তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
| |

তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

তেঁতুল এমন একটি ফল যার নাম শুনলেই প্রতিটি মানুষের জিবে জল চলে আসে। ছেলে অথবা মেয়ে যেই হোক না কেনো তেঁতুলের নাম শুনলেই জিবে পানি আসবে এটাই স্বাভাবিক। আর তাই আজকে আমরা আপনাদের সাথে তেঁতুলের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আলোচনা করবো।

তেঁতুলের বৈজ্ঞানিক নাম

তেঁতুল একটি টক স্বাদের ফল এবং এটি অনেকের কাছে প্রিয়। Tamarindus Indica এর বৈজ্ঞানিক নাম।

Tamarind ইংরেজি নাম

তেঁতুলের ইংরেজি নাম (Melanesian Papeda)। এটা Droop. ফল একটি বিশেষ আবরণ ঝিল্লি সঙ্গে জল দিয়ে আচ্ছাদিত করা হয়। এটা কাঁচা বা রান্না করে খাওয়া যায়। এ কারণেই আমাদের দেশে তেঁতুল একটি জনপ্রিয় ফল।

তেঁতুলের পুষ্টিগুণ

তেঁতুলের পুষ্টিগুণতেঁতুলে আছে চোখ ধাঁধানো পুষ্টি। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, এর প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচাফলে (আহারোপযোগী) ক্যালসিয়াম আছে ২৪ মিলিগ্রাম এবং পাকাফলে রয়েছে ১৭০ মিলিগ্রাম। আয়রনের পরিমাণ কাঁচাফলে ১ মিলিগ্রাম এবং পাকাফলে আছে ১০.৯ মিলিগ্রাম করে।

কাঁচাফলে অন্য পুষ্টি উপাদানগুলো হলো- ১.১ গ্রাম আমিষ, ১৩.৯ গ্রাম শর্করা, ০.২ গ্রাম চর্বি, ০.০১ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি১, ০.০২ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি২, ৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ১.২ গ্রাম খনিজ লবণ এবং খাদ্যশক্তি আছে ৬২ কিলোক্যালরি। পাকা তেঁতুলে পুষ্টির পরিমাণ অনেক বেশি।

আরও পড়ুনঃ সয়াবিন তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা

এর প্রতি ফলে ৩.১ গ্রাম আমিষ, ৬৪.৪ গ্রাম শর্করা, ০.১ গ্রাম চর্বি, ০.০৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি২, ৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ০.১ মিলিগ্রাম ভিটামিন ই, ১১৩ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ২৮ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ৬২৮ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম, ৯২ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, ১.৩ মিলিগ্রাম সিলিনিয়াম, ০.১২ মিলিগ্রাম দস্তা, ০.৮৬ মিলিগ্রাম তামা এবং খাদ্যশক্তি আছে ২৮৩ কিলোক্যালরি।

তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা

  • তেঁতুল আমাশয়,কোষ্ঠবদ্ধতা ও পেট গরমে বেশ উপকার করে।
  • তেঁতুল পেটের বায়ু, হাত পা জ্বলায় বেশ উপকারি, এছাড়াও তেঁতুলের শরবত অনেক উপকারি।
  • ডায়বেটিস কন্ট্রোল করতে তেঁতুলের জুড়ি নাই।
  • শরীরের মেদ কমাতে তেঁতুল সাহায্যে করে।
  • তেঁতুল ক্যান্সারের নিয়ন্ত্রণে সাহায্যে করে।
  • তেঁতুলের পাতা ম্যালেরিয়া জ্বর সারায় পারে।
  • তেঁতুল পেপটিক আলসার রোধ করে।
  • তেঁতুল হৃদরোগের জন্য উপকারি।
  • তেঁতুল ক্ষত সারিয়ে তুলতে পারে।
  • ত্বক উজ্জ্বলতা বাড়াতে তেঁতুল সাহায্যে করে।
  • তেঁতুল জন্ডিস রোগে জন্য উপকারি।
  • পাকা তেঁতুল কাশি সারায় পারে।
  • তেঁতুল লিভার সুরক্ষিত রাখে।
  • তেঁতুল উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখে।
  • তেঁতুল মুখের লালা তৈরি করতে সাহায্যে করে।
  • তেঁতুল রক্ত পরিষ্কার করে।
  • তেঁতুল খিদে বাড়ায় বমি বমি ভাব দূর করে।
  • তেঁতুল রক্তে কোলেস্টেরল কমায়।
  • কোথায় কেটে গেলে ক্ষত সারাতে তেঁতুল গাছের বাকল সাহায্যে করে।
  • বুক ধড়ফর করা, মাথা ঘোরানো রোগে তেতুল উপকারি।
  • তেঁতুল পাতার রস কৃমিনাশক ও চোখ উঠা সারায়।
  • মুখে ঘা হলে তেঁতুলের পানিতে কুলি করলে উপকার পাওয়া যায়।
  • তেঁতুল মস্তিষ্কের জন্য উপকারি।
  • তেঁতুলের সাথে রসুন খেলে রক্তের চর্বি কমে।
  • তেঁতুল শিশুদের পেটের কৃমি দূর করে।
  • তেঁতুল বাত ও জয়েন্টের ব্যথা দূর করে।
  • তেঁতুল ত্বকের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ও ত্বক ভাল রাখে।
  • তেঁতুল শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়।

