ব্যায়াম করার সঠিক সময় ও ব্যায়াম করার উপকারিতা!
ব্যায়াম করার সঠিক সময় => শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হলে নিয়মিত ব্যায়াম করা প্রয়োজন। নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে শরীর সুস্থ থাকে। শরীর সুস্থ থাকলে আমাদের মন ভালো থাকে। আর মন ভালো থাকলে সবকিছু ভালো লাগে। এই জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। তাহলে সুস্থ থাকা সম্ভব।
কিন্তু ব্যায়াম করার সঠিক সময় রয়েছে। সঠিক সময়ে ব্যায়াম নাম করলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। বর্তমান সময়ে আমাদের সাথে ব্যস্ততা এমনভাবে জড়িয়ে রয়েছে যে দিনে এক ঘণ্টা সময় খুঁজে বের করা অসম্ভব। সকালে অফিসের জন্য অনেকে ব্যায়াম করার সুযোগ পায় না।
আবার সন্ধ্যার সময় বাসায় অনেক ধরনের সমস্যা থাকে। নিত্যদিনের এসব সমস্যার জন্য আমরা আমাদের স্বাস্থ্যের দিকে লক্ষ্য রাখতে পারিনা। যার ফলে কম বয়সে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।এই সব সমস্যা থেকে মুক্ত পেতে নিয়মিত ব্যাম করতে হবে। নিম্নে ব্যায়াম করার সঠিক সময় সম্পকে আলোচনা করা হলো।
ব্যায়াম কি?
ব্যায়াম হলো শারীরিক কার্যক্রম যা শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ব্যায়াম এর অর্থ হল শরীরের বিভিন্ন স্থানের আন্দোলন। ব্যায়াম করার ফলে শরীরের মাংসপেশি সচল থাকে। এবং মাংসপেশি শক্তিশালী করে। যার ফলে কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
নিয়মিত ব্যায়াম করলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যেমন, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি।
ব্যায়ম করা উপকারীতা:
সুস্থ থাকতে হলে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়াম না করলে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা অসম্ভব। কারণ, ব্যায়াম করার ফলে আমাদের মাংসপেশি সচল থাকে। এবং শারীরিকভাবে দুর্বল থাকলে নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃ মেয়েদের ওজন কমানোর ব্যায়াম বা দ্রুত ওজন কমানোর উপায়
নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমতে থাকে। এবং শরীর থেকে ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ ঘ্যামের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে। নিম্নে ব্যায়াম করার উপকারিতা তুলে ধরা হলো:
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- মানসিক শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
- ব্যায়াম করলে মন চাঙ্গা থাকে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
- মাংসপেশির শক্তিশালী করে।
- কর্মস্পৃহা বাড়িয়ে দেয়।
- পর্যাপ্ত ঘুম হয়।
- যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে।
নিয়মিত ব্যায়াম করার উপকারিতা উপরে তুলে ধরা হয়েছে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে উপকারের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের রোগ-জীবাণু থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করা সকলের উচিত।
ব্যায়াম করার সঠিক সময়:
ব্যায়াম করার কোন সঠিক সময় নেয়। দিনের যে কোন সময় ব্যায়াম করা যায়। কিন্তু সময় ভেদে ব্যায়ামের কিছু পার্থক্য রয়েছে। যেকোনো সময় যেকোনো ধরনের ব্যায়াম করা ঠিক না। সঠিক সময় সঠিক ব্যায়াম না করলে শারীরিকভাবে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
এ কারণে, নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়াম করার সঠিক সময় এবং কোন সময় কোন ধরনের ব্যায়াম করতে হবে নিম্নে আলোচনা করা হল:
সকালবেলার ব্যায়াম:
ব্যায়াম করার জন্য ভালো সময় হচ্ছে সকালবেলা। ঘুম থেকে উঠার পর ব্যায়াম করলে শারীরিকভাবে স্বস্তি পাওয়া যায়। যার ফলে সারাদিন কাজ করা সম্ভব হয়। কিন্তু সকালে ব্যায়াম করার কিছু নিয়ম রয়েছে। অনেকে ঘুম থেকে উঠে ব্যায়াম করা শুরু করে দেয়।
যার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। সকালে ঘুম থেকে উঠার কিছুক্ষণ পর ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়াম করার আগে নাস্তা করতে হবে। কারণ, সারা রাত খালি পেটে থাকার ফলে শারীরিক ভাবে দুর্বল মনে হয়। কিন্তু কিছু নাস্তা করার পরে নতুন করে শক্তির উৎপন্ন হয়।
আরও পড়ুনঃ ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়?
