দেহে খাদ্য উপাদানের কাজ

দেহে খাদ্য উপাদানের কাজ

খাদ্য উপাদান

১. প্রোটিনের কাজ:

প্রােটিন জীবিত প্রাণী, উদ্ভিদ ও অনুজীবের দেহের অপরিহার্য উপাদান। পিত্তরস ছাড়া মানব দেহের প্রতিটি কোষে এবং দেহতরলে প্রােটিন প্রতিনিয়ত গঠন ও ক্ষয়পূরণের কাজ করে।

শারীরিক পরিশ্রমের জন্য প্রােটিন দেহে তাপও উৎপন্ন করে। রক্তরসের রােগ প্রতিরােধকারী এন্টিবডি প্রােটিন দিয়ে তৈরি।

প্রোটিনের কাজ
প্রোটিন দেহে রোগ প্রতিরোধ সৃষ্টি করে।

প্রোটিনের উৎস:

চিনাবাদাম, অন্যান্য বাদাম, সয়াবিন, মসুর ডাল, মুগ ডাল, ছােলার ডাল, মাষকলাইর ডাল, অন্যান্য ডাল, কাঁঠালের বীচি, সিমের বীচি, নারিকেল ইত্যাদি প্রোটিনের অন্যতম উৎস।

আদর্শ প্রােটিন—দুধ, ডিম, মাছ, মাংস।

২. স্নেহ পদার্থের কাজ:

তেল, চর্বি স্নেহ পদার্থ তাপ উৎপন্ন করে কাজ করার শক্তি জোগায়। ভিটামিন-এ ও ভিটামিন-ডি দ্রবীভূত করে কাজের উপযােগী করে। তেল ও চর্বির ফ্যাটি এসিড দেহত্বক সুস্থ রাখে।

স্নেহ পদার্থের খাদ্য উৎস:

সয়াবিন তেল, সরিষার তেল, বাদাম তেল, তিলের তেল, ঘি, মাখন, নারিকেলের তেল, মাছ-মাংসের তেল, চর্বি, বাদাম, জলপাই, মারজারিন ইত্যাদি স্নেহ পদার্থের প্রধান উৎস।

৩. শর্করার কাজ:

চিনি ও শ্বেতসার তাপ উৎপাদন করে কাজ করার শক্তি জোগায়।

শর্করার উৎস:

চাল, গম, আলু, ভুট্টা, গুড়, চিনি মধু, ফলের রস শর্করার প্রধান উৎস।

 

৪. ভিটামিনের কাজ:

ভিটামিন-এ (ক্যারােটিন) দেহের আবরককলা স্বাভাবিক ও সজীব রেখে দেহ-ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল করে। স্তিমিত ও উজ্জ্বল আলােকে দেখতে সাহায্য করে। ভিটামিন-এ এর অভাবে রাতকানা রোগ হয় এবং চোখ অন্ধ হয়ে যায়।

ভিটামিন-এ এর উৎস:

কলিজা, দুধ, ডিমের কুসুম, মাছ ও মাংসের তেল, চর্বি, মাখন, গাজর, কচু শাক, পুঁইশাক, কলমিশাক, ডাটাশাক, লালশাক, পুদিনা, ধনে ও বিলাতি ধনেপাতা এবং অন্যান্য রঙিন শাক ভিটামিন-এ এর প্রধান উৎস।

 

৫. ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এর কাজ:

ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স খাদ্য পরিপাক হওয়ার পর জীব কোষের দহন কাজে সাহায্য করে।

ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এর উৎস:

ঢেকিছাটা সিদ্ধ চাল, কলিজা, মাংস, ডাল, বাদাম, তিল, সীমের বীচি ইত্যাদি ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স এর প্রধান উৎস।

৬. রিবােফ্লাবিন এর কাজ:

রিবােফ্লাবিন পরিপাক ও বিপাক কাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

রিবােফ্লাবিন এর উৎস:

সবুজ-শাক, দুধ, চাল, কলিজা, ডিম, আটা ইত্যাদি রিবোফ্লাবিন এর প্রধান উৎস।

৭. নিয়াসিন এর কাজ:

নিয়াসিন পেলাগ্রা রােগ প্রতিরােধ করে।

নিয়োসিন এর উৎস:

কলিজা, মাংস, মাছ, চাল, আটা চিনাবাদাম।

৮. ভিটামিন-সি এর কাজ:

ভিটামিন সি দাঁত, হাড়, রক্তকণিকা এবং অন্যান্য জীবকোষ সুস্থ ও সবল রাখে। ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে। পুষ্টি ও বিপাক কাজে সাহায্য করে।

এর উৎস:

পেয়ারা, আমলকী, আমড়া, বাতাবিলেবু, কামরাঙ্গা, লেবু, কমলা, টমেটো সবুজ শাক, সজিনা, আনারস, ফুলকপি, কাঁচামরিচ, কেপসিকাম।

৯. ভিটামিন-ডি এর কাজ:

ভিটামিন-ডি খাদ্য থেকে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের বিশােষণ বাড়ায়।

উৎস:

মাছের তেল, ও দুধ ভিটামিন-ডি এর প্রধান উৎস।

উক্ত ভিটামিন যে সব খাদ্যে আছে সে সব খাদ্যেই অন্যান্য প্রয়ােজনীয় ভিটামিন বেশ ভাল পরিমাণে পাওয়া যায়।

১০. খনিজ পদার্থ:

ক্যালসিয়াম কাজ:

ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁত গঠন করে। দেহের জলীয় অংশ প্রস্তুতে অংশ নেয় এবং হৎপিণ্ডের স্বাভাবিক সংকোচন ও প্রসারণে সাহায্য করে।

উৎস:

দুধ, দই, ছানা, পনির, আইসক্রিম, সবুজ শাক, চেঁড়স, সিম, বরবটি, ছােট মাছ, মাষকলাই, মুগ, মসুর, অন্যান্য ডালে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে।

১১. লৌহোর কাজ:

লোহা রক্তের লাল কনিকা তৈরি করে। এই লাল কণিকা হৃৎপিণ্ড হতে অক্সিজেন বয়ে সারাদেহে পৌঁছে দেয় এবং দহন কাজে সাহায্য করে।

লৌহোর উৎস:

কলিজা, গাঢ় সবুজ রঙের শাক, ডিমের কুসুম, গুড়, মাংস, কচু শাকে প্রচুর পরিমাণে লৌহ থাকে।

শেয়ার করুন

Similar Posts

0 Comments

  1. Amir hossain says:

    Very Important Information.

  2. Amir hossain says:

    Very Important Information.

  3. সাব্বির হোসেন says:

    আবির ভাই ওয়েবসাইটের লুক খুব সুন্দর হইছে

  4. সাব্বির হোসেন says:

    আবির ভাই ওয়েবসাইটের লুক খুব সুন্দর হইছে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *