মেয়েদের ওজন কমানোর ব্যায়াম বা দ্রুত ওজন কমানোর উপায়
|

মেয়েদের ওজন কমানোর ব্যায়াম বা দ্রুত ওজন কমানোর উপায়

সকল মেয়েদের ওজন কমানোর ব্যায়াম বা দ্রুত ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন।  আজ আমি আলোচনা করব কিভাবে মেয়েদের ওজন কমানো যায়। অনেক ধরনের ব্যায়াম রয়েছে যেসব করলে খুব সহজেই ওজন কমানো সম্ভব।বর্তমান সময়ে সকলেই দেখতে সুন্দর হতে চাই।

সুন্দর হতে হলে অবশ্যই ওজন কম থাকতে হবে। কিছু কিছু ব্যায়াম আছে যেগুলো ওজন কমাতে সাহায্য করে। অনেকে আছে জিমে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যায়াম করে তারপরও ওজন কমছে না। আজ কয়েকটি ব্যাংক সম্পর্কে আলোচনা করব যেগুলো ঘরে বসেই করতে পারবেন এবং ওজন কমাতে পারবেন।

 শুধু ব্যায়াম করে ওজন কমানো সম্ভব না। কারণ অনেক খাবার রয়েছে যেসব খাবারে প্রচুর পরিমাণ ক্যালোরি এবং চর্বি থাকে সেসব খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে যেটুকু ওজন কমবে। সঠিক খাবার না খেলে সেটুকু কমানো সম্ভব না।

এজন্য ব্যায়াম করার পাশাপাশি সঠিক খাবার গ্রহণ করতে হবে। চর্বিযুক্ত খাবার সবসময় এড়িয়ে চলতে হবে। নিম্নে মেয়েদের ওজন কমানোর ব্যায়াম নিয়ে আলোচনা করা হলো:

ওজন বাড়ার কারণ | মেয়েদের ওজন কমানোর ব্যায়াম

দিন দিন মানুষের ওজন বেড়ে যাচ্ছে। এর পিছনে অনেক কারণ রয়েছে। বর্তমান সময়ে কাজের পরিমাণ দিন দিন কমে যাচ্ছে। যার ফলেশারীরিক পরিশ্রম করতে হয়না। শারীরিক পরিশ্রম না করলে শরীরে মেদ জমতে শুরু করে।

মেদ ওজন বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বর্তমান সময়ে মানুষ চর্বিযুক্ত খাবার বেশি খায়। চর্বিযুক্ত খাবার খেতে অনেক সুস্বাদু হয়। যার ফলে এই অভ্যাস দূর করা সম্ভব হয় না। একারণে আস্তে আস্তে শরীরে মেদ জমে এবং ওজন বাড়তে শুরু করে।

বর্তমান সময়ে অনেক ধরনের যন্ত্রের আবিষ্কার হয়েছে যার ফলে মানুষকে পরিশ্রম করতে হয় না। ঘরের সকল ধরনের কাজ মেয়েরা মেশিনের সাহায্যে করে। কোনো পরিশ্রম করতে হচ্ছে। তাড়াতাড়ি কাজ শেষ হওয়ার ফলে সারাদিন শুয়ে থেকে পার করে দেয়।

আরও পড়ুনঃ টাক মাথায় চুল গজানোর ঘরোয়া উপায়

এসব কারণে মেয়েরা দিন দিন অলস হয়ে যাচ্ছে। এইভাবে আস্তে আস্তে ওজন বাড়তে শুরু করে। নিম্নে ওজন বাড়ার কারণ গুলো তুলে ধরা হলো:

  1. প্রচুর পরিমাণ চর্বি যুক্ত খাবার খাওয়া।
  2. সারাদিন ঘরে বসে থাকা।
  3. দিন দিন যন্ত্রের ব্যবহার বাড়া।
  4. শারীরিক পরিশ্রম না করা।
  5. অসময়ে ঘুমিয়ে থাকা

উপরে যে সব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে সেগুলো ওজন বাড়ার প্রধান কারণ। এসব থেকে দূরে থাকলে আস্তে আস্তে উড়ান বাঁড়া বন্ধ হয়ে যাবে। শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে কারণ খাবারে প্রচুর পরিমাণ ক্যালোরি থাকে। যে পরিমাণ ক্যালোরি প্রতিদিন খাওয়া হয়। সে পরিমাণ ক্যালোরি শরীর থেকে কাজের মাধ্যমে বের করতে হবে। তা না হলে দিন দিন ওজন বাড়বে।

ওজন কমানোর ব্যায়াম

বর্তমান সময়ে মানুষ নিজেকে সবার কাছে সুন্দর দেখাতে চাই। সুন্দর দেখাতে হলে অবশ্যই ফিট থাকতে হবে। বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ মানুষের ওজন বেশি। এসব কারণে মানুষের সৌন্দর্য কমে আসে। আজ আমি কিছু ব্যায়াম সম্পর্কে আলোচনা করব। সেসব ব্যায়াম করলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং সাথে সাথে ওজনও কমবে।

