়। ত্বকের সৌন্দর্যে মসুর ডাল অনেক ভাবে ব্যবহার করা যায়।

অনেকে মুসুর ডাল শিলনোড়া বেটে পেস্ট তৈরি করে এবং তার সাথে মধুবা গোলাপ জল ব্যবহার করে ক্রিম তৈরি করে। এই ক্রিম ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় এবং কোন দাগ থাকলে সেটা দূর হয়। ত্বকের তেলতেলে ভাব দূর হয়ে যায়। সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে মসুর ডালের ভূমিকা অপরিসীম।

রূপচর্চায় ব্যবহার । মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা

রূপচর্চায় মসুর ডাল অনেক ভাবে ব্যবহার হয়। অনেকে এটা শরীরে ব্যবহার করে। অনেকে  মুখে ব্যবহার করে।  ব্যবহার করার নিয়ম রয়েছে অনেক ধরনের। মসুর ডাল মুখে ব্যবহার করার জন্য ভালো করে বেটে নিতে হবে। এবং তার সাথে লেবুর রস দিয়ে  পেস্ট তৈরি করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ আয়রন ট্যাবলেট এর উপকারিতা

এটা শরীরে ব্যবহার করলে শরীরের বিভিন্ন ধরনের  চুলকানি দূর হয়। মুখে ব্যবহার করতে হলেও থেকে কিভাবে ডাল বেটে নিতে হবে এবং তার সাথে গোলাপজল বা মধু দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এটা মুখে দেওয়ার পর কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে।

ফেসবুকে শুকানোর পর সেটা ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। এইভাবে ব্যবহারের ফলে মুখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় এবং বিভিন্ন কালো দাগ দূর হয়।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

মসুর ডাল নিয়মিত খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য সাধারণত ফাইবারের অভাবে হয়। যেসব খাবারে ফাইবারে পরিমাণ কম থাকে সেসব খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। ডালে প্রচুর পরিমাণ  ফাইবার থাকে। এই কারণে মসুর ডাল  খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। মসুর ডাল প্রাণিজ আমিষের ঘাটতি পূরণ করে।

মসুর ডালের অপকারিতা । মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা

মসুর ডালের উপকারিতা ও রয়েছে। কারণ প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি রয়েছে। অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে। পুষ্টিকর খাবার বেশি পরিমাণ খেলে পাকতন কার্যক্রম বন্ধ করে। যার ফলে পেটের সমস্যা হয়। সকল ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকার কারণে এটা বেশি খাওয়ার ফলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়।

সকল খাদ্য উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। পুষ্টিকর খাবার বেশি খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর। মানবদেহে যে পরিমাণ পুষ্টি দরকার তার চেয়ে বেশি গ্রহণ করলে শরীরে অনেক ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। যেমন ওজন বেড়ে যাওয়া।

আরও পড়ুনঃ সয়াবিন তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা

আমরা যে পরিমাণ পুষ্টি গ্রহণ করব সে পরিমাণ পুষ্টি আমাদের কাজে লাগাতে হবে। খাবার খাওয়ার পর শুধু ঘুমিয়ে থাকলে আমাদের শরীরে অনেক সমস্যা হবে। এই কারণে সকল খাবার পরিমাণ মধু খেতে হবে।

আমাদের খাদ্য তালিকায় দিনের বেলায় মসুর ডাল শুধু রাখতে হবে। তাহলে আমরা মসুর ডালের সঠিক উপাদান গুলো পাবো। পুষ্টিকর খাবার বলে শুধু ডাল  খেলেই  আমাদের চলবে না। কারণ অন্যান্য  খাবারেও অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এই কারণে সকল ধরনের খাবার আমাদের খেতে হবে।

উপসংহারঃ মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা

মসুর ডালের অনেক ধরনের উপকারিতা রয়েছে। মসুর ডাল আমাদের মানবদেহের জন্য অনেক উপকারী। তাই আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখা জরুরি।

আমার এই লেখাটি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে একটা লাইক দিয়ে আমাদের উৎসাহ দিবেন। পুরো লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

শেয়ার করুন

Similar Posts

  • সয়াবিন তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা

    সয়াবিন তেল হল উদ্ভিজ্জ তেল, যা সয়াবিন বীজ থেকে উৎপন্ন হয়। এই তেল ব্যবহার করা হয় রান্নার কাজে। স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য প্রয়োজন খাদ্য। খাওয়ারকে সুস্বাদু করতে খাবারে ভোজ্য তেল ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশে প্রায় সকল ধরনের রান্নায় সয়াবিন তেল ব্যবহার করা হয়। অতিরিক্ত সয়াবিন তেল ব্যবহার করলে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সয়াবিন তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা…

    শেয়ার করুন
  • পেটে ইনফেকশন হলে করণীয়

    সাধারণত খাবার আর পানি থেকে পেটের ইনজেকশন হয়ে থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে ভাইরাল গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিসও বলা হয়। পেটের ইনফেকশন প্রায় সকলেরই হয়ে থাকে। বিশেষ করে এই সমস্যাটি হয় গরমের সময়। পেটে ইনফেকশন হলে পেট ব্যথা, পেটে জ্বালা এছাড়াও একাধিক উপসর্গ দেখা দেয়। এর সাথে খাবারের প্রতি অনিহা আসে। বমি বমি ভাব হয় খাবার হজম হয় না। সব সময়…

    শেয়ার করুন
  • সবজি শুকিয়ে সংরক্ষনের উত্তম উপায়সমূহ

    সবজি শুকিয়ে সংরক্ষনের উত্তম উপায়সমূহ ১. পেয়াজ ও রসুন শুকানাে: পেঁয়াজের দুদিক সামান্য কেটে ফেলে খােসা ছাড়াও। ৫ মি. মি. পুরু স্লাইস করে কাটতে হবে। চড়া রােদে পরিষ্কার কাপড়ের উপর ছড়িয়ে দাও। মচমচে করে শুকাও। রসুনের কোষ দু’টুকরা করে পেয়াজের মত শুকাও। এপ্রিল মাসের ঝড় বৃষ্টি আরম্ভ হওয়ার আগে সংরক্ষণ করতে হবে। ২. গাজর শুকানাে:…

    শেয়ার করুন
  • গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের সতর্কতা / ৩ মাসের গর্ভবতী লক্ষণ

    গর্ভধারণ একজন মেয়ের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময় আনন্দ, উদ্বেগ, শঙ্কা ইত্যাদি নানা অনুভূতি মিলে আচ্ছন্ন থাকে গর্ভবতী মায়ের মন। প্রথমদিকে কিছু বোঝা না গেলেও প্রথম তিন মাস সকল  গর্ভবতী মায়ের কাছে ভীষণ অন্যরকম বলে মনে হয়। নতুন প্রাণীর আগমনের সংবাদ আনন্দিত করে তুলে নতুন মায়ের জীবন। গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের সতর্কতা / ৩…

    শেয়ার করুন
  • শীতকালীন শাক সবজির উপকারীতা

    শীতকালীন শাক-সবজির উপকারীতা খাদ্যের উপাদানের মধ্যে ভিটামিন ও মিনারেলসের অন্যতম উৎস হল শাক-সবজি ও ফলমূল। মূলত ভিটামিন ও মিনারেলস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে এবং আমাদের শরীরকে খাদ্যের শর্করা, আমিষ ও চর্বির ব্যবহারে সাহায্য করে। ছয় ঋতুর দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। শীতকাল মানেই এক অন্য অনুভূতি। বছরের প্রায় সবসময় কমবেশি শাক-সবজি ও ফলমূল…

    শেয়ার করুন
  • গরুর খামার করতে ব্যাংক লোন

    বর্তমানে দেশের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ গরুর খামার করছে। কারণ গরুর খাবার করে অবসরে অনেক টাকা আয় করা সম্ভব। তবে গরুর খাবার করতে প্রচুর পরিমাণ টাকার প্রয়োজন পরে। গরুর খাবার তৈরি করার জন্য ঘর লাগে। গরু ক্রয় করতে হয়। এইজন্য সবাই গরুর খামার করতে পারেনা।ভ বর্তমানে গরুর খামার করতে ব্যাংক লোন দিচ্ছে। এতে করে প্রায় সকল শ্রেণীর মানুষ গরু-ছাগলের খামার তৈরি করতে…

    শেয়ার করুন