হরিতকীর উপকারীতা ও গুনাগুণ

হরিতকীর উপকারীতা ও গুনাগুণ

হরিতকীর উপকারীতা ও গুনাগুণ

হরিতকী খাওয়ার উপকারীতা
চিত্র: হরিতকী।

পরিচিতি:

হরিতকীর বৈজ্ঞানিক নাম হল টের্মিনেলিয়া চেব্যুলা (Terminalia chebula)। হরিতকী একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। ত্রিফলার তিনটি ফলের একটি ও অন্যতম ফল হচ্ছে হরিতকী। হরতকী গাছ সাধারণত মাঝারী থেকে বৃহৎ আকারের হয়ে থাকে। উচ্চতায় প্রায় ২০-৩০ মিটার লম্বা হয়

আরও দেখুনঃ লেবুর উপকারীতা ও গুনাগুণ

এর বাকল গাঢ় বাদামী রঙের হয় এবং বাকলে লম্বা ফাটল থাকে। গাছের পাতা লম্বাকৃতির এবং ৭-২০ সে.মি. হয়। হরতকীর ফুল সাদা বা হলুদ রঙের হয় এবং ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে। ফল ড্রপ, ঝুলন্ত ও প্রায় ৪-৫ সে.মি লম্বা সবুজ রঙের হয়। কাঠের রং ঘন বেগুনি, খুব শক্ত, ভারী ও মাঝারি আকারের টেকসই।

হরিতকীর উপকারীতা:

১. হরতকীতে অ্যানথ্রাইকুইনোন থাকার কারণে রেচক বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ।
২. হরিতকী কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ।
৩. অ্যালার্জি দূর করতে হরতকী বিশেষ উপকারী।
২. হরিতকীর গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
৩. গলা-ব্যথা বা মুখ-মন্ডল ফুলে গেলে হরিতকী পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে গার্গল করলে আরাম পাওয়া যায়।
৪. দাঁতের ব্যাথা হলে হরতকী গুঁড়ো লাগালে ব্যাথা ভাল হয়ে যায়।
৫.রাতে ঘুমানোর আগে বিট নুণের সঙ্গে দুই গ্রাম লবঙ্গ বা দারুচিনির সঙ্গে হরিতকীর গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে অনায়েসেই পেট পরিষ্কার হয়ে যাবে।
৬.সামান্য তেঁতো ও আকারে ছোট হলেও অনেক ভেষজ গুণে ভরপুর হলো হরতকী।

হরিতকীর গুনাগুন:

হরিতকী হচ্ছে সর্ব-রোগের মহৌষোধ। হরিতকী গাছকে ভেষজ চিকিৎসকেরা মায়ের সাথে তুলনা করেছেন। এ বৃক্ষ মানুষের কাছে মায়ের মতেই আপনজন। মানুষের শরীরের সকল প্রকার রোগের চিকিৎসায় হরিতকী ব্যবহৃত হয়। সকল সংক্রমিত রোগের হরনে এটি ব্যবহৃত হয় বলে এর নাম হরিতকী রাখা হয়েছে।  অশ্ব রোগে হরিতকী গুঁড়া (৩-৫) গ্রাম পরিমাণ ঘোলের সঙ্গে একটু লবণ মিশিয়ে খেলে সেরে যাবে। কাশি ও শ্বাসকষ্টে হরিতকী খুবই কর্যকর।

আরও দেখুনঃ বিভিন্ন প্রকার ফলের উপকারীতা ও সংরক্ষনের উপায়

মনে রাখা ভালো, হরতকী ফলটি মানব দেহে প্রবেশ করলেই উপকারিতা পাওয়া যায়। এটা এমনই একটি ফল যা শরীরে কোনো ক্ষতি করে না বরং উপকারই করে থাকে। তবে হরতকীতে কারো কোনো সমস্যা থাকলে বা ত্বকের কোনো জটিল রোগ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এটি ব্যবহার করবেন।