  •  হাঁটা
  •  দৌড় বা স্প্রিন্ট
  •   পুশ আপ
  •   সিট আপ
  •  স্কোয়াটস বা উঠা বসা
  •  হাই প্ল্যান 

হাঁটা

আপনি প্রতিদিন স্বাভাবিক যেভাবে হাঁটে তার চেয়ে একটু জোরে হাঁটতে হবে। হাটার সময় হাত একটু জোরে জোরে নাড়াতে হবে। প্রতিদিন এভাবে সর্বনিম্ন ৩০ থেকে ৪০মিনিট হাঁটতে হবে। নিয়মিত এইভাবে যদি হাঁটেন তাহলে ওজন কমানো সম্ভব।

প্রতিদিন ঠিক একই সময়ে হাঁটতে হবে। কিন্তু হাঁটার সময় পায়ে স্পোর্টস শু পড়ে হবে। তা না হলে পায়ের সমস্যা হতে পারে। অনেক বেশি হলে ব্যথা করতে পারে। তাই আস্তে আস্তে হাঁটার পরিমাণ বাড়ানোই ভালো।

 দৌড় বা স্প্রিন্ট

ওজন কমানোর জন্য সবচেয়ে ভাল ব্যায়াম হচ্ছে দৌড়ানো। প্রথম অবস্থায় দৌড়ালে অনেক সমস্যা হতে পারে। তাই কিছুদিন হাঁটার পর আস্তে আস্তে দৌড়াতে হবে। দৌড়ানোর কিছু নিয়ম রয়েছে। প্রথম দিন 100 মিটার দৌড় দেওয়ার কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে হবে।

তারপর যেখান থেকে দৌড় শুরু করেছেন সে জায়গায় আবার ফিরে আসতে হবে। এইভাবে প্রতিদিন দৌড়াতে হবে ধীরে ধীরে দৌড়ানো পরিমাণ বাড়াতে হবে। দৌড়ানোর ফলে সকল ধরনের ব্যায়াম একসাথে হয়ে যায়। ওজন কমাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে দৌড়। ওজন কমাতে হলে অবশ্যই প্রতিদিন রাতে হবে।

পুশ আপ

পুশ আপ এই ব্যায়াম করলে শরীরের সকল অংশের ব্যায়াম হয়ে যায়। প্রতিদিন  পুশ আপ দিলে হাত পায়ের মাংসপেশি অনেক শক্ত হয়। শরীরে যেসব অতিরিক্ত চর্বি জমা হয় পুশ আপ দেওয়ার ফলে সেগুলো দূর হয়। ওজন কমাতে পুশ আপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

আরও পড়ুনঃ ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়?

পুশ আপ দিতে প্রথমে আপনাকে মেঝেতে হাতের তালু এবং পায়ের আঙুলের উপর ভর দিয়ে সোজা হয়ে থাকতে হবে। তারপর পায়ের আংগুল এবং হাতের উপর ভর দিয়ে উঠানামা করতে হবে। প্রথম অবস্থায় এটা খুব বেশি দিতে পারবেন  দিনে দিনে পুশ আপ এর পরিমাণ বাড়াতে হবে।

সিট আপ

সিট আপ দিলে সাধারণত মেদ কমায় এবং  কোমরের খুব সুন্দর সেপ আসে। সাধারণত পেটের মেয়েদের কারণেই মেয়েদের ওজন বাড়ে। সেটাপ দেওয়ার ফেলে তলপেটের চর্বি ঝরে পড়ে। সিট আপ চর্বি কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যায়াম।

সিট আপ দেওয়ার নিয়ম হচ্ছে, প্রথমে মেট এর ওপর সিদ শুতে হবে। তারপর দুই হাত কাঁধের নিচে দিয়ে উপরের দিকে উঠতে হবে। সময় আপনার পা সোজা রাখতে পারেন অথবা একটু ভাজ করে রাখতে পারেন। প্রথম অবস্থায় আপনার পা উপরের দিকে উঠে যেতে পারে।

ইচ্ছা করলে আপনি  পা কারো সাথে বাঁধিয়ে অথবা পায়ের উপর কিছু রেখে এবার কি করতে পারেন। এই ব্যায়াম করার ফলে অনেক তাড়াতাড়ি ওজন কমে। এবং কোমরের শক্তি বৃদ্ধি পায়।

স্কোয়াটস বা উঠা বসা

প্রতিদিন উঠবস করার ফলে অনেক ওজন কমে। ওটা বাসা করার কিছু নিয়ম রয়েছে। সেটা হল, দু পা ফাক করে প্রথমে দাঁড়াতে হবে তারপর দুই হাত সোজা করে সামনের দিকে রাখতে হবে। এরপর হাত সামনে রেখেই উঠতে বসতে হবে।

এই ব্যায়ামটি করার সময় হাত পা সব সময় সোজা রাখতে হবে শুধু পায়ের গিরা এবং মাজা ভাগ হবে। এই নিয়মে ব্যায়াম করলে আপনার মেদ কমার পাশাপাশি  পায়ের পেশি অনেক মজবুত হবে। ওজন কমাতে ব্যায়াম অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

