কিভাবে স্মার্ট হওয়া যায় বা হ্যান্ডসাম হওয়ার উপায়
|

কিভাবে স্মার্ট হওয়া যায় বা হ্যান্ডসাম হওয়ার উপায়

বর্তমান সময়ে সকলে চাই নিজেকে স্মার্ট বা হ্যান্ডসাম দেখাতে। আবার অনেকেই আছে নিজের স্মার্টনেস সম্পর্কে কোন ধারণাই নেই। তারা মনে করে আমি যেমন আছি তেমনি ভালোবাসি। কিন্তু এটা বর্তমান সময়ে বেমানান। আমাদের সকলকে সমাজে বসবাস করতে হয়।

তাই সমাজের সকলের সাথে খাপ খাইয়ে নিজেকে চালাতে হবে। তাই সকলেরই কিভাবে স্মার্ট হওয়া যায় বা হ্যান্ডসাম হওয়ার উপায় সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় স্মার্ট মানুষকে সবাই মান্য করে।

আগে মনে করা হতো শুধু মেয়েদেরই রূপচর্চা ও ফ্যাশন সম্পর্কে ধারণা থাকতে হয়। কিন্তু একথা সম্পূর্ণ ভুল। এখন ছেলে মেয়ে সবাইকে স্মার্ট বা হ্যান্ডসাম হয়ে থাকতে হয়। সাধারণ ছেলেদের কেউ পছন্দ করে না। যারা নিজেকে কিভাবে স্মার্ট হওয়া যায় বা হ্যান্ডসাম হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন আজকের পোস্ট তাদের জন্য।

আরও পড়ুনঃ শীতকালে ছোট বাচ্চাদের যত্ন নেওয়ার কৌশলসমূহ

স্মার্ট শব্দের অর্থ কি? 

স্মার্ট ইংরেজি শব্দ। যার বাংলা অর্থ উজ্জ্বল, পরিচ্ছন্ন, সুবেসধারী ও নবীন দর্শন। সাধারণভাবে বলতে গেলে বুদ্ধিমান, চটপটে ও সুদর্শন।  SMART ইংরেজি শব্দ। SMART শব্দের প্রতিটি বর্ণের একটি করে নির্দিষ্ট অর্থ রয়েছে।

অর্থ গুলো হলো S= Special, M= Measurable, A= Achievable, R= Reliable, T= Timetable. Special-সুনির্দিষ্ট, Measurable- পরিমাণ যোগ্য, Achievable-অর্জন যোগ্য, Reliable-নির্ভরযোগ্য ও Timetable-সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। ভালো আছি গরু না হলে খাওয়ার কথা লাগবে আপনার সেগুলা

স্মার্টনেস বলতে কি বুঝায়:

স্মার্টনেস হচ্ছে মানুষের ব্যক্তিত্ব। মানুষ দ্বারা মানুষের বুদ্ধিমত্তা বা চৌকস বোঝানো হয়। যেসব মানুষ নিজের বিবেক বুদ্ধি দিয়ে সফল ধরনের কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারে এবং সকল মানুষের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে চলাকে স্মার্টনেস বলা হয়।

স্মার্ট মানুষেরা সকলের সাথে ভালো ব্যবহার করতে পারে এবং নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নেয়। যে কোন কাজ খুব সহজেই আয়ত্ত করতে পারে এবং চারিদিকের পরিস্থিতি বুঝতে পারে। একটি কাজ থাকা সত্ত্বেও অন্য সকল কাজের দিকে লক্ষ্য রাখতে পারে।

নিজেকে সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখে। সবসময় পোশাক পরে। সকলের সাথে ভালো ব্যবহার করে এলাকায় প্রভাব ফেলে।

Smart শব্দটি প্রথম কবে ব্যবহার করা হয়:

Smart শব্দটি সকলের কাছে পরিচিত। স্মার্ট বলতে বোঝানো হয় সকল গুন সম্পন্ন। Smart শব্দটি প্রথম কবে ব্যবহার করা হয় এই সম্পর্কে সঠিক কোন ধারণা পাওয়া যায় না। তবে অনেক ক্ষেত্রেই স্মার্ট শব্দটি ব্যবহার করা হয়।

বর্তমান সময়ে পরিচিত একটি নাম হল স্মার্ট ফোন। স্মার্ট ফোন বলতে বোঝানো হয় যে সকল ফোনে সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে।এছাড়াও বাংলাদেশ সরকার একটি স্লোগান দেন ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঘোষণা দেন ১২ ডিসেম্বর ২০২২ সালে। এছাড়াও আরো অনেক ক্ষেত্রে স্মার্ট শব্দটি ব্যবহার করা হয়।

কিভাবে নিজেকে স্মার্ট বানাবো? 

সকল মানুষেরই ইচ্ছা থাকে নিজেকে সকলের কাছে স্মার্ট দেখানো। নিজেকে স্মার্ট দেখাতে হলে কিছু নির্দেশনা মেনে চলতে হয়। কারণ, কোনো মানুষ জন্মগতভাবে স্মার্ট হয়ে জন্মায় না। নিজেকে স্মার্ট করে গড়ে তুলতে হয়। তাহলে সমাজে স্মার্ট বলে সবাই মান্য করবে। চলুন জেনে নেই কিভাবে নিজেকে স্মার্ট বানাবো।
  1. নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করা
  2. ভালো কাপড় নির্বাচন করা
  3. নিজের অন্ধ ধারণা দূর করা
  4. ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা
  5. আচরণ সুন্দর করুন
  6. হাসিমুখে থাকা

নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করা:

নিজেকে স্মার্ট হিসেবে অন্যের কাছে তুলে ধরতে হলে প্রয়োজন আত্মবিশ্বাস। আত্মবিশ্বাস ছাড়া কোন মানুষ নিজেকে স্মার্ট হিসেবে তুলে ধরতে পারে না। আপনার যদি জিম করা বডি না থাকে অথবা আপনার সৌন্দর্য না থাকে। আপনার চুলের স্টাইল যদি ভালো না হয়।

আপনার যদি কাপড় কমদামি হয় তবুও নিজেকে স্মার্ট হিসেবে উপস্থাপন করা সম্ভব। তার জন্য প্রয়োজন নিজের আত্মবিশ্বাস। নিজের আত্মবিশ্বাস থাকলে সব জায়গায় নিজেকে স্মার্ট হিসেবে পরিচয় দেয়া যায়।

ভালো কাপড় নির্বাচন করা:

নিজেকে স্মার্ট বলে প্রমাণ করতে অবশ্যই ভালো কাপড় পড়তে হবে। ভালো কাপড় বলতে দামি কাপড় না। কিছু কিছু লোক আছে যারা অনেক দামি কাপড় পড়ে কিন্তু নিজেকে স্মার্ট করে তুলতে পারে না। এর কারণ হচ্ছে, শুধু দামি কাপড় পরলেই হবে না।

নিজেকে সেই কাপড়ের সাথে মানিয়ে নিতে হবে। নিজেকে স্মার্ট দেখাতে হলে সব সময় সালিন পোশাক করতে হবে। এবং প্যান্ট শার্ট এর মধ্যে সামঞ্জস্য রাখতে হবে। কখনো কাপড়ের রং উজ্জ্বল হওয়া যাবে না। এসব কিছু করে কাপড় পরলে খুব সহজে নিজেকে স্মার্ট করে তোলা যায়।

নিজের অন্ধ ধারণা দূর করা:

কিছু কিছু মানুষের নিজের অন্ধ ধারণা রয়েছে। সব সময় নিজেকে দুর্বল ভাবে। সকল কিছু বিষয়ে সবসময় সকলের কাছে নিজেকে ছোট মনে করে। এসব কারনে সবার সাথে মিশতে পারে না। নিজের অন্ধ ধারণা দূর করতে পারলে সকলের সামনে স্মার্ট হয়ে ওঠা যায়। স্মার্ট হয়ে উঠার জন্য সব সময় অন্ধ ধারণাগুলো দূর করতে হবে।

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা:

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। তোকে বৃদ্ধি পেলে নিজেকে সৌন্দর লাগে। এবং নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। নিজেকে স্মার্ট দেখাতে হলে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। তাহলে সকলের কাছে নিজেকে স্মার্ট করে তোলা যায়।

আচরণ সুন্দর করুন:

নিজেকে স্মার্ট বলে সকলের কাছে তুলে ধরতে হলে অবশ্যই আচরণ সুন্দর করতে হবে। কারণ মানুষের আচরণের মাধ্যমে তার বংশ পরিচয় পাওয়া যায়। আচরণ সুন্দর হলে সকলের কাছে খুব সহজে পরিচিত হওয়া যায়। সকল ধরনের কাজ খুব সহজ হয় সমাধান করা সম্ভব হয়।

এছাড়াও আচরণ সুন্দর হলে সকল মানুষ বিশ্বাসই বলে ধরে নেয়। এ কারণে নিজেকে স্মার্ট করে তুলতে হলে অবশ্যই আচরণ সুন্দর করতে হবে।

হাসিমুখে থাকা:

সকল মানুষেরই ইচ্ছা থাকলে নিজেকে স্মার্ট বা হ্যান্ডসাম করে তোলো। সমাজে সকলে স্মার্ট মানুষকে সম্মান করে। তবে নিজেকে স্মার্ট করে গড়ে তুলতে হলে অবশ্যই হাসি খুশি থাকতে হবে। সকল কিছু হাসিমুখে সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে সকলের কাছে স্মার্ট হয়ে ওঠা যাবে।

নিজেকে স্মার্ট করতে কোন গুলো অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে:

বর্তমান সমাজে সকল মানুষই ব্যস্ত রয়েছে কিভাবে স্মার্ট হওয়া যায় বা হ্যান্ডসাম হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানার জন্য। কিন্তু সকলেই নিজেকে স্মার্ট করে বুঝতে পারে না। নিজেকে স্মার্ট করে তুলতে হলে কিছু অভ্যাসের পরিবর্তন করতে হবে। এবং এর সাথে কিছু কাজ বন্ধ করতে হবে। চলুন জেনে নেই কোন কোন কাজের মাধ্যমে নিজেকে স্মার্ট করে তোলা যায়।
  1. হস্তমৈথুন বন্ধ করুন
  2. নিয়মিত ব্যায়াম করুন
  3. সঠিক পরিমাণ ঘুম
  4. নিজের সম্পর্কে জানুন

হস্তমৈথুন বন্ধ করুন:

বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ ছেলেরা হস্তমৈথুন করে থাকে। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন অতিরিক্ত হস্তমৈথুন করলে মানুষ শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। চেহারার গ্লো নষ্ট হয়, কাজের গতি কমে যায়, শরীর ব্যথা করে, হজম শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং নিজের আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়ে যায়।

তাহলে ধারণা পেয়েছেন হস্তমৈথুন করার ফলে কি কি সমস্যা হয়ে থাকে। এ কারণে, হস্তমৈথুন করার ফলে মানুষ স্মার্ট হতে পারেনা।

নিয়মিত ব্যায়াম করুন:

অনেকে মনে করে আমি যেমন আছি তেমনি ভালো। সে সব কথা বলে কোন ধরনের ব্যায়াম করে না। যার ফলে শারীরিকস ফিটনেস হারিয়ে ফেলে। এবং অল্প বয়সে শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমে। মেঘ জমলে মানুষকে দেখতে খুব খারাপ লাগে।

এজন্য নিজেকে স্মার্ট করে তুলতে বলে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে শরীর ঠিক থাকে। এবং দেখতা আকর্ষণীয় লাগে। সকল ধরনের পোশাক পরলে নিজেকে সুন্দর লাগে। এ কারণে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।

সঠিক পরিমাণ ঘুম:

সঠিক মাত্রায় ঘুম না হলে খাবার খেয়ে ও ব্যায়াম করে নিজেকে ফিট রাখা যায় না। নিয়মিত ব্যায়াম করার পাশাপাশি পরিমাণ মতো ঘুমাতে হবে। সঠিক পরিমাণ কমালে খাবার হজম হয় এবং শরীরের ক্লান্তি দূর হয়।

