করোনা ভাইরাস কি? এর লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়
করোনা ভাইরাস কি? এর লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়
করোনা ভাইরাস এমন একটি সংক্রামক ভাইরাস,যা এর আগে কখনো মানুষের মধ্যে কখনও ছড়ায়নি। এটি ২০১৯ সালে মানুষের মধ্যে আক্রমন শুরু করে। করোনা ভাইরাস অনেকগুলি ভাইরাসের একটি বড় রূপ, যা জীব-জন্তু বা মানুষের অসুখের কারণ হতে পারে।
আরও দেখুনঃ করোনার চেয়েও বেশি ভয়ানক ডেলটা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট
বেশ কয়েকটি করোনা ভাইরাস মিলে মানুষের মধ্যে সাধারণ ঠাণ্ডা লাগা থেকে শুরু করে মিডিল ইষ্ট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম এবং সিভিয়ার একিউট রেস্পিরেটরি সিন্ড্রোম এর মতো মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করতে পারে। করোনা ভাইরাসের আরেক নাম হল নভেল করোনা ভাইরাস।
কিভাবে ছড়ায়?
এটি অত্যন্ত দ্রুত ছড়াতে পারে এবং বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন যে, এ ভাইরাস একজন মানুষের দেহ থেকে আরেকজন মানুষের দেহে খুব দ্রুত ছড়াতে পারে। এই ভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে এটি একজনের দেহ থেকে আরেক জনের দেহে ছড়ায়। সাধারণ জ্বর বা ঠান্ডা লাগার মতো করেই এ ভাইরাস ছড়ায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে।
আরও দেখুনঃ করোনা পরিস্থিতিতে ঘরে বসে ইনকামের বিশাল সুযোগ পার্ট-২
করোনার লক্ষনগুলো কি?
- করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এই স্ট্রেন অত্যন্ত সংক্রামক। তাই খুব সহজেই একজনের থেকে আরেকজনের দেহে সংক্রমিত হচ্ছে।
- সাধারণ জ্বর খুব উচ্চ তাপমাত্রা, বারবার কফের প্রাদুর্ভাব, স্বাদ ও গন্ধ না থাকার লক্ষণগুলি করোনার খুব সাধারণ উপসর্গ।
- করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ের এই উপসর্গের সঙ্গে যুক্ত অনেক সময় জ্বর একশোর গণ্ডি পেরোয় না এবং বারবার তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
- জ্বর সবসময় করোনাভাইরাস নাও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে বারবার তাপমাত্রা মাপা উচিত।
- সাধারণ জ্বর, ঠান্ডা লেগে জ্বর ও করোনার মধ্যে তফাৎ রয়েছে। জ্বরের ক্ষেত্রে কফের আধিপত্য থাকে শরীরে।
- করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে কফ খুব মারাত্মক হয়। যাদের ফুসফুসে সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বুকে চাপ অনুভূত হয়।
- সাধারণত রোগের উপসর্গগুলো প্রকাশ পেতে গড়ে পাঁচ দিন সময় নেয়।
- মানুষের মধ্যে যখন ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেবে তখন বেশি মানুষকে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকবে তাদের। তবে ধারণা করা হচ্ছে যে নিজেরা অসুস্থ না থাকার সময়ও সুস্থ মানুষের দেহে ভাইরাস সংক্রমিত করতে পারে মানুষ।
- শুরুর দিকের উপসর্গ সাধারণ সর্দিজ্বর এবং সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্থ হওয়া স্বাভাবিক।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধের উপায়:
• বাইরে পরা ময়লা কাপড় দ্রুত ধুয়ে ফেলতে হবে।
• বাইরে থেকে ফিরে সাবান–পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে।
• কিছু খাওয়া কিংবা রান্না করার আগে হাত ভালো করে ধুতে হবে।
• চোখ, নাক ও মুখের সংস্পর্শ থেকে যত দূর সম্ভব হাত সরিয়ে রাখতে হবে।
• সর্দি-কাশি, জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি যাওয়া যাবে না।
- ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এই ভাইরাসটি অক্ষম হয়ে যায় বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়।
- ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এই ভাইরাস এতটাই দুর্বল হয়ে যায় যে মানবদেহের যেকোনো প্রতিরোধ ক্ষমতা এটির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।
- ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ভাইরাসটি পুরোপুরি মারা যায়। এই কাজটিই বাষ্প বা ভাপ করে থাকে।
- চিকিৎসকদের মতে, নাক ও মুখ দিয়ে ভাপ নিলেই করোনাভাইরাস নির্মূল করা সম্ভব।
- যদি সব মানুষ এক সপ্তাহ ধরে স্টিম ড্রাইভ চালানো শুরু করে, তবে মহামারিটি শিগগিরই শেষ হয়ে যাবে।
- অসুস্থ জীবজন্তু থেকে দূরে থাকতে হবে।
• খামার, গোয়ালঘর কিংবা বাজারের মতো জায়গা এড়িয়ে চলতে হবে।
• কোনো পশু স্পর্শ করার পর ভালোভাবে হাত ধুতে হবে।
• অপুষ্টি, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ নেন এবং যাঁদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম, তাঁদের বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
• ফলের রস এবং পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
• ডিম কিংবা মাংস রান্নার সময় ভালো করে সেদ্ধ করতে হবে।
• উচ্চ তাপমাত্রায় ও রোদে ভালোভাবে কাপড়, তোয়ালে, চাদর ইত্যাদি শুকিয়ে নিতে হবে।
• ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের যতটা সম্ভব গণপরিবহন এড়িয়ে চলতে হবে।
আরও দেখুনঃ করোনা পরিস্থিতিতে ঘরে বসে ইনকাম পার্ট- ১
উপরের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যে, করোনা ভাইরাস হল একটি মরন ব্যাধি ঘাতক ভাইরাস। যা মানুষকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। সুতরাং এ ভাইরাস যাতে আমাদের শরীরে আক্রমন ঘটাতে না পারে সেজন্য আমাদের সকলের সচেতন হওয়া উচিত এবং অন্যকে এ বিষয়ে সচেতন করা দরকার। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করব আমি এবং সকল মানুষকে আল্লাহ যেন এই ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা করে।
করোনা ভাইরাস সম্পর্কে আরও জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।