হাই প্ল্যান  

হাই প্ল্যান করার জন্য প্রথমেই একটি  ম্যাড  বা মেঝের উপর উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এরপর আপনার হাত এবং পায়ের আঙুলের উপর ভর দিয়ে আস্তে আস্তে শরীরটা উপরের দিকে তুলোনা। আহাদ থাকবে আপনার কান বরাবর। হাত এবং পায়ের আঙুলের উপর ভর দিয়ে পুরো শরীর সোজা করে রাখুন।

আপনার পেট আস্তে আস্তে উপরের দিকে টেনে রাখুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে হবে। প্রথম অস্থায়ী ব্যায়াম করতে অনেক কষ্ট হবে। তাই প্রথমদিন ৩০ সেকেন্ড এর বেশি করবেন না। ৩০ সেকেন্ড এর বেশি সময় ধরে করলে পেটে ব্যথা করতে পারে।

প্রতিদিন এই ব্যায়াম করার ফলে আপনার পেটের চর্বি কমে যাবে। আস্তে আস্তে কোমরের সেপ সুন্দর হবে। আপনাকে দেখতে অনেক আকর্ষণীয় লাগবে।

উপরে যে সব ব্যায়ামের কথা উল্লেখ করা হয়েছে আমার বিশ্বাস আপনারা যদি সঠিকভাবে করেন তাহলে খুব সহজেই। আপনার ওজন কমাতে পারবেন।

সঠিক খাদ্য তালিকা:

ওজন কমাতে হলে সর্বপ্রথম খাদ্য তালিকা পরিবর্তন করতে হবে। বর্তমান সময়ে খাদ্যাভ্যাসের কারণে মেয়েদের ওজন বাড়ে। প্রথমে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন করতে হবে। ওজন কমাতে কোন ধরনের খাবার খেতে হবে নিম্নে আলোচনা করা হল:

সকালের খাবার

সকালের খাবারের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে ৫০০ ক্যালোরি থেকে ৭০০ ক্যালোরি যেন বেশি না হয়। ক্যালরিযুক্ত খাবার খেলে ওজন তাড়াতাড়ি বাড়ে। এ কারণে সকালের খাবার ফলমূল বেশি করে খেতে হবে।

প্রতিদিন সকালে মধু দিয়ে লেবু শরবত খেলে তাড়াতাড়ি ওজন কমে। লেবুতে এসিড থাকে যার ফলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি দূর করে। সকালের নাস্তায় তেল যুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।

দুপুরের খাবার

বাঙালির সকলের প্রধান খাদ্য হচ্ছে ভাত ও মাছ। দুপুরের খাবারের সময় ভাতের পরিমাণ কম খেতে হবে। কারণ হাতে প্রচুর পরিমান ক্যালরি থাকে। এই কারণে ভাত কম করে খেতে হবে। প্রচুর পরিমাণ শাকসবজি খেতে হবে।

শাকসবজিতে ভিটামিন থাকে ভিটামিন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে কিন্তু ওজন বৃদ্ধি করে না। খাবারে সাথে ছালাত রাখতে হবে। য়েমন, সশা, খিরা, টমেটো। এই খাবার গুলো চর্বি কমায়।

রাতের খাবার 

রাতে যতো কম খায়া যায় ততোই ভালো। কারণ, রাতের খাবার আমাদের শরীলের ঘারড়ি পূরণ করে। যদি পরিশ্রম কম হয় থাহলে বেশি খাবার খায়া যাবেনা। এই জন্যে খাবার তালিকাই তেলযুক্ত খাবার রাখা যাবে না। রাতের খাবারে  রুটি খেলে সবচাইতে ভালো। কিন্তু তেলেভাজা যাবে না।

খাদ্য তালিকা থেকে ভাজাপোড়া বাদ দিতে হবে। বাইরের খাবার যেমন, বার্গার, আইসক্রিম, ফুচকা, চটপটি, হালিম, কেক ইত্যাদি খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে। এসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে চর্বি থাকে। ওজন বাড়াতে চর্বি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই এসব খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।

শেষ কথা: মেয়েদের ওজন কমানোর ব্যায়াম

বর্তমান সময়ে সকল মেয়েদের ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে খাদ্য তালিকা ঠিক না থাকা। বর্তমান সময়ে মেয়েদের এমন কাজ করতে হয় না এ কারণে ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওজন কমাতে হলে নিয়মিত ব্যায়াম করার পাশাপাশি সঠিক পরিমাণ খাবার খেতে হবে।

উপরে যে সব ব্যায়াম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে আমার বিশ্বাস সে সব ঠিকমতো করলে আপনার ওজন কমে যাবে। প্রেম করার পাশাপাশি বেশি পরিমাণ ফল খেতে হবে। এবং চরিত্র খাবার পরিহার করতে হবে। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

শেয়ার করুন

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *