দীর্ঘদিন নিম পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
|

দীর্ঘদিন নিম পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আজকের আলোচ্য বিষয়বস্তুঃ

দীর্ঘদিন নিম পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কের আলোচনা করা হলো। নিম গাছের উপকারিতা বলে শেষ করা সম্ভব না। নিম গাছের মূল থেকে পাতা সবগুলোই ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নিম গাছ একটি চিরহরিৎ উদ্ভিদ।

যার ফলে নিম গাছের পাতা সব সময় থাকে। নিম গাছ দেখলে মনে হয় এটা মানুষের উপকারের জন্যে পৃথিবীতে এসেছে। এশিয়া মহাদেশে সব জায়গায় নিম গাছ দেখা যায়। দীর্ঘদিন নিমপাতা খাবার উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে।

সবকিছু সঠিক সময় রয়েছে এবং সঠিক পরিমাণ রয়েছে। নিম পাতার ক্ষেত্রেও তাই। অতিরিক্ত সেবন করলে নিম পাতার অপকারিতা রয়েছে। সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণে সেবন করলে বা ব্যবহার করলে পাতার উপকারিতা রয়েছে।

নিম পাতা খেলে প্রায় সকল ধরনের অশোক থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এই কাছে সকল ধরনের উপাদান রয়েছে। বিশেষ করে রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার উপাদান।

নিয়মিত ব্যবহার বা সেবন করা হলে মানবদেহের অনেক উপকারিতা রয়েছে। নিম্নে দীর্ঘদিন নিম পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিশ্লেষণ করা হলো।সূচিপত্রঃ

নিম পাতার পুষ্টিগত উপাদান:

নিমগাছ হল প্রচুর ঔষধি গুণ সমৃদ্ধ। প্রাচীনকাল থেকেই নিম গাছকে ঔষধি গাছ হিসেবে পরিচিত। অতীতকালে চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল গ্রাম্য পরিবেশের। ওই সময় ডাক্তার ছিল না গ্রামের কবিরাজ মানুষের চিকিৎসা করতো।

উন্নত প্রযুক্তি না থাকা সত্বেও কবিরাজরা নিম গাছ ঔষধি গাছ হিসেবে ব্যবহার করতো। বর্তমান সময় রিসার্চ করে দেখা গিয়েছে নিম পাতার পুষ্টিগত উপাদান সম্পর্কে। নিম্নে নিমপাতা পুষ্টিগত উপাদান তুলে ধরা হলো:

                                                    নিমপাতার পুষ্টিগুণ ও উপাদান

নিম পাতার উপাদানপুষ্টিগুণের পরিমাণ
প্রোটিন২.৪৮ গ্রাম
ফাইবার৬.৭৭ গ্রাম
আয়রন৫.৯৮ মিলি গ্রাম
ক্যালোরি৪৫ মিলি গ্রাম
ফ্যাট০.০০৩ গ্রাম
ক্যালসিয়াম১৭৫.৫ মিলি গ্রাম
ফসফরাস২৩ মিলি গ্রাম
সোডিয়াম২৫.২৭ মিলি গ্রাম
পটাশিয়াম৮৮.৯ মিলি গ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম৪৪.৪৫ মিলি গ্রাম

এখানে উল্লেখ করা হয়েছে এক কাপ পরিমান নিম পাতার পুষ্টি উপাদান। উপরে ছকের দিকে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন মানবদেহের উপকারী সকল উপাদান নিম পাতায় রয়েছে। নিম পাতা খেলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা নেয়। কারণ নিম পাতায় ফ্যাটের পরিমাণ অনেক কম।

আরও পড়ুনঃ ডুমুর ফল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

যা শরীরের জন্য কোন প্রভাব ফেলতে পারে না। নিম পাতায় সকল ধরনের উপাদান থাকার কারণেই একে ঔষধি বলা হয়ে থাকে। উপরের আলোচনা থেকে আমরা সকলে জানলাম নিম পাতার পুষ্টিগুণ ও উপাদান সম্পর্কে।

নিম পাতার উপকারিতা: দীর্ঘদিন নিম পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

নিম পাতা উপকারিতা অনেক রয়েছে। নিম পাতা দিয়ে সকল রোগের ওষুধ মনে করা হয়। কারণ, সব ধরনের ঔষধি গুন নিম পাতায় রয়েছে। নিম্নে নিমপাতার কি কি উপকারিতা রয়েছে তুলে ধরা হলো:

  1. নিমপাতা রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে
  2. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
  3. দাঁত ও মাড়ির সমস্যা দূর করে
  4. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে
  5.  আলসারের চিকিৎসা
  6. লিভার সুস্থ রাখে
  7. কৃমি নাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে
  8. ওজন কমাতে
  9. ত্বকের যত্নে নিম পাতা
  10. চুলের যত্নে নিম পাতা
  11. মাথার খুশকি দূর করে
  12. অ্যান্টিবায়োটিক এর পরিমাণ বৃদ্ধি করে

নিম পাতা রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে:

মানবদেহের রক্ত পরিষ্কার করতে নিম পাতা খুবই উপকারী একটি উপাদান। নিয়মিত নিম পাতার রস খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখে। যাদের অতিরিক্ত শর্করা রয়েছে সেটা কমিয়ে দেয়। এবং রক্তে বিভিন্ন ধরনের দূষিত পদার্থ থাকে।

নিম পাতা রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে

নিয়মিত নিম পাতার রস খেলে দূষিত পদার্থ রক্ত থেকে বেরিয়ে যায়। যার ফলে রক্ত পরিষ্কার থাকে। এবং হৃদপিন্ডের গতি স্বাভাবিক রাখে। নিম পাতা শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে এবং উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে:

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নিম পাতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বর্তমান সময়ে অনেকের মধ্যেই উচ্চরক্তচাপ রয়েছে। সমস্যাটি দিন দিন বেড়ে চলেছে। কিন্তু নিয়মিত নিম পাতা খাওয়ার ফলে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব। নিমপাতার উপস্থিত উপাদানগুলো রক্ত পরিষ্কার করে এবং রক্ত চলাচল সঠিক রাখে।

এছাড়াও রক্ত বিশুদ্ধ করে। নিয়মিত নিম পাতা খাওয়ার ফলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকার পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। খালি পেটে যদি প্রতিদিন এক কাপ পরিমাণ নিমপাতা রস খাওয়া হয় তাহলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব।

দাঁত ও মাড়ির সমস্যা দূর করে:

দাঁত ও মাড়ির সমস্যা দূর করতে নিমপাতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। অনেকেরই দাঁত ও মাড়ির অনেক সমস্যা হয়। নিয়মিত দাঁত পরিষ্কার না করলে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু আক্রমণ করে। যার ফলে দাঁতের গোড়ায় অনেক ধরনের ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এবং মাড়ি ব্যথা করে।

এসব থেকে বাঁচতে নিমের ডালের দাতল ব্যবহার করতে পারেন। নিমের ডালের দাতল ব্যবহার করলে দাঁতের গোড়া শক্ত হয় এবং মুখে থাকা জীবাণু ধ্বংস হয়।

অনেকের মুখে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। দাঁতের ফাঁকে খাবার আটকে থাকে এবং মুখের গন্ধ হয়। আস্তে আস্তে ওইসব জায়গায় ঘায়ের সৃষ্টি হয়। এইভাবে আস্তে আস্তে মাড়ির সমস্যা সৃষ্টি হয়।

এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য নিমপাতার ব্যবহার করতে পারেন। ব্যবহারের নিয়ম হচ্ছে নিম পাতার রস করে গরম পানি দিয়ে মুখ ধত করা। নিয়মিত নিম পাতার পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করলে দাঁত ও মাড়ি মজবুত হয়।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখে:

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিম পাতা খুব কার্যকরী ভূমিকা রাখে। রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেলে ডায়াবেটিস হয়। ডায়াবেটিস এর স্বাভাবিক মাত্রা ৬.৫। মাত্রা বেশি হলে ডায়াবেটিস বলে ধরা হয়। রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ রাখতে নিমপাতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

আরও পড়ুনঃ খেজুর খাওয়ার নিয়ম? খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা

একটি গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, নিমপাতায় প্রচুর পরিমাণ হাইপোগ্লাইসেমিক উপাদান রয়েছে। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগজীবাণু ধ্বংস করে।

আলসারের চিকিৎসা:

আলসারের চিকিৎসা নিমপাতার ভূমিকা রয়েছে। আলসার বলতে পাকস্থলীর ক্ষতকে বোঝানো হয়। এই সমস্যাটি হয় বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর খাবার খেলে। অনেক সময় এসিডিটির কারনেও পাকস্থলীতে আলসার হয়ে থাকে।

এই সমস্যাটি দূর করা সম্ভব নিয়মিত নিম পাতার রস খেলে। মনের পাতায় প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিবায়োটিক থাকে। যা ঘা শুকাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। আলসারের জন্য নিম পাতা খাওয়ার কিছু নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। সবচেয়ে ভালো সময় হচ্ছে সকালে খালি পেটে।

লিভার সুস্থ রাখে:

মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের নাম লিভার বা পাকস্থলী। আমরা যেসব খাবার খায় লিভার বা পাকস্থলী পরিপাকতন্ত্র আমাদের শক্তিমান দিয়ে থাকে। কিন্তু লিভার বা পাকস্থলী সুস্থ না থাকে তাহলে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

খাবার আমাদের শক্তির যোগান দেয়। এই কারণে, লিভার সুস্থ রাখার এক গুরুত্বপূর্ণ কাজ। নিয়মিত নিম পাতা খেলে লিভার সুস্থ রাখার সম্ভব। কারণ নিমপাতায় সকল ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যা মানবদেহের সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সুস্থ রাখে।

লিভার সুস্থ রাখতে নিম পাতার রস প্রতিদিন খালি পেটে খেতে হবে। খাওয়ার কিছু নির্দিষ্ট পরিমাণ রয়েছে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে সমস্যা হতে পারে। কারণ নিম পাতা অনেক তিতা হয়ে থাকে।

কৃমি নাশে নিমপাতার ভূমিকা:

নিম পাতা কৃমি নাশে অপরিসীম ভূমিকা রাখে। যদি মানবদেহের কৃমির বসবাস শুরু হয় তাহলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। পেট বড় হয়ে যায়। দিনদিন ওজন কমতে থাকে। শিশুদের চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে যায়। নিজের চেষ্টায় কৃমিনাশ করা সম্ভব।

নিম গাছের মূলের ছাল শুকিয়ে গুঁড়া করতে হবে। এবং পরিমাণমতো গরম পানির সাথে মিশিয়ে সেবন করতে হবে। কিছুদিন নিমের ছালের গুড়া সেবন করলে কৃমি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

ওজন কমাতে:

ওজন কমাতে নিম পাতা অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে দেহের ওজন দিন দিন বেড়ে চলেছে। ওজন কমানোর সঠিক উপায় অনেকের জানা নায়। এ কারণে ওজন বেড়ে চলেছে। নিয়মিতভাবে চলাফেরা এবং খাদ্য তালিকা ঠিক রাখবে ওজন কমানো সম্ভব।

আরও পড়ুনঃ মসুর ডালের উপকারিতা ও অপকারিতা

নিমের ফুল মানবদেহের চর্বি কমাতে এবং মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিতভাবে নিম পাতার রস অথবা নিমের ফুলের রস খেলে ওজন কমে। আপনি যদি তাড়াতাড়ি ওজন কমাতে চান তাহলে নিম পাতার রসের সাথে মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে খেতে হবে। তাহলে খুব কম সময়ে ওজন কমানো সম্ভব।

ত্বকের যত্নে নিম পাতা:

অনেক সময় ত্বকের উপর বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। যেমন, পিম্পলস, ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইট হেডস এবং ব্রণ। এসব সমস্যার কারণে ত্বকের সৌন্দর্য কমে যায়। অনেক আগে থেকেই মানুষ রূপচর্চা নিয়ে সচেতন। কারণ সবাই সৌন্দর্যের পূজারী।

এসব কারণেই মানুষ ত্বকের যত্ন নিয়ে থাকে। বহুকাল আগে থেকেই ত্বকের যত্নে নিম পাতা ব্যবহার হয়ে আসছে। নিমপাতার প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ই থাকে। ভিটামিন ই ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। এসব কারণেই ত্বকের যত্নে নিম পাতা ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

চুলের যত্নে নিম পাতা:

চুলের যত্নে নিম পাতা ব্যবহার হয়ে আসছে অনেকদিন থেকে। বর্তমান সময়ে প্রায় মানুষের অল্প বয়সে চুল পড়ে যাচ্ছে। অনেকের চুল অল্প বয়সে পেকে যাচ্ছে। এসব হয় চুলের গোড়া দুর্বল হওয়ার কারণে। এছাড়াও মাথায় বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ হয়।

যার ফলে মাথায় ফুসকুড়ি বের হয় এবং খুশকি সৃষ্টি হয়। এসব থেকে বাঁচতে নিমপাতার উপকারিতা রয়েছে। নিয়মিতভাবে নিম পাতা মাথায় ব্যবহার করলে চুলের গোড়া শক্ত হয় এবং চুল পড়া বন্ধ হয়।

নিম পাতায় ভিটামিন ই থাকে। ভিটামিন ই চুলের গোড়া মজবুত করে এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। নিমপাতায় ভিটামিনের প্রায় সকল উপাদান রয়েছে। যার ফলে মাথার সকল সমস্যা দূর হয়। এবং মাথায় নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।

চুলের যত্নে নিমপাতার অনেক ভূমিকা রয়েছে। নিয়মিত ব্যবহারের ফলে চুল মজবুত হয়। চুল পড়া বন্ধের পাশাপাশি ঘন করতে সাহায্য করে।

মাথার খুশকি দূর করে:

মাথার খুশকি বলতে আমরা বুঝি মাথায় সাদা সাদা ময়লা জমে থাকা। এটা সাধারণত হয় মাথায় কোন ধরনের চুলকানি বা ফুসকুড়ি হলে। চুলকানি সাধারণত হয়ে থাকে মাতা অপরিষ্কার থাকলে বা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ করলে।

এই সমস্যা থেকে বাঁচতে নিয়মিত নিম পাতা ব্যবহার করতে পারেন। কারণ নিমপাতা প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিবায়োটিক থাকে যা জীবাণু ধ্বংস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত নিম পাতা বেটে মাথায় ব্যবহার করলে মাথা ঠান্ডা থাকে এবং মাথায় যেসব সমস্যা সৃষ্টি হয় সবথেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।

নিয়মিত মাথায় নিমপাতা ব্যাবহার করলে খোরশেদ এর পাশাপাশি চুল পড়া বন্ধ হয় এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।

অ্যান্টিবায়োটিক এর পরিমাণ বৃদ্ধি করে:

মানব দেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক। মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। যার দেহে অ্যান্টিবায়োটিক পরিবহন যত বেশি তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ততবেশি। শরিলে এই উপাদানটি সঠিক মাত্রায় থাকলে কোন ধরনের রোগ জীবাণু আক্রমণ করতে পারে না।

নিমপাতা প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে। এ কারণে নিয়মিত নিম পাতা সেবন করলে সকল ধরনের রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। নিম পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম হচ্ছে ভালোভাবে বেটে নিতে হবে তারপর ছাঁকনি দিয়ে ছেকে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে হবে।

এভাবে নিয়মিত খাওয়ার ফলে সকল ধরনের অসুখ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। নিমপাতার উপকারিতা বলে শেষ করা সম্ভব না। দীর্ঘদিন নিম পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। নিম পাতার উপকারিতা পরিমাণ বেশি।

সকল কিছুর উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। পরিমাণমতো খেলে উপকার হয়েছে কিন্তু যদি অধিকমাত্রায় খাওয়া হয় তাহলে অপকারিতা হওয়া সম্ভব থাকে।

নিম পাতা খাওয়ার পদ্ধতি:

নিম পাতা মানবদেহের জন্য অনেক উপকারী। নিম গাছের গোড়া থেকে পাতা সবগুলোই ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কিন্তু অনেকে সঠিক ব্যবহার না জানার ফলে উপকৃত হয় না। কারণ, সঠিক ব্যবহার না করলে ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি থাকে। নিম্নে নিমপাতা খাওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

শরবত করে নিম পাতা খাওয়া যায়। শরবত খাওয়ায় সঠিক উপায় হচ্ছে। প্রথমে নিম পাতা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে তারপর বেটে নিতে হবে। বাটা নিম পাতা ছাকনি দিয়ে অথবা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ছেকে নিতে হবে।

তারপর রস টুকু খেতে হবে। নিম পাতা অনেক তিতা হয়ে থাকে ইচ্ছা করলে এর সাথে মধু মিশ্রিত করে খেতে পারেন। বড়ি করে নিম পাতা খাওয়া যায়। নিম পাতার বড়ি করতে হলে প্রথমে নিমপাতা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর পানি ছাড়া ভালোভাবে বেটে নিতে হবে।

এরপর বাটা নিম পাতা বরি আকৃতি করে রধে শুকাতে দিতে হবে। শুকানোর পর বড়ি গুলো সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। তারপর প্রতিদিন একটু পরে বড়ি খেতে পারেন। এভাবে খেলে অনেক সুবিধা হয়। কারণ নিমপাতা অনেক তিতা হয়ে থাকে। কিন্তু ভুল করে ফেলে সহজেই পাওয়া যায় যার ফলে তিতা লাগে না।

গুড়া করে নিম পাতা খাওয়া যায়। নিম পাতার পাশাপাশি শিকড়ের ছাল ও গুড়া করে খায়া হয়। নিম পাতা গুড়া করতে হলে প্রথমে। নিমপাতা ভালোভাবে রোদে শুকাতে হবে। শুকনা নিম পাতা অথবা শিকড়ের ছাল ভালোভাবে বেটে নিতে হবে।

এমন ভাবে বাটতে হবে যেন আঠার মত হয়। এভাবে নিমপাতা অনেক দিন সংরক্ষণ করে রাখা যায়। এভাবে নিম পাতা খেলে তিতা কম লাগে এবং খুব সহজেই উপকৃত হওয়া যায়।

