ইন্সুরেন্স কি হালাল? ইন্সুরেন্স কোম্পানি কাজ কি?
|

ইন্সুরেন্স কি হালাল? ইন্সুরেন্স কোম্পানি কাজ কি?

বর্তমানে প্রতিটি মানুষের ভেতরে সেভিংস বা ইন্সুরেন্স করার জন্য অনেক বেশি আগ্রহী হচ্ছে এবং ভবিষ্যৎতের কথা মাথায় রেখে ইন্সুরেন্স করতে যাচ্ছেন। আর তাই আজকে আমরা এই পোস্টের মাধ্যেমে আপনাদের একটি সম্পূর্ণ ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো যে ইন্সুরেন্স কি হালাল বা ইন্সুরেন্স কোম্পানির কাজ কি কি এই সমস্ত বিষয় গুলো সম্পর্কে।

আর তাই আপনারা যারা ইন্সুরেন্স কোম্পানির কাজ কি জানেন না তাদের জন্য অনেক হেল্পফুল হতে চলেছে আজকের এই আর্টিকেলটি। আপনার জন্য ইন্সুরেন্স করা কি হালাল হবে নাকি হারাম হবে সেটি নিয়ে আলোচনা করছি।

আরও পড়ুনঃ সহজে ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায়

চলুন তাহলে দেরি না করে মূল টপিকে যাওয়া যাকঃ

ইন্সুরেন্স কাকে বলে? (What is insurance)

আমরা জানি যে ইন্সুরেন্স হচ্ছে একটি ইংরেজি শব্দ যার বাংলা অর্থ বীমা। আর বীমা মানে চুক্তি। বীমা হচ্ছে এমন একটি চুক্তিপত্র যা আপনাদের বিপদের সময় পাশে থাকবে বা আপনাকে সাহায্য করবে। ধরুন আপনি ২ লক্ষ টাকার একটি বীমা করছেন ২ বছরের জন্য।

আপনি যখন দুই বছরের জন্য এই বীমা করার জন্য চুক্তিপত্র করেন এবং নিদিষ্ট সময়ের জন্য একটি নিদিষ্ট পরিমান টাকা প্রিমিয়াম করে থাকেন তাঁকে আমরা বলে থাকি কিস্তি। মনে করুন, আপনি ১ বছরের জন্য একটি শস্য বীমা করলেন এবং প্রত্যেক মাসে নিদিষ্ট পরিমানে বীমা ফি জমা দিলেন সেই শস্যর জন্য।

এখন ধরুন এই এক বছর বীমাকালিন সময়ের মধ্যে যদি কোন রকম বন্য বা প্রকৃতিক দুর্যোগ এর কারণে আপনার শস্যের কোনো রকম ক্ষতি হয়ে থাকে তাহলে বীমা কোম্পানি আপনাকে সেই ক্ষতি পূরণ প্রদান করবে।

আমরা আপনাদের খুব সহজ ভাষায় ইন্সুরেন্স বা বীমা কি সেটি বুঝানোর চেষ্টা করেছি। আশা করছি যে আপনি এখন বুঝতে পেরেছেন যে ইন্সুরেন্স বা বীমা কাকে বলে সেই সম্পর্কে।

ইন্সুরেন্স কত প্রকার ও কি কি? । ইন্সুরেন্স কোম্পানি কাজ কি?

আমরা জানি যে ইন্সুরেন্স বা বীমা অনেক প্রকার হয়ে থাকে। আপনি চাইলে আপনার পছন্দের মতো যেকোন একটি ইন্সুরেন্স বা বীমা করতে পারেন। এখন আমরা বেশকিছু ইন্সুরেন্স এর নাম তুলে ধরবো যেগুলো মানুষজন অনেক বেশি হারে করে থাকে। এই ধরনের ইন্সুরেন্স গুলোর ভেতরে ৮ প্রকারের ইন্সুরেন্স মানুষ জন তুলনা মূলক হারে বেশি পরিমানে করে থাকে।

আরও পড়ুনঃ জীবন বীমা কি এবং বাংলাদেশের লাইফ ইন্সুরেন্স কম্পানির তালিকা

এই ৮ প্রকার ইন্সুরেন্স বা ইন্সুরেন্স গুলো হলো –

  1. জীবন বীমা (Life Insurance)
  2. স্বাস্থ্য বীমা (Health Insurance)
  3. সাধারণ বীমা (General Insurance)
  4. অগ্নি বীমা (Fire Insurance)
  5. ভ্রমন বীমা (Travel Insurance)
  6. সম্পত্তি বীমা (Property Insurance)
  7. দুর্ঘটনা বীমা (Accidents Insurance)
  8. গৃহ বীমা / ঘরের ইন্সুরেন্স (Building Insurance)

আমরা জানি যে সমস্ত ইন্সুরেন্স বা বীমা গুলো আমাদের জীবনের সাথে জড়িত না সেই সব বীমা বা ইন্সুরেন্সকে সাধারণ ইন্সুরেন্স বলা হয়ে থাকে। আর তাই বীমা মূলত দুই প্রকার হয়ে থাকে। যেমনঃ

  • জীবন বীমা এবং
  • সাধারণ বীমা।

জীবন বীমার বাহিরে যত প্রকার বীমা রয়েছে সবগুলোকে সাধারণ বীমা বলা হয়ে থাকে।

আরও পড়ুনঃ আমাদের জিডিপি ছিল পুরো ইউরোপের চেয়েও বেশি

লাইফ ইন্সুরেন্স এর সুবিধা।

লাইফ ইন্সুরেন্স এর সুবিধা কি কি এই প্রশ্নের উত্তর সহজ করে বলতে গেলে এভাবে বলা যায় যে লাইফ ইন্সুরেন্স করার অন্যতম সুবিধা হলো আপনি জরুরি অবস্থায় বিশেষ ধরনের যে সাহায্য পেয়ে থাকেন ইন্সুরেন্স কোম্পানির কাছ থেকে তাকেই লাইফ ইন্সুরেন্স বলা হয়ে থাকে।