তেঁতুল খাওয়ার ক্ষতি কি?

তেঁতুলএকটি স্বাস্থ্যকর ফল যার অনেক গুণ রয়েছে যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। করলা খাওয়া ভালো, তবে বেশি নয়। অতিরিক্ত তেঁতুল খাওয়া রক্তচাপ কমাতে পারে।

আরও পড়ুনঃ তরমুজের উপকারিতা ও অপকারিতা

 

অ্যালার্জি হতে পারে- যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে। অ্যালার্জি আরও খারাপ হতে পারে। বেশি খেলে অ্যালার্জি হতে পারে। কিছু লোক ফুসকুড়ি, চুলকানি, ঘা, অজ্ঞান, বমি বা শ্বাস নিতে অসুবিধার মতো উপসর্গগুলি অনুভব করতে পারে।

তেঁতুলের অপকারিতা | তেঁতুল খাওয়ার অপকারিতা

তেঁতুল একটি অ্যাসিডিক ফল এবং খালি পেটে খাওয়া উচিত নয়। খুব বেশি তেঁতুল না খাওয়াও ভালো। অত্যধিক তেঁতুল খেলে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা হতে পারে। চলুন জেনে নেই তেঁতুলের অপকারিতা কি কি?

  • বেশি পরিমান তেঁতুল খেলে শরীরে রক্তপাত বৃদ্ধি করে।
  • তেঁতুল গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে।
  • তেঁতুল শরীরে এলার্জির মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
  • বেশি তেঁতুল খেলে ওজন দ্রুত কমে যায়।
  • তেঁতুলের মধ্যে টারটারিক এসিড থাকে, দাঁত নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
  • তেঁতুল পিওথলি সমস্যা হতে পারে।
  • অতিরিক্ত তেঁতুল খেলে জন্ডিসের মতো সমস্যা হতে পারে।
  • তেঁতুল শরীরে এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে তেঁতুল খেলে আপনার লো প্রেসার হতে পারে।

আপনারা যারা তেঁতুলের অপকারিতা সম্পর্কে জানতেন না, আশা করি তাদের জন্য বেশ উপকারি হবে আমাদের এই পোস্টটি। আপনি চাইলে উপরের বিষয় গুলো মাথায় রাখতে পারেন, এতে করে আপনি নিয়ম অনুযায়ী তেঁতুল খেতে পারেন।

শেষকথাঃ তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রতিটি জিনিসের উপকারের পাশাপাশি বেশকিছু অপকারিতাও থাকে। তেমনি তেঁতুলের বেশকিছু অপকারিতাও রয়েছে, যা আমরা এই পোস্টের ভেতরে আলোচনা করেছি। আপনি মনযোগ সহকারে পড়ে থাকলে এই বিষয় গুলো সম্পর্কে জেনে গিয়েছেন। ধন্যবাদ

শেয়ার করুন

Similar Posts