অনলাইনে মামলা দেখার উপায়

অনলাইনে মামলা দেখার উপায়

মামলা সম্পর্কে কম বেশি সকলের ধারণা রয়েছে। কোন কিছুর সঠিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলো মামলা। মামলার অনেক ধরণ রয়েছে। বর্তমান সময়ে মামলা করা খুব সহজ হয়ে পড়েছে। যে কারণে কোন সাধারণ ঘটনা ঘটলে মামলা করেছে।

অনলাইনে মামলা দেখার উপায় রয়েছে। এই কাজটি সম্ভব হয়েছে আধুনিকতার কল্যাণে। অনলাইনে মামলা দেখার ফলে তেমন ঝামেলায় পড়তে হয় না। ঘরে বসেই মামলা সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায়। নিম্নে, অনলাইনে মামলা দেখার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

মামলা কি?

মামলা অর্থ অভিযোগ করা। কোন ঘটনার জন্য সঠিক বিচারের আশায় থানা বা আদালতে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার নাম হল মামলা। মামলা বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে। যেমন ফৌজদারী মামলা ও দেওয়ানী মামলা। এগুলো নির্ধারিত হয়ে থাকে কেসে বা মামলার ধরনের উপর।

মামলা কত প্রকার কি কি?

মামলা সম্পর্কে আমাদের কম বেশি সকলে ধারণার রয়েছে। মামলা সাধারণত তিন প্রকার। নিম্নে মামলার প্রকারভে তুলে ধরা হলো:

  1. সিআর মামলা (Court   ragister)
  2.  জিআর মামলা ( General ragister)
  3. অপমৃত্যু মামলা (Unnatural death)

সি আর মামলা কি?

ফৌজদারী মামলা যদি পুলিশ গ্রহণ করতে না চাই তখন আদালতে মামলা দায়ের করা যায়। আদালতে দায়ের করা মামলাটিকে সি আর মামলা বলা হয়। এসব মামলা করতে হয় একজন আইনজীবীর মাধ্যমে। যাকে আমরা লয়ার বা উকিল নামে জানি।

মামলা নাম্বার কি?

প্রতিটি বিষয়ের সিরিয়াল নাম্বার রয়েছে। ঠিক একই ভাবে মামলা নাম্বার রয়েছে। কারণ মামলা নাম্বার না থাকলে মামলা খুঁজে বের করতে অনেক সময় লাগে। এই কারণে প্রতিটি মামলার নির্দিষ্ট নাম্বার থাকে। এই নাম্বারটি কি মামলা নাম্বার বলা হয়।

মামলা অনুসন্ধান:

কোন ব্যক্তির উপর মামলা করলে, সেই ব্যক্তির মামলার নকল তুলতে হয়। যার জন্য মামলা অনুসন্ধান করতে হয়। মামলা অনুসন্ধান দুই জায়গায় করা যায়। একটি হলো যে জায়গায় মামলা করা হয়। আরেকটি হলো আদালতে। কারণ প্রতিটি মামলা আদালতে লিপিবদ্ধ থাকে।

মামলা নাম্বার সঠিক করে বলতে পারলে খুব সহজে মামলা অনুসন্ধান করা যায়। মামলা অনুসন্ধান করে সঠিক পদক্ষেপ না নিলে আসামির উপর ওয়ারেন্ট জারি হয়ে যায়।

থানার মামলা দেখার উপায়:

মামলা সাধারণত করা হয় থানায়। যার কারণে মামলা দেখতে হলে থানায় যেতে হয়। থানায় মামলা দেখার উপায় হচ্ছে, প্রথমে মামলা নাম্বার জানতে হবে। যদি মামলা নম্বর না জানা থাকে তাহলে মামলা কারি বা বাদির নাম জানতে হবে। তাহলে খুব সহজেই মামলা খুঁজে বের করা যাবে।

তবে মামলা করার এক থেকে দুই দিনের মধ্যে হলে খুব সহজে মামলা দেখা যায়। থানায় মামলা দেখার জন্য ওসির সাথে কথা বলতে হয়। তিনি অনুমতি দিলে থানায় মামলা দেখা যায়। বর্তমানে অনলাইনে ঘরে বসেও মামলা দেখা যায়।

অনলাইনে মামলা দেখার উপায়:

অনলাইনে মামলা দেখার উপায় থাকার কারণে মানুষের অনেক সুবিধা হয়েছে। কারণ ঘরে বসে মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমে মামলা দেখতে পাচ্ছে। অনলাইনে মামলা দেখার দুইটি মাধ্যম রয়েছে। এক নম্বর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এবং দুই নাম্বার অ্যাপসের মাধ্যমে।

ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মামলা দেখতে হলে প্রথমে এই https://causelist.judiciary.gov.bd/ প্রবেশ করতে হবে। তারপর সেখানে গিয়ে আপনার বিভাগ, আপনার জেলা, আদালতের নাম এবং মামলা নাম্বার দিতে হবে। তাহলে আপনি আপনার মামলা দেখতে পাবেন।

অনলাইনে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস এর মাধ্যমে মামলা দেখার জন্য “MY COURT” অ্যাপস ফোন ইন্সটল করতে হবে। এই অ্যাপ থেকে মামলা দেখার জন্য প্রথমে ফোনের ইন্টারনেট চালু করতে হবে। তারপরে অ্যাপসে প্রবেশ করতে হবে। সেখানে একাউন্ট খুলতে হবে।

তারপর সেখান থেকে আমার মামলা অপশনে প্রবেশ করতে হবে। তারপর সেখানে সকল ডিটেলস দিতে হবে। তারপর সেখান থেকে মামলা দেখতে পারবেন।

১৪৫ ধারা বলতে কি বুঝায়?

যদি কোন ব্যাক্তির দখলি জমি কেহ দখল করে বা দখল করার চেষ্টা করে তখন ১৪৫ ধারার মামলা করতে হয়। এই মামলা করতে হয় জমি দখল করার ২ মাসের মধ্যে। আবার যদি কেহ ধমকি দেয় তাহলেও মামলা করতে পারবেন ১৪৫ ধারায়। এই ধারারই শুধু দখল সর্ম্পকে বিচার করা হয়।

৪২০ ধারা কি জামিন যোগ্য?

৪২০ ধারার মামলা করা হয় কেহ পতারনা করলে। যদি কোন ব্যাক্তি জমি বিক্রয় করে সেটা লেখে না দেয় তাহলে ৪২০ ধারায় মামলা করা হয়। এই মামলায় সাধারনতো জরিমানা হয়। কিন্তু কোন ব্যাক্তির যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা মৃত্যুদন্ড হয় না। ৪২০ ধারা প্রতারনার মামলা।

বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ স্তর কোনটি?

বিচার কার্য্য প্ররিচালিত হয় কোর্ট এর মাধ্যমে। বাংলাদেশের বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ স্তর সুপ্রীম কোর্ট।

বাংলাদেশের হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট কি একই?

বাংলাদেশের হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট এর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। বাংলাদেশর সংবিধানের ৯৪ নাম অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট নামে বাংলাদেশের একটি সর্বোচ্চ আদালত থাকবে এবং আপিল বিভাগ এবং হাই কোর্ট বিভাগ নিয়ে তা গঠিত হবে।

এই থেকে বোঝা যায় বাংলাদেশের হাইকোর্টের থেকে সুপ্রিম কোর্ট বড়। এবং ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের বেশি। এবং কোন কাজের জন্য সুপ্রিম কোর্ট দায়ী নয়।

কেস ও জিডি এর মধ্যে পার্থক্য কি?

কেস ও জিডি এর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। কোন ধরনের অন্যায় মূলক কাজের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলো কেস বা মামলা। বেশিরভাগ সময় ন্যায় পাওয়ার জন্য কেস করা হয়। জিডি ঠিক একই রকম তবে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

যদি কোন কিছু হারিয়ে যায় তাহলে লিখিতভাবে অভিযোগ দেওয়া হলো জিডি। এছাড়াও কোন ব্যক্তি যদি হুমকি দিয়ে থাকে তাহলে অভিযোগ দেওয়া হয় সেটাই জিডি।

কারো নামে মামলা আছে কিনা জানার উপায়:

কার নামে মামলা আছে কিনা জানার উপায় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট থানা অথবা সংশ্লিষ্ট আদালতে গিয়ে খোঁজ নেওয়া। থানা এবং আদালতে সি আর রেজিস্ট্রেশন বই রয়েছে। সেখানে সকল কেসের তথ্য রয়েছে। সেই বই থেকে জানা যায় কারো নামে মামলা আছে কিনা।

শেষ কথা: অনলাইনে মামলা দেখার উপায়

বর্তমান সমাজে অনেকেই শক্তি এবং টাকা দিয়ে অন্যায় কাজ করে। তাদের মোকাবেলা করার জন্য আইনের সহায়তার প্রয়োজন পড়ে। আইনের সহায়তার জন্য মামলা করতে হয়। বর্তমানে অনলাইনে মামলা দেখার উপায় রয়েছে।

এছাড়াও বর্তমান সময়ে অনলাইনে মাধ্যমে মামলা করা যায়। লেখার মধ্যে কোন ভুল হলে ক্ষমা করে দেবেন। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

শেয়ার করুন

Similar Posts

  • বাচ্চাদের স্কুল পলায়নের কতগুলো বিশেষ কারণ-জেনে নিন

    স্কুল পলায়ন কি? স্কুল পলায়ন একটি সাধারণ সমস্যামূলক আচরণ। শিশুর মৌলিক চাহিদার অতৃপ্তি থেকে এই সমস্যামূলক আচরণের উদ্ভব হয়। প্রায়ই দেখা যায় যে বিভিন্ন শিশু বাড়ি থেকে বইখাতা নিয়ে বের হয়।কিন্তু বিদ্যালয়ে না গিয়ে বন্ধুবান্ধবদের সাথে আড্ডা দেয়, সিনেমা দেখে বা বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকে। আবার এমনও দেখা যায় যে, শিশু বিদ্যালয়ে গিয়ে ২/১…

    শেয়ার করুন
  • কিভাবে হিন্দি ভাষা শিখা যায়/হিন্দি কথোপকথন

    আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। আমরা বাংলায় সহজেই মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে। তবে বর্তমানে মানুষ ইংরেজিও হিন্দি শিখার চেষ্টা করছে। কারণ, প্রতিটা অফিসে ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে হয়। এজন্য সবাই ইংরেজি ভাষা শিখছে। তবে বাংলাদেশের মানুষের কাছে হিন্দি ভাষা শেখার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ বর্তমানে সবাই হিন্দি ভাষার সিনেমা দেখ। এছাড়াও অনেকের কাজের সন্ধানে বিদেশ যাচ্ছে। সেখানে প্রায় সকলের হিন্দি…

    শেয়ার করুন
  • লেখাপড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধি করার উপায়সমূহ

    লেখাপড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধি করার উপায়সমূহ মনােযােগ দেওয়ার কাজটি বিশ্লেষণ করলে আমরা কতকগুলাে উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্যের সন্ধান পাই। মনােযােগ একটি ইচ্ছামূলক প্রক্রিয়া ও আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে যে কোন একদিকে মনােযােগী হই। এই মানসিক প্রক্রিয়াটিকে একটি বিশেষ দিকে চালিত করতে হয়। এই প্রক্রিয়া চেতনাকে বস্তুর উপর কেন্দ্রীভূত করে বস্তুর ধারণাকে সুস্পষ্ট করে। আরও দেখুনঃ জেনে নিন, লেখাপড়ায় কিভাবে মনোযোগ…

    শেয়ার করুন
  • জেন্ডার কি? জেন্ডার কত প্রকার কি কি?

    জেন্ডার কি? জেন্ডার কত প্রকার কি কি?: জেন্ডার (Gender) শব্দের অর্থ লিঙ্গ। জেন্ডার বা লিঙ্গ ৪ প্রকার। যথা: পুরুষ, নারী, ক্লীপ ও উভায় লিঙ্গ। জেন্ডার হচ্ছে নারী-পুরুষের মধ্যে পার্থ্যক্য সৃস্টি করে। জন্মগতভাবে ছেলে ও মেয়ে বাচ্চার মধ্যে লিঙ্গগত পার্থক্য থাকেনা। তবে সামাজিক কারণে নারী-পুরুষের মধ্যে আচার-আচরণের মধ্যে পার্থক্য দেখা যায়। জেন্ডার কি? জেন্ডার কত প্রকার কি…

    শেয়ার করুন
  • কাপড় থেকে মার্কারের দাগ তোলার উপায়

    সকল কাজে খাতা কলমের ব্যবহার রয়েছে। কারণ কলম ছাড়া কোন কিছু লেখা সম্ভব না। এখন প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হোয়াইট বোর্ড এবং মার্কার কলম ব্যবহার করা হয়। মার্কার কলম ব্যবহারের সময় অনেক সময় কাপড়ে দাগ লেগে যায়। যা সহজে উঠানো যায় না। কাপড় থেকে মার্কারের দাগ তোলার উপায় রয়েছে। তবে এর জন্য কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়। মার্কার কলমের দাগ কাপড়ে…

    শেয়ার করুন
  • একজন ছাত্রের অনগ্রসরতা দূর করার উপায়সমূহ

    একজন ছাত্রের অনগ্রসরতা দূর করার উপায়সমূহ অনগ্রসরতা দূর করার উপায় (Remedy of Backwardness): অনগ্রসরতা অনগ্রসরতা দূর করতে হলে দুই ধরনের পন্থা অবলম্বন করতে হবে। যথা- ক. নিরাময়মূলক পন্থা ও খ. প্রতিরােধমূলক পন্থা। ক. নিরাময়মূলক পন্থা: প্রথমতঃ দেখতে হবে শিক্ষার্থীর অনগ্রসরতার প্রকৃত কারণটি কী এবং সেই কারণটি দূর করাই শিক্ষার্থীর অনগ্রসরতা দূর করার প্রকৃষ্ট উপায়। যেমন-…

    শেয়ার করুন