এতে করে হয় কি অপ্রত্যাশিত ভাবে কোনো ঘটনার কারনে যদি আপনার কোন রকম ক্ষতি হয়ে থাকে তাহলে আপনি এই সমস্ত ইন্সুরেন্স কোম্পানির কাছে থেকে সহযোগীতা পাবেন। যার ফলে আপনি ক্ষতিগ্রস্থ অবস্থায় তাদের থেকে যে সহযোগীতা পাচ্ছেন সেটি আপনার জন্য অনেক বড় রকমের সাপোর্ট হিসাবে কাজ করবে।

লাইফ ইন্সুরেন্স এর বিশেষ কিছু উল্লেখযোগ্য সুবিধা হলোঃ

  1. মৃত্যু পরবর্তী আপনার পরিবার আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে।
  2. শুধু আর্থিক সহযোগিতা পাবেন না বীমা কোম্পানির কাছ থেকে একই সাথে বিনিয়োগ সমস্ত টাকা ফেরত পবােন।
  3. জরুরি অবস্থায় আপনার যদি টাকার প্রয়োজন হয় তাহলে বীমা কোম্পানির কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন।
  4. লাইফ ইন্সুরেন্স এর সুবিধা গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি সুবিধা হলো আপনার পরিবারের আর্থিক ভাবে নিরাপত্তা প্রদান করে।

ইন্সুরেন্স কোম্পানি কাজ কি?

আপনারা যারা যারা এখন পর্যন্ত খোজ করছিলেন যে জীবন বীমা বা ইন্সুরেন্স কোম্পানির কাজ কি তাদের জন্য বলছি যে বীমা হচ্ছে এক ধরনের আর্থিক প্রতিদান বা নিশ্চয়তা স্বরূপ। আর ইন্সুরেন্স কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে নিদির্ষ্ট পরিমান অর্থ প্রতিমাসে জমা করাকে বলা হয়ে থাকে কিস্তি।

বীমা হচ্ছে একধরনের আর্থিক সুবিধা প্রাপ্তির জন্য বীমা গ্রহীতা ও বীমা কোম্পানির মধ্যে একটা চুক্তি, যার মাধ্যমে বীমা গ্রহীতা এককালীন বা কিস্তিতে বীমা কোম্পানি কে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা প্রদান করে । এই নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কে বলা হয় বীমা প্রিমিয়াম।

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের গার্মেন্টস্ শিল্প কারখানার বর্তমান পরিস্থিতি

ইসলামের দৃষ্টিতে ইন্সুরেন্স বা বীমা করা কি হালাল ?

আমরা যারা মুসলিম হয়ে জন্ম নিয়েছি বা ইসলাম ধর্মের অনুসারী গণ রয়েছি তাদের অবশ্যই জানতে হবে যে ইসলামের দৃষ্টিতে ইন্সুরেন্স বা বীমা করা কি হালাল হবে? অনেকেই কিন্তু প্রশ্ন করে থাকেন যে ইসলামের দৃষ্টিতে ইন্সুরেন্স বা বীমা করা কি হালাল?

আপনারা যারা জানতে চেয়েছেন যে ইন্সুরেন্স বা বীমা করা কি হালাল? তাদের উদ্দেশ্য বলছি সরাসরি যেকোন ধরনের ইন্সুরেন্স বা বীমা করা হারাম। শরীয়তের দৃষ্টিতে ইন্সুরেন্স বা বীমা সম্পূর্ণ নাজায়েয ও হারাম একটি লেনদেন।

ওআইসির শাখা সংস্থা আর্ন্তজাতিক ফিকহ একাডেমি এবং সৌদী আরবের প্রখ্যাত ধর্মীয় সংস্থা উচ্চ উলামা পরিষদ সহ বিশ্বের সকল নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান ও বেশিরভাগ ফকীহ এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, সব ধরণের বানিজ্য বীমাই নাজায়েজ ও হারাম।

তাই আপনারা যারা যারা ইসলামের অনুসারী তারা ইন্সুরেন্স বা বীমা করা থেকে দূরে থাকবেন। আমরা শুধুমাত্র আপনাদের জন্য সঠিক তথ্য এখানে শেয়ার করে থাকি। আশা করি আপনারা উপকারিত হবেন অনেক তথ্য বা জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।

শেষকথাঃ ইন্সুরেন্স কোম্পানি কাজ কি?

আপনারা যারা যারা আমাদের পোস্টটি প্রথম থেকে মনোযোগ সহকারে পড়েছনে তারা ইন্সুরেন্স কোম্পানির কাজ কি সেই সম্পর্কে জেনে গিয়েছেন এবং এর পাশাপাশি আমরা বলেছি যে ইসলামের দৃষ্টিতে ইন্সুরেন্স করা হালাল নাকি হারাম সেই সম্পর্কে।

আপনি চাইলে আমাদের এই পোস্টটি গুলো আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে এই সম্পর্কে তাদেরকেও জানার সুযোগ করে দিতে পারেন। নতুন নতুন সকল পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং টুইটারে লাই দিয়ে সাথেই থাকুন।

শেয়ার করুন

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *