বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি
|

বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি

নারী পুরুষের বিবাহিত জীবন সম্পন্ন হয় সন্তান নেওয়ার মাধ্যমে। তবে চাইলেই সহজে বাচ্চা নেওয়া যায় না। বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি রয়েছে। এর জন্য নারী-পুরুষ সহবাস করতে হয়। এবং সহবাস করার কিছু নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। নারীদের ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বানু নিঃসরণ হয়।

নারী ডিম্বানুর সাথে পুরুষের শুক্রানু মিলিত হলেই নারীর পেটে বাচ্চা আসে। তবে সব সময় নারীদের ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বানু নিঃসরণ হয় না। এর কিছু নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। নিম্নে, বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

গর্ভবতী হওয়ার পদ্ধতি কি?

বিবাহিত নারীর জীবন পরিপূর্ণ হয় সন্তান জন্মদানের মাধ্যমে। কারণ প্রতিটি নারী মা হওয়ার স্বাদ নিতে চাই। নারীদের গর্ভবতী হওয়ার পদ্ধতি হচ্ছে সহবাস করা। সহবাস করার পর পুরুষের শুক্রাণু দিয়ে ভ্রমন করে মহিলাদের জরায়ুতে প্রবেশ করে। 

তারপর জরায়ুতে থাকা ডিম্বাণুর সাথে শুক্রাণু মিলন ঘটে। তারপর ডিম্বানু কোষ ভিত্তি করে এবং আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। কিছুদিনের মধ্যে বাচ্চার আকৃতি আসে। গর্ভবতী হওয়ার পদ্ধতি এটাই।

কিভাবে গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ানো যায়?

কিভাবে গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ানো যায়

একজন নারীর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় গর্ভবতী হওয়া। তবে ইচ্ছা করলে গর্ভবতী হওয়া যায় না। তার জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম অতিক্রম করতে হয়। কিছু কিছু সময় অনেক চেষ্টার পরও গর্ভবতী হওয়া যায় না। নিম্নে, কিভাবে গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ানো যায় তুলে ধরা হলো:

  1. পিরিয়ড শেষ হলে প্রতিদিন সহবাস করা। কারণ এই সময় ডিম্বানু তৈরি হয়।
  2. ঋতুচক্রের পুনরাবৃত্তির তথ্য সংরক্ষণ করা।
  3. ফার্টাইল উইন্ডোর সময় বিকল্প দিনে যৌন মিলন করা।
  4. দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।
  5. ভিটামিন যুক্ত খাবার খাওয়া।
  6. স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া।
  7. ৩০ বছরের আগে বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা করে। কারণ তারপর শুক্রানু  এবং ডিম্বানু বানানো দুর্বল হয়ে পড়ে।
  8. কঠিন ব্যবহারে ব্যায়াম করা কমানো।

মাসিক হওয়ার কত দিন পর সহবাস করলে বাচ্চা হয়?

মাসিক হওয়ার পরে সহবাস করলে বাচ্চা হয়। কারণ মাসিক শেষে মেয়েদের জরায়ুতে ডিম্বাণু আসে। একটি পূর্ণাঙ্গ ডিম্বানু জরায়ুতে ২৪ থেকে ৩৬ ঘন্টা পর্যন্ত কার্যকর থাকে। এজন্য এই সময়টাই সহবাস  করলে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। 

মাসিক হওয়ার ৯ থেকে ১৯তম দিনের মাঝে সহবাস করলে বাচ্চা হওয়া সম্ভাবনা বেশি থাকে। বিশেষ করে মাসিক শেষ হওয়ার তিন থেকে দশ দিনের মধ্যে প্রতিদিন সহবাস করা উচিত। তাহলে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা ৯০% এর ওপর থাকে।

ইসলামিক নিয়মে বাচ্চা নেওয়ার নিয়ম:

ইসলামিক নিয়মে বাচ্চা নেওয়ার নিয়ম আমাদের জানা অত্যন্ত জরুরী। সাধারণত আমরা যেভাবে বাচ্চা নিয়ে থাকি ইসলামের দৃষ্টি থেকে একই ভাবে বাচ্চা নেওয়ার নিয়ম। তবে ইসলামের দৃষ্টিতে সহবাস করার আগে অবশ্যই স্বামী স্ত্রীকে ওযু করে নিতে হবে।

ওযু করার পর সহবাস করতে হবে। এবং সহবাস করতে হবে শালীনভাবে। তাহলে যে বাচ্চা জন্মগ্রহণ করবে সে শালীন হবে। এবং বাচ্চা গর্ভে থাকা অবস্থায় বেশি বেশি করে ইবাদত করতে হবে। কারণ বাচ্চারা মায়ের গর্ভে থেকে শিক্ষা গ্রহণ শুরু করে।

বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি:

একজন নারীর ডিম্বাশয় থেকে আর ডিম্বানু নিঃসরণ হয়। এই প্রক্রিয়াকে ওভুলেশন বলে। ওভুলেশন প্রক্রিয়া প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট সময়ে হয়। এই সময় মহিলাদের শরীর থেকে নির্গত ডিম্বানু গুলো গুলো পুরুষের শুক্রানুর সাথে মিলিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে।

এই কারণে এই নির্দিষ্ট সময় সহবাস করতে হয়। এই সময় সহবাস করলে গর্ভধারণ করা সম্ভব হয়। বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি এটাই। তাই পিরিয়ড শেষে নির্দিষ্ট সময় সহবাস করতে হবে তাহলে বাচ্চা নেওয়া যাবে।

পিরিয়ডের কত দিন আগে সহবাস করলে সন্তান হবে না?

পিরিয়ডের সাত দিন আগে সহবাস করলে সন্তান হবে না। কারণ পিরিয়ডের শেষে ১৮ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত জরায়ুতে ডিম্বাণু থাকে। তারপর ডিম্বানু গুলো মরে যায়। এই কারণে মাসিক হওয়ার আগে জরায়ুতে যে ডিম্বানু থাকে না। তাই পিরিয়ডের সাত দিন আগে সহবাস করলে সন্তান হবে না।

বাচ্চা নিতে চাইলে কত দিন পর পর সহবাস করতে হয়?

ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু বের হওয়ার পর শরীরের ২৪ থেকে ৩৬ ঘন্টা জীবিত থাকে। পিরিয়ড শেষ হওয়ার ১০ তম দিন থেকে ২০ তম পর্যন্ত সহবাস করতে হবে। সহবাস করতে হবে একদিন পরপর। তাহলে বাচ্চা যাওয়া অনেক বেড়ে যায়। ডাক্তারেরাও এটাই পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

স্ত্রী গর্ভবতী হচ্ছে না কেন?

স্ত্রী গর্ভবতী হচ্ছে না কেন অনেকে জানতে চাই। বর্তমান সময়ে গর্ভবতী না হওয়ার সমস্যা বেড়েই চলেছে। এর অনেক কারণ রয়েছে নিম্ন তুলে ধরা হলো:

  1. জরায়ুর সমস্যা থাকলে।
  2. পিরিয়ডের সমস্যা থাকলে। 
  3. ডিম্বানু তৈরি না হলে।
  4. অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পেলে।
  5. বয়স বেড়ে গেলে।
  6. হরমোন জনিত সমস্যা থাকলে।
  7. পুষ্টির অভাবে।
  8. পুরুষের সমস্যা থাকলে।

বাচ্চা নেওয়ার জন্য সহবাসের নিয়ম:

বাচ্চা নেওয়ার জন্য সহবাসের নিয়ম রয়েছে। নির্দিষ্ট সময় এবং নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সহবাস করতে হবে। বাচ্চা নেওয়ার জন্য পিরিয়ডের পর থেকে ২০ দিন পর্যন্ত নিয়মিত সহবাস করতে হবে। ছেলেদের বীর্য মেয়েদের যোনিপথে ফেলতে হবে। সহবাস শেষে মেয়েকে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকতে হবে।