সকালে ব্যায়াম করার আগে কিছুক্ষণ হাঁটতে অথবা দৌড়াতে হবে। যার ফলে শরীর একটু গরম হয়। তারপর ব্যায়াম করতে পারেন। সকালবেলা কোন সময় ভারোত্তোলন করা যাবে না। সকালে শুধু মাংসপেশি সচল রাখার জন্য ব্যায়াম করতে হবে। সকালে ভারোত্তোলন করলে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। এ কারণে সকালবেলায় সাবধানে ব্যায়াম করতে হবে।
বিকালবেলা ব্যায়াম:
ব্যায়াম করার জন্য উত্তম সময় হচ্ছে বিকেলবেলা। বিকেলবেলা বলতে বোঝানো হয়েছে ৪ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত সময়। দিনের এই সময়টায় আমাদের শরীর সচল থাকে। এই সময় ব্যায়াম করার ফলে বেশি উপকৃত হওয়া যায়। বিকেলবেলা সকল ধরনের ব্যায়াম করা যায়। এই সময় শরীরে পর্যাপ্ত পরিমান ক্যালরি থাকে। যার ফলে ভারোত্তোলন করা সহজ হয়।
সন্ধ্যার সময় ব্যায়াম:
অফিস থেকে বাসায় ফিরে সন্ধ্যার সময়। অফিস থেকে বাসায় ফেরার সময় ব্যায়াম করতে পারেন। যাতে করে আপনার শরীর ফিট থাকে এবং কাজের দুশ্চিন্তা মাথা থেকে দূর হয়। ওই সময় বিশেষ কোন ব্যায়াম করতে না পারলেও হেঁটে হেঁটে ব্যায়াম করতে পারেন।
কিন্তু হাঁটার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন এক কিলোমিটার হাঁটতে ১০ মিনিট সময় লাগে। হাটার সময় হাত জোরে জোরে নড়াতে হবে।সন্ধ্যাবেলায় সকল ধরনের ব্যায়াম করা যায়। কারণ, ব্যায়াম করার পর অন্য কোন কাজ থাকেনা। যার ফলে অতিরিক্ত পরিশ্রম হলে কোন সমস্যা হয়না।
খাদ্য তালিকা:
শারীরিক ব্যায়াম করলে পুষ্টিকর খাবার খেতে হয়। ব্যায়াম করার ফলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ ক্যালোরি ক্ষয় হয়। যার ফলে পুষ্টিকর খাবার না খেলে শারীরিকভাবে দুর্বল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে সঠিক খাদ্য তালিকা থাকতে হবে। সঠিক খাদ্য তালিকা না থাকলে ব্যায়াম করার ফলে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়।
সঠিক খাদ্যতালিকা বলতে বোঝানো হয় পুষ্টিকর খাবার। যেসব খাবারে পুষ্টি এবং ক্যালরি রয়েছে যেসব খাবার খেতে হবে। যেমন, দুধ, ডিম, মাংস, মাছ, ফল এবং শাকসবজি ইত্যাদি খেতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে প্রচুর পরিমাণ পানি খেতে হবে। কারণ, ব্যায়াম করার ফলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে ঘাম ঝরে।
শেষ কথা:
ব্যায়াম করার সঠিক সময় এবং সঠিক বয়স হয়েছে। সব সময় সব ধরনের ব্যায়াম করা যায় না। কারণ, সব সময় ব্যায়াম করার জন্য আমাদের শরীর ঠিক থাকে না। যার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একারণে ব্যায়াম করার আগে সঠিক সময় নির্ধারণ করতে হবে। তাহলেই সুস্থ থাকা সম্ভব।
ব্যায়াম করার সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ব্যায়াম করতে গিয়ে অনেক সময় হাতে পায়ের সমস্যা হয়। যার ফলে উপকার পরিবর্তে ক্ষতি হত পারে। তাই সব সময় সাবধানে দান করার চেষ্টা করে। লেখার মধ্যে ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন। সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।