আরো জানুন, আমলকির উপকারীতা ও পুষ্টিগুন।

শেয়ার করুন

Similar Posts

  • দেহে খাদ্য উপাদানের অভাবের ফলে কি কি রোগ হয়

    দেহে খাদ্য উপাদানের অভাবের ফলে কি কি রোগ হয় আহারে কোনও একটি খাদ্য উপাদান বহুদিন ধরে বাদ পড়লে সেই উপাদানের অভাবে শরীরে রােগের লক্ষণ দেখা দেয়। নানারকম লক্ষণ হতে অভাবজনিত রােগ ধরা পড়ে। অভাব মারাত্মক রকমের হলে রােগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়। নিম্নে দেহে খাদ্য উপাদানের অভাবের ফলে কি কি রোগ হয় তা আলোচনা করা হল:…

    শেয়ার করুন
  • বিভিন্ন প্রকার ফলের উপকারীতা ও সংরক্ষনের উপায়

    বিভিন্ন প্রকার ফলের উপকারীতা ও সংরক্ষনের উপায় বিভিন্ন প্রকার ফলের উপকারীতা ও সংরক্ষনের উপায়:  আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য সকল ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন। বিভিন্ন ফলে বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন বিদ্যমান। সুতরাং দেশী-বিদেশী সকল প্রকার ফল খাওয়া মানুষের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। সকল ধরনের ফলমূল মানুষের শরীরের জন্য সুফল বয়ে আনে। ফলমূলের ভিটামিন মানুষের শরীরকে সুঠাম করতে…

    শেয়ার করুন
  • কিডনির পাথর দূর করার উপায়

    মানব দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কিডনি। একজন মানুষের দেহে দুইটি কিডনি থাকে। কিডনি শরীর থেকে বজ্র পদার্থ অপসারণের কাজ করে। তবে কিডনির অনেক ধরনের রোগ হয়। বিশেষ করে কিডনিতে পাথর হয়। কিডনিতে পাথর হলে অনেক ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। চিকিৎসার মাধ্যমে কিডনির পাথর দূর করার উপায় রয়েছে। চিকিৎসা ব্যবস্থার অনেক উন্নয়ন ঘটেছে। যার ফলে অনেক কঠিন ও জটিল…

    শেয়ার করুন
  • এন্টিবায়োটিক কি কাজ করে ও এন্টিবায়োটিক এর উপকারিতা

    শারীরিক কোন সমস্যা হলে আমরা ডাক্তারের কাছে যায়। ডাক্তারের কাছে গেলে অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করে। কারণ অ্যান্টিবায়োটিক শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মানবদেহে অ্যান্টিবায়োটিক থাকে। যখন রোগের জীবাণুর সাথে শরীরের অ্যান্টিবায়োটিক হেরে যায় তখন রোগা আমাদের আক্রমণ করে। এন্টিবায়োটিক কি কাজ করে ও  এন্টিবায়োটিক এর উপকারিতা। এন্টিবায়োটিক সম্পর্কে আমাদের কবে সকলের ধারণা রয়েছে।  অ্যান্টিবায়োটিক রোগের সাথে প্রতিক্রিয়া করে…

    শেয়ার করুন
  • বাচ্চাদের হেঁচকি বন্ধ করার উপায়

    আমরা নরমালী বাচ্চাদের নিয়ে একটু বেশি পরিমানেই চিন্তায় থাকি, তাঁর উপরে যখন আবার কোন রকম সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকি আমাদের চিন্তার শেষ থাকেনা। তেমনি যখন আমাদের নবজাতক বা বাচ্চাদের হেঁচকি উঠে তখন খুব চিন্তায় পড়ে যায় এবং বাচ্চাদের হেঁচকি বন্ধ করার উপায় খুজে বেড়ায়। হেঁচকি উঠা যে শুধুমাত্র যে বাচ্চাদের এমনটা কিন্তু না, বয়স্ক থেকে…

    শেয়ার করুন
  • লেবুর উপকারীতা ও গুনাগুণ

    লেবুর উপকারীতা ও গুনাগুণ লেবু প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কারণ লেবুতে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ই, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, দস্তা, ফোলেট, তামা, প্যানটোথেনিক অ্যাসিড, নিয়াসিন থায়ামিন এবং আরও অনেক প্রোটিন রয়েছে। এই পুষ্টিগুলি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। লেবু ভারতের আসাম ও চীনে প্রথম ব্যবহৃত হয়েছিল। বেশিরভাগ লোক পানিতে মিশ্রিত লেবুর রস খান।…

    শেয়ার করুন