এই সময় পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। কারণ পুষ্টির অভাবে ডিম্বাণু এবং শুক্রানু দুর্বল হয়ে থাকে। যার কারণে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। তাই এই সময় সঠিক পরিমাণ পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। সর্বনিম্ন একদিন পরপর সহবাস করতে হবে।

কোন মাসে বাচ্চা নেওয়া ভালো:

বাচ্চা যে কোন মাসে নেওয়া যায়। তবে আবহাওয়ার দিকে লক্ষ্য রেখে বাচ্চা মে অথবা জুন মাসে নেওয়া উত্তম। এই সময় আবহাওয়া ঠিক থাকে। এই কারণে এই সময় বাচ্চা খুব দ্রুত বড় হয় এবং বাচ্চাদের স্বাস্থ্য সাধারণত ভালো থাকে। এই সময় রোগ কম হয়। মে মাসে বাচ্চা না উত্তম।

বাচ্চা নেওয়ার আগে পুরুষের করনীয়:

বাচ্চা নেওয়ার আগে পুরুষের করনীয়

বাচ্চা হওয়ার আগে অনেক ধরনের প্রস্তুতি নিতে হয় পুরুষের। কারণ বাঁচার লালন পালন এবং চিকিৎসা সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকতে হয়। এ কারণে পুরুষের অনেক দায়িত্ব। নিম্নে,বাচ্চা নেওয়ার আগে পুরুষের করনীয় তুলে ধরা হলো:

  1. মানসিক প্রস্তুতি।
  2. ধূমপান ত্যাগ করতে হবে।
  3. পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
  4. শারীরিক ওজন ঠিক রাখতে হবে।
  5. শারীরিক প্রস্তুতি।
  6. আর্থিক প্রস্তুতি।

গর্ভধারণের সঠিক সর্বোত্তম ১০টি উপায়:

নিম্নে, গর্ভধারণের সঠিক সর্বোত্তম ১০টি উপায় তুলে ধরা হলো:

  1. ঋতুচক্রের পুনরাবৃত্তির তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা।
  2. ফার্টাইল উইন্ডোর সময় বিকল্প দিনে যৌন মিলন।
  3. ওভুলেশনের দিকে দৃষ্টি রাখা।
  4. দেহের ওজন ঠিক রাখা।
  5. স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া।
  6. গর্ভাবস্থার আগে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন খাওয়া।
  7. ভারী ব্যায়াম করা কমানো। 
  8. ৩০ বছর আগে বাচ্চা নেওয়া।
  9. ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকা।
  10. ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া।

সহবাসের কত দিন পর বাচ্চা পেটে আসে:

সহবাসের পর ডিম্বানু এবং শুক্রাণু মিলিত হলেই বাচ্চা পেটে আসে। তবে এর লক্ষণ সাথে সাথে প্রকাশ পায় না। বাচ্চা পেটে আসার ৬ সপ্তাহ পর থেকেই বমি বমি ভাব শুরু হয়। স্তন ব্যথা করে। স্তন ফুলে যায়। এইসব লক্ষণ প্রকাশ পায়। সহবাসের দিন থেকেই বাচ্চার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়।

শেষ কথা: বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি

বর্তমান সময়ে অনেক নারী-পুরুষের বাচ্চা হচ্ছে না। এর সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি না জানা। অনেকেই বাচ্চা নিতে দেরি করে। যার কারণে বাচ্চা হয় না।

আবার অনেকে সহবাসের সঠিক নিয়ম জানে না। এবং কখন করতে হয় সে সম্পর্কে ধারণা নাই। এসব কারণে সাধারণত বাচ্চা হয় না। লেখার মধ্যে কোন ভুল হলে ক্ষমা করে দেবে। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

শেয়ার করুন

Similar Posts