উপরে নিম পাতা খায়ার সঠিক উপায় সমূহ তুলে ধরা হয়েছে। উপরের যেকোনো ভাবে নিম পাতা খান না কেন উপকৃত হবেন। দীর্ঘদিন নিম পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে।

নিম পাতা ব্যবহারের পদ্ধতি: | নিম পাতা খাওয়ার উপকারিতা

নিম পাতা খাওয়ার পাশাপাশি অনেকভাবে অনেক কাজে ব্যবহার করা হয়। নিম পাতা ব্যবহারের কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। যেমন মাথা সমস্যার জন্য নিম পাতার ব্যবহার। সেসময় নিম পাতা ভালোভাবে বেটে তারপর মাথায় ব্যবহার করতে হয়।

আবার অনেক সময় শরীরের বিভিন্ন ক্ষতস্থানে নিমপাতার ব্যবহার করতে হয়। সেসময় বাটা নিমপাতা ব্যবহার করা যায়। কারণ ক্ষতস্থান ভেজাল থাকে যার কারণে শুকনা জিনিস ক্ষতস্থানে ব্যবহার করতে হয়।

ওই সময় ক্ষতস্থানে নিম পাতার গুড়া বা নিমের মূলের ছালের গুড়া ব্যবহার করতে হয়। এছাড়াও অনেকভাবে নিমপাতার ব্যবহার করা সম্ভব।

নিম পাতার অপকারিতা:

প্রতিটা জিনিসের যেমন ভালোবেসে থাকে তার পাশাপাশি খারাপ দিক থাকে। কারণ পৃথিবীতে কোন কিছুই পরিপূর্ণ না। নিমপাতার অনেক উপকারিতা রয়েছে। কিন্তু তার সাথে কিছু অউপকারিতা রয়েছে। অপকারিতা পিছনে আমাদের হাত রয়েছে।

কারণ, অনেকে নিম পাতার উপকারিতা রয়েছে মনে পড়ে মাত্রা অতিরিক্ত সেবন করে ফেলে যার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। নিম্নে সমস্যাগুলো তুলে ধরা হলো:

  • কিছু কিছু সময় নিম পাতা অতিরিক্ত সেবনের ফলে পাকস্থলী সমস্যার সৃষ্টি হয়। নিমপাতা প্রচুর পরিমাণ তিতা হয়ে থাকে যার ফলে পাকস্থলির সমস্যার সৃষ্টি হয়। এ কারণে মাত্রা অতিরিক্ত নিমপাতা সেবন করলে অপকারিতার সম্ভাবনা থাকে।
  • কোন ধরনের শারীরিক অপারেশন করল নিম পাতা খাবার দিতে হবে। কারণ নিমপাতা সকল ধরনের ভিটামিন থাকে যার ফলে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
  • গর্ভবতী অবস্থায় মেয়েদের নিম পাতা খাওয়া উচিত নয়। কারণ মায়ের গর্ভে বাচ্চা মায়ের খাবা সেবন করে থাকে। নিমপাতা অনেক দিতে হলে বাচ্চার সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
  • যেসব লোকের নিম্ন রক্তচাপ এবং প্রস্রাবের সমস্যা রয়েছে তাদের অতিরিক্ত নিম পাতা খাওয়া ঠিক না। কারণ নিম পাতা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ কিন্তু নিম্ন রক্তচাপ আরো নিম্ন করে দেয়। যার ফলে উপকারের পরিবর্তে অউপকারিতা বেশি হয়।

অতিরিক্ত নিমপাতা সেবনের ফলে সকল ধরনের সমস্যা হতে পারে। এর কারণে অতিরিক্ত নিরাপত্তা সেবন এবং ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। দীর্ঘদিন নিম পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোই রয়েছে। তাই সকল কিছু সঠিক পরিমাণ ব্যবহার করতে হবে। অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না।

শেষ কথা: দীর্ঘদিন নিম পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

দীর্ঘদিন নিম পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। নিমপাতার উপকারিতা এবং অপকারিতা দুটোই আলোচনা করা হয়েছে। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়লে নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা পাবেন। নিম পাতার উপকারিতা রয়েছে। এবং অপকারিতা।

প্রায় সকল ধরনের ঔষধ হিসেবে নিম পাতা ব্যবহার করা হয়। আমার বিশ্বাস সম্পন্ন লেখাটি পড়লে দীর্ঘদিন নিম পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ধারণা পাবেন। লেখার মধ্যে কোন ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

শেয়ার করুন

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *