পৃথিবীর সেরা ফুটবলারের জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশে
পৃথিবীর সেরা ফুটবলারের জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশে
শুরুতেই একটি প্রবাদ বাক্য মনে পড়ে গেল, আসলে আমরা বাঙ্গালীরা নিজেকে চিনিনা এবং নিজেকে জানিনা। আর নিজেকে কখনও চেনার চেষ্ঠাও করি না। সক্রেটিসের সূদুরপ্রসারী উক্তি, ”Know thy selves” অর্থ্যাৎ “নিজেকে জানো”
বহু দিন ধ’রে বহু ক্রোশ দূরে
বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে
দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা,
দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শিষের উপরে
একটি শিশিরবিন্দু।
![পৃথিবীর সেরা ফুটবলারের জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশে 2 পৃথিবীর সেরা ফুটবলার](https://fulkoliblog.com/wp-content/uploads/2021/06/PicsArt_06-24-11.09.52-1.webp)
পৃথিবীর সেরা ফুটবলারের জীবন ইতিহাস:
পেলে, ম্যারাডোনা নাকি সামাদ ? ফুটবল জগৎ বলতেই উঠে আসে কিছু বাঘা বাঘা খেলোয়াড়ের নাম , পেলে, ম্যারাডোনা, মেসি , রোনাল্ডো, নেইমারদের কথা ৷ কিন্তু আমরা বাঙালীরা কী জানি ? আমাদের অতীত ফুটবলের কথা ৷ যেখানে ছিল আমাদের সামাদ ৷
আমরা ক-জনিই বা তার নাম জানি ক-জনিই বা চিনি তাকে, যে ছিল ফুটবলের এক সোনালী অতীত এক অমূল্য রত্ন। চলুন তাহলে জেনে নেয় আমাদের কিংবদন্তীকে ৷ প্রায় ৮০ বছর আগের ঘটনা বলছি আপনাদের। পেলে-ম্যারাডোনার জন্ম হয়নি তখনও, ফুটবলবিশ্ব তখনও তাদের পায়নি।
কথিত আছে যে, সর্ব ভারতীয় ফুটবল দল লন্ডনে গেছে লন্ডনের ফুটবল দলের বিরুদ্ধে ফুটবল খেলার জন্য, সে দলে রয়েছেন সামাদ নামে একজন ফুটবলার। লন্ডনীরা প্রথমে ভারতীয় দলের সঙ্গে খেলতে চায় নি, নাক সিঁটকিয়েছে, পাত্তা দেয়নি ।
পড়ে যখন শুনলো সামাদ নামের একজন ভারতীয় খেলোয়ার নাকি চ্যালেঞ্জ দিয়েছে যে, সে গুণে গুণে একহালি গোল করবে লন্ডনীদের বিরুদ্ধে, তখন সেই খেলোয়ারটিকে নাকানি চুবানী খাওয়ানোর উদ্দ্যশে তারা খেলতে রাজী হয়। খেলা শুরু হয়েছে, মাঠ লোকে লোকারন্য। সামাদ নামের সেই নেটিভ ইন্ডিয়ানটি কিরকম নাস্তানাবুদ হয় তা দেখার জন্য দলে দলে সাহেব মেমরা মাঠে হাজির হয়েছে।
আরও দেখুনঃ আমাদের জিডিপি ছিল পুরো ইউরোপের চেয়েও বেশি
কিন্তু সামাদ সাহেবের খেলায় তেমন মনোযোগ নেই, তিনি এক পোয়া বাদাম কিনে কুট কুট করে তা চিবুচ্ছেন। সাহেবদের দল ভারতীয় দলকে কোনঠাসা করে ফেলেছে, কিন্তু তবুও সামাদ সাহেবের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। তখন দলের সবাই সামাদ সাহেবকে অনেক কাকুতি মিনতি করতে লাগলো, অবশেষে সামাদ সাহেব বল ধরলেন। একে একে সবাইকে কাটিয়ে গোলে শট নিলেন, কিন্তু গোল হলো না, বল পোষ্টে লেগে ফিরে এলো।
যিনি কিনা পেলে, ম্যারাডোনা, ষ্টেফানো, গারিঞ্জা, বেকেনবাওয়ার, পুস্কাসের বহু বছর আগেই ফুটবলকে দান করেছিলেন শৈল্পিকতা, আর নৈপুণ্যতা। মুলত তার একক নৈপুণ্যে সর্বভারতীয় ফুটবল টিম তৎকালীন গ্রেট ব্রিটেনের মত শক্তিশালী টিমকে ৪-১ গোলে আর ইউরোপীয় টিমকে ২-১ গোলে পরাজিত করে। হতবাক হয়ে যায় পুরো ইউরোপের ফুটবল যোদ্ধারা।
তার বর্ণাঢ্য ফুটবল ক্যারিয়ারের সূচনা হয় কিন্তু রংপুরের তাজ ক্লাবের হয়ে। সেখান থেকে তিনি যোগ দেন কলকাতার এরিয়েন্স ক্লাবে। পরবর্তীতে তিনি ইষ্ট বেঙ্গল রেলওয়ে ক্লাব, কোলকাতা মোহনবাগান, ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবের হয়েও খেলেছেন। ক্যারিয়ারের শেষের দিকে তিনি কোলকাতা মোহমেডানের হয়ে কিছুদিন খেলেছেন।
আমাদের দেশের মানুষেরা পেলে চেনে, ম্যারাডোনা চেনে, হালের মেসি রোনাল্ডো, নেইমারকে চেনে, কিন্তু দেশের গর্ব সামাদ জাদুকরকে চেনে না। ভাল মত জানে না। আমি নিজেও চিনতাম না। অবশ্য দোষ দিয়েও লাভ নেই। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন যখন জানানোর ব্যাবস্থা করে না, পর্যাপ্ত সুযোগ সৃষ্টি করে না, তখন সবাই জানবে কিভাবে?
বিহারের পুর্ণিয়ায় জন্ম গ্রহনকারী এই কৃতি মানুষটি সাতচল্লিশে ভারত বিভক্তির পর কলকাতা থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলে এসেছিলেন। তখন বোধ হয় বয়সজনিত কারনে আর খেলতেন না, সরকার তাঁকে রেল বিভাগে একটি চাকুরি প্রদান করেছিলো। তিনি থাকতেন দিনাজপুরের পার্বতীপুরে, সেখানেই মৃত্য হয়েছিল এই কিংবদন্তি ফুটবলারের।