এবং ঘুম থেকে ওঠার পর খুব প্রশান্তি পাওয়া যায়। যার নিজেকে ফিট করে রাখতে সাহায্য করে। এ কারণে নিজেকে স্মার্ট করে ফেলতে হলে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হব।

নিজের সম্পর্কে জানুন:

নিজেকে স্মার্ট করে তুলতে হলে অবশ্যই নিজের সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ, নিজেকে না চিনলে অন্য মানুষের কাছে নিজেকে উপস্থাপন করা যায় না। নিজেকে জানাতে নিজের ভাষা এবং ব্যবহার কেমন সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

এবং মানুষের কাছে গিয়ে নিজেকে ভালোভাবে উপস্থাপন করতে হবে। নিজের সম্পর্কে নিজে না জানলে এসব কাজ করা যায় না। তাই নিজেকে স্মার্ট করে থাকতে হলে অবশ্যই নিজের সম্পর্কে আগে জানতে হবে।

আরও পড়ুনঃ শীতে পুরুষের ত্বকের যত্নে করনীয়

৩০ বছর পর কি স্মার্ট হওয়া যায়:

প্রতিটি মানুষই চাই নিজেকে স্মার্ট করে তুলতে। আবার অনেকের মনে করে আমি যেমন আছি ভালোই আছি। এই ধারণা ও ঠিক আছে। তবে বর্তমান আধুনিক যুগ। এই সময় সমাজে বসবাস করতে হলে সমাজের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে। এ কারণে, মাঝে মাঝে নিজের ইচ্ছা না থাকলেও নিজেকে পরিবর্তন করতে হয়।

অনেকে মনে করে মানুষের বয়স বেশি হলে মানুষ স্মার্ট হতে পারেনা। এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। মানুষ ৩০ বছর বয়স হলেও নিজেকে স্মার্ট করে তুলতে পারে। নিজেকে স্মার্ট করে তুলতে হলে তেমন কিছু প্রয়োজন পড়ে না। একটু চলাফেরার পরিবর্তন, ভালো পোশাক, কথাবার্তা ধরন পরিবর্তন করলে নিজেকে স্মার্ট করে তুলতে পারে। নিজেকে স্মার্ট করে তুলতে হলে বয়স কোন ব্যাপার না।

প্রতিটা মানুষ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিজের পরিবর্তন করতে পারে। মানুষের চেহারা দিয়ে মানুষের স্মার্টনেস আসে না। মানুষের আচার ব্যবহার এবং চাল চলনের মাধ্যমে স্মার্টনেস ফুটে ওঠে। তাই বর্তমান সমাজে চলাফেরা করতে হলে নিজেকে স্মার্ট করে তুলতে হবে।

শেষ কথা: কিভাবে স্মার্ট হওয়া যায় বা হ্যান্ডসাম হওয়ার উপায়

দিন দিন সব কিছুই আধুনিক হচ্ছে। আধুনিক হওয়ার ফলে মানুষের চলাফেরার পরিবর্তন হচ্ছে। নিজেকে সমাজে টিকিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই স্মার্ট বা হ্যান্ডসাম হতে হবে। স্মার্ট না হলে সমাজে টিকে থাকা অসম্ভব। সমাজের সাথে সব সময় নিজেকে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। তাহলে সমাজের মানুষের সাথে চলাফেরা করা যাবে।

স্মার্ট হয়ে থাকা নিজের দায়িত্ব মধ্যে পড়ে। নিজেকে স্মার্ট করে নিজেকেই তুলতে হবে। তাই কিছু নির্দেশনা ফলো করতে হয়। উপরে স্মার্ট হওয়ার সকল তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আমার বিশ্বাস সম্পূর্ণ লেখাটা পড়ে থাকলে আপনি খুব সহজে নিজেকে স্মার্ট করে তুলতে পারবেন। লেখার মধ্যে কোন ভুল হলে ক্ষমা করে দেবেন। সম্পন্ন লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

শেয়ার করুন

